স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে বাংলাদেশের অর্জন এখন পর্যন্ত কুশিয়ারা নদীর পানি। এছাড়া আমরা দৃশ্যমান কোনো অর্জন দেখতে পাইনি। শুক্রবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ওই সফরে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি হয়েছে। আর বলা হয়েছে, সীমান্ত হত্যা শূন্যতে আনা হবে। অথচ, যে দিন এই কথা বলা হয়েছে, সে দিনই দিনাজপুরের সীমান্তে একজনকে হত্যা করা হয়েছে, আর দু’জন নিখোঁজ। এই হচ্ছে প্রাপ্তি। আর দেখেছি, অত্যন্ত সুন্দর সুন্দর কথা বলা হচ্ছে। তাদের নিজেদের মধ্যে ভালোবাসা-প্রেম, সে কথাগুলো খুব জোরে জোরে বলা হচ্ছে।
সেটাই আমরা বুঝতে পেরেছি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, মূলত এই সরকার ক্ষমতায় থাকতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এই সফরের আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, তিনি ভারতের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে যে কোনো উপায়ে টিকিয়ে রাখার জন্য তারা যেন ব্যবস্থা নেয়। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরটা এরই প্রতিফলন। তিনি বলেন, আমরা সব সময় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি এবং এটাও আমরা বিশ্বাস করি- যেসব দেশ গণতান্ত্রিক; তারা সব সময় সারাবিশ্বে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখার জন্য, জনগণের অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তাদের ভূমিকা অক্ষুণœ রাখবে। ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ, গণতান্ত্রিক দেশ। আমরা বিশ্বাস করি, ভারতও তাদের গণতান্ত্রিক চরিত্রকে অক্ষুণœ রাখবে। সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। ঠিক আগের মতোই গায়েবি মামলা দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে আমাদের তিন নেতা নিহত হয়েছেন। কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় ছাত্রদলের ১৪ বছরের এক ছেলেকে গুলি করা হয়েছে। তার ফুসফুস, লিভার, কিডনিগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সে রক্তবমি করছে। ডাক্তাররা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন তার জীবন রক্ষার জন্য। এ ছাড়া অনেকের চোখ চলে গেছে, কারও মাথা ফেটে গেছে। সারাদেশে এখন আবার ‘রেইন অব টেরর’। সন্ত্রাসের রাজত্ব তারা শুরু করেছে। কিন্তু সন্ত্রাস করে কখনও টিকে থাকা যায় না।
এদিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহিলা দলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে র্যালির আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থে কোনো কথা হয়নি। তিনি শুধু দিয়েই এসেছেন, কিছু নিয়ে এসেছেন বলে দাবি করতে পারেননি। তিনি নিজেও স্বীকার করেছেন, ভারতকে তিনি যা দিয়েছেন- সারাজীবন তারা মনে রাখবে। কিন্তু আমরা স্মরণ রাখার মতো এমন কিছু এখন পর্যন্ত আনতে পারিনি। সফরে গিয়ে অনেক কথা বলেছিলেন; কিন্তু কোনো চুক্তি হয়নি। চুক্তি না হলে স্মারকের কোনো মূল্য নেই।
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ ও সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।