স্টাফ রিপোর্টার: দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের আলোচিত সেই বিট কয়েন কেনা-বেচার মাস্টারমাইন্ড চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ গ্রামের মারজেত আলীর ছেলে মাসুদ রানা মিথুন। বাংলাদেশে অনলাইনে নিষিদ্ধ ভার্চুয়াল মুদ্রা বিট কয়েন (ইরঃঈড়রহ) কেনা-বেচার মাধ্যমে প্রতারণা করে নিঃস্ব করেছে অনেক পরিবারকে। বিট কয়েন বিক্রি ও প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন ভার্চুয়াল মুদ্রা কেনা-বেচার এই মাস্টারমাইন্ড। শুধু তাই নয়, প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া এসব অর্থ বিদেশেও পাচার করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও শুধু অর্থ পাচার নয়, জঙ্গি অর্থায়নও করা হচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছে। এ ঘটনায় তার প্রতারণার শিকার এক ভুক্তভোগী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। সাধারণ মানুষকে নানাভাবে বুঝিয়ে বিটকয়েনে টাকা বিনিয়োগ করার কথা বলে তাদের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অনেকের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী নিয়ে তাদের অপহরণ করেছেন মর্মে অভিযোগ রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাগদাহ গ্রামের এক শ্রমিকের ছেলে মিথুন। কয়েক বছর আগেও বেকার ছিলেন। অনলাইনের কাজ শুরু করার পর যুক্ত হন বিট কয়েন কেনাবেচা চক্রের সাথে। এলাকার প্রভাবশালী সাধারণ মানুষকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিট কয়েন কেনাবেচায় বিনিয়োগ করিয়েছেন। কিছুদিনের মধ্যেই সেই টাকা চুরি করে দায়ভার ওইসব ভুক্তভোগীদের ওপর দিচ্ছে। এরপর শুরু হয় তার ক্যাডার বাহিনীর অত্যাচার। নির্দোষ ব্যক্তিদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আদায়ের জন্য চাপ শুরু করেন। এক পর্যায়ে অপহরণ করে টাকা আদায় করেছেন তিনি। এছাড়াও মিথুন অবৈধ ব্যাবসা করে গড়ে তুলেছেন আলীশান বাড়ীও বিলাস বহুল গাড়ী। বিভিন্ন ব্যাংকে নামে বে-নামে রেখেছেন কোটি কোটি টাকা। শুধু তাই নয় অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন তিনি। জনমনে প্রশ্ন ইতোপূর্বে কারিগরের কাজ করে তার পরিবারের লোকজন কোনোমতে সংসার চালিয়ে আসতেন। অল্প সময়ে তিনি কীভাবে অবৈধ সম্পদের মালিক হলেন এলাকাবাসীর বিষয়টি জানতে চায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী জানান, আমি তার প্রলোভনের পড়ে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করি। কিছুদিন পর সে আমার বিট-কয়েন বিক্রির কথা বলে আমার মোবাইল থেকে সব টাকা তার একাউন্টে ট্রান্সফার করে নেয়। কিছুদিন পর তার টাকা চুরি হয়ে গেছে বলে জানায়। আমি টাকা ফেরত চাইলে আমাকে হুমকি দিতে থাকে। টাকা না দিয়ে উল্টো ৬ কোটি টাকা চুরির অভিযোগ আনে আমার বিরুদ্ধে। আমাকে অপহরণের জন্য বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়ে আসছে। আমি আমার জীবনের নিরাপত্তার জন্য পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। জীবনের নিরাপত্তার জন্য আলমডাঙ্গা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি আমি।
আরেক ভুক্তভোগী আতিয়ার বলেন, আমাকে অপহরণ করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টাকা আদায় করার চেষ্টা করে। মিথুন, তার ছোট ভাই মাসুম ও তার ক্যাডার বাহিনীর প্রধান হিরালাল এবং রফিক অপহরণ করে নির্যাতন করে। পুলিশের সহযোগিতা নেয়ার পর আমি উদ্ধার পাই। তার ও তার বাহিনীর কাছে অবৈধ অস্ত্র রয়েছে। যা দিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করছে। আতিয়ার বলেন, মিথুন অবৈধ এই সিন্ডিকেটের প্রধান। তার নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী দিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন সময় অপহরণ করছেন ও অপহরণ করার হুমকি দিচ্ছেন। বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের নাম ভাঙিয়ে তিনি এই অপকর্ম করে আসছেন। আমি দ্রুত এই ডিজিটাল সন্ত্রাসীর গ্রেফতার দাবী করছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মিথুনের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।