মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির ধারা অব্যাহত থাক

সম্পাদকীয়

প্রায় চার বছর বন্ধ থাকার পর সরকারি ব্যবস্থাপনায় আবারও মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো শুরু করেছে বাংলাদেশ। প্রথম দফায় গত সোমবার রাতে ৫৩ জন কর্মী গেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল নামের রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে মালয়েশিয়ার জিমাত জায়া এসডিএন কম্পানিতে কাজে গেলেন এই কর্মীরা। মালয়েশিয়া সরকার তাদের পাঁচটি খাতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ‘জিটুজি প্লাস’ পদ্ধতিতে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে রাজি হওয়ার পর ২০১৬ সালে ঢাকায় দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়।

পাঁচ বছর মেয়াদী এই সমঝোতা স্মারকের আওতায় লোক পাঠানোর অনুমতি দেয়া হয় ১০টি জনশক্তি রপ্তানিকারক এজেন্সিকে। কিন্তু বিভিন্ন অভিযোগ ওঠায় ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে নতুন করে বাংলাদেশি কর্মীদের আর ভিসা দেয়নি মালয়েশিয়া।

গত বছরের ডিসেম্বরে মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে কর্মী পাঠানোর বিষয়ে নতুন করে সমঝোতা স্মারক সই করে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়। সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী পাঁচ বছরে পাঁচ লাখ কর্মী নেয়ার কথা। এর মধ্যে এ বছরই দুই লাখ নেয়ার কথা। কয়েক বছর আগেও অবৈধপথে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমাতে গিয়ে নৌকা ডুবিতে বহু মানুষের প্রাণ গেছে। তখন মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের কারাগারেও স্থান হয় বহুজনের। অনেকে গহিন জঙ্গলে আফিম চাষের জন্য ক্রীতদাস হিসেবে বিক্রি হয়ে যায়। অনেককে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনাও ঘটে সে সময়। আবার ঝুঁকিপূর্ণ পথ পাড়ি দিয়ে মালয়েশিয়ায় যেতে পারলেও অনেককে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। অবৈধ অভিবাসী হিসেবে অনেককে পালিয়ে বেড়াতে হয়। ধরা পড়ার পর ঠাঁই হয় কারাগারে। কাটাতে হয় মানবেতর জীবন। সরকারের ঐকান্তিক চেষ্টায় সেসব দিনের অবসান ঘটেছে। বাংলাদেশ থেকে এখন মালয়েশিয়ায় কর্মী রপ্তানি হচ্ছে জিটুজি পদ্ধতিতে, যা অত্যন্ত নিরাপদ। এখানে প্রতারণার কোনো সুযোগ নেই। তবে এখানেই থেমে থাকলে চলবে না। আমাদের নতুন নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বের করে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে। জনশক্তি রপ্তানিতে ভালো অবস্থান তৈরি করা গেলে আমাদের রেমিট্যান্স আগামী দিনে আরো বাড়বে বলে আশা করা যায়। আমরা আশা করবো, সরকারি পর্যায়ে জনশক্তি রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি করতে সব ব্যবস্থাই নেয়া হবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More