কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পেশনের টাকা তুলতে এসে গণেশ বাঁশফোড় (৮০) নামের এক বৃদ্ধের রহস্যজনক মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সোমবার (২৫ জুলাই) কুমারখালী সোনালী ব্যাংক লিমিটেড উপজেলা শাখায় এ ঘটনা ঘটে।
মৃত ব্যক্তি পৌরসভার শেরকান্দির সুইপারপট্টি এলাকার বাসিন্দা। তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত পরিছন্নতাকর্মী ছিলেন। পরে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে সুরতহাল করেন এবং কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে এবং ঘটনাস্থলে থাকা সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, সোমবার সকাল ১০টা ১০ মিনিটের দিকে সোনালী ব্যাংকে পেনশনের টাকা তুলতে গিয়েছিলেন অবসরপ্রাপ্ত পরিছন্নতাকর্মী গণেশ বাঁশফোড়। এসময় একটি চক্র তার পিছু নেয়। এরপর ১০টা ২৬ মিনিটের দিকে ২৫ হাজার টাকা উত্তোলন করে ব্যাংকের গলি দিয়ে বের হচ্ছিলেন তিনি। এ সময় চক্রদলের একজন তার কাছে যায় এবং পিঠে কিছু একটা লাগিয়ে দেয়। এরপর তিনি ব্যাংকের প্রধান প্রবেশ পথের সামনে থাকা টিউবওয়েলের কাছে যান। তার পিছেপিছে প্রতারক চক্রের একজন সেখানে যান। প্রায় ৫ মিনিট পর গণেশ খালিগাঁয়ে টিউবওয়েলের কাছ থেকে বের হয়ে পুনরায় ব্যাংকের দিকে ফিরে যান। এ সময় প্রতারক চক্রের ৬ জনকে দ্রুত চলে যেতে দেখা যায়।
আরও জানো গেছে, সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটের দিকে গণেশ ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের কাছে যান এবং তার ২৫ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের কথা বলতে বলতে অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে পড়ে যান। এরপর ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে দ্বিতীয়তলায় পাঠান। দ্বিতীয় তলায় উঠতে গিয়ে সিঁড়িতে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন।
এ বিষয়ে নিহতের বড় ছেলে তুলশী বাঁশফোড় বলেন, ‘বাবা ব্যাংক থেকে পেশনের টাকা তুলে ব্যাংকের নিচে প্রতারক চক্রের কবলে পড়েন। প্রতারক চক্র তার ২৫ হাজার টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। টাকার শোকে হয়তো স্ট্রোক করে মারা গেছেন।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন ডা. মো. মশিউল আরেফিন বলেন, ‘ব্যাংক থেকে ঘটনাটি ঘটেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে দ্বিতীয় তলায় উঠতে গিয়ে সিঁড়িতে তিনি মারা যান। ময়নাতদন্ত করা হলে প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’
সোনালী ব্যাংক লিমিটেড উপজেলা শাখার জৈষ্ঠ্য ব্যবস্থাপক প্রসাদ বিশ্বাস বলেন, ‘টাকা ছিনতাইয়ের পর বিষয়টি আমাকে জানাতে এসেছিলেন তিনি। এ কথা বলতে বলতেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং কিছু সময় পরে মারা যান।’
কুমারখালী থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, টাকা ছিনতাইয়ের কারণে স্টোক করে মারা যেতে পারেন। তবে কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।