এডিসি লাবণী ও পুলিশ সদস্যের মৃত্যুর কোনো ক্লু পায়নি পুলিশ
একই দিনে দুই পুলিশ সদস্যের আত্মহত্যার কারণ উদঘাটনে তদন্ত অব্যাহত
স্টাফ রিপোর্টার: মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার সারঙ্গদিয়া গ্রামে মামার বাড়িতে গালায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) খন্দকার লাবণী আক্তারের (৩৬) মরদেহ উদ্ধার ও পুলিশ কনস্টেবল মাহমুদুল হাসানের আত্মহত্যার কারণ উদঘাটনে কোনো কøু পায়নি পুলিশ। শুক্রবার মাগুরার পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে খুলনা পুলিশের এডিসি লাবণী ও তার সাবেক দেহরক্ষী মাগুরা পুলিশের সদস্য মাহমুদুল হাসানের আত্মহত্যার ব্যাপারে মাগুরা সদর ও শ্রীপুর থানায় দুটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর (ইউডি) মামলা হয়েছে। তারা এ দুটি আত্মহত্যার কারণ উদঘাটনে তদন্ত শুরু করেছেন। পারিবারিক কলহ ও একই দিনে সাবেক দেহরক্ষী মাহমুদুল হাসানের আত্মহত্যার বিষয়সহ সব বিষয় মাথায় রেখে তারা তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তদন্তে কোনো ক্লু উদ্ধার হলে তা আপনাদের জানানো হবে। তবে লাবণীর বাবা মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার বরালিদাহ গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খন্দকার শফিকুল আজম বলেন, আমার মেয়ে অত্যন্ত বলিষ্ঠ ও হাসিখুশি মনের মানুষ ছিলো। তার মতো মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে এটি ভাবতেও পারছি না। তবে স্বামী বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক তারেক আব্দুল্লার সঙ্গে তার সম্পর্ক খুব খারাপ পর্যায়ে চলে গিয়েছিলো। প্রায় প্রতিদিন তাদের মধ্যে ঝাগড়া হতো। বিশেষ করে অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে কলহ লেগেই থাকত। মূলত স্বামীর সঙ্গে খারাপ সম্পর্কের জের ধরেই সে আত্মহত্যা করেছে। এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেন লাবণীর সাবেক দেহরক্ষী। এ দুটি ঘটনার মধ্যে কোনো সম্পর্ক আছে কিনা জানতে চাইলে শফিকুল বলেন, এ দুটি ঘটনার মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। পুলিশ সদস্য মাহমুদুলের বাবা চুয়াডাঙ্গায় কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল এজাজুল হক খান। তিনি বলেন, আমার ছেলে খুব হাসিখুশি ও শান্ত মেজাজের ছিলো। ঘটনার আগের রাতেও ফোনে তার সঙ্গে কথা হয়েছে। তবে সে চাকরি নিয়ে খুশি ছিলো না। তার ইচ্ছে ছিলো, সরাসরি পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর পদে চাকরি করার। সেজন্য সে চাকরির পাশাপাশি পড়া চালিয়ে যাচ্ছিলো। তিনি আরও বলেন, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে পাংশা কলেজে অ্যাকাউন্টিংয়ে অনার্সে ভর্তি হয়েছিলো সে। তবে কেন সে আত্মহত্যা করেছে তা আমি জানি না। সে যে এডিসি লাবণীর দেহরক্ষী ছিলো এটিও তার মৃত্যুর পর মাগুরায় এসে জেনেছি। মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার বরালিদহ গ্রামে বাবার বাড়িতে লাবণীকে দাফন করা হয়। অপরদিকে মাহমুদুল হাসানের মরদেহ দাফন করা হয় বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় জানাজা শেষে কুষ্টিয়ার পিপুলবাড়িয়া গ্রামের কবরস্থানে। এডিসি লাবণীর ছোট ভাই হাসনাতুল আজম প্রিন্স জানান, ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ প্রথমে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মামা বাড়ি শ্রীপুর উপজেলার সারঙ্গদিয়া গ্রামে নেয়া হয়। পরে জানাজা শেষে বরালিদহ গ্রামে বৃহস্পতিবার রাতে ১০টা ৪০ মিনিটে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এর আগে বুধবার রাতে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার সারঙ্গদিয়া গ্রাম থেকে এডিসি লাবণীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ কনস্টেবল মাহমুদুল হাসানের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয় মাগুরা পুলিশ লাইনস ব্যারাকের ছাদ থেকে, যিনি এক সময় লাবণীর দেহরক্ষী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।