পৌরসভার উন্নয়নে বিঘ্ন সৃষ্টিকারীদের ক্ষমা করা হবে না
কাউন্সিলর মিকা ও খালেকের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলনে পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান
দর্শনা অফিস: দর্শনা পৌর কাউন্সিলর সাবির হোসেন মিকা ও সহকারী প্রকৌশলী সাজেদুল আলমের মধ্যে সৃষ্ট দ্বন্দ্ব দিনদিন চরম আকার ধারণ করছে। এরই মধ্যে মিকা ও তার সাঙ্গপাঙ্গকে গ্রেফতারের দাবীতে যেমন করা হয়েছে মানববন্ধন, তেমনি সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে পৌরসভার বিভিন্ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন মিকা। সাংবাদিক সম্মেলনে পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে নানা মন্তব্য করার প্রতিবাদে দর্শনা পৌরসভায় সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন মেয়র মতিয়ার রহমান। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে পৌরসভার হলরুমে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে ২ পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্যে মতিয়ার রহমান বলেন, ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাবির হোসেন মিকা দীর্ঘদিন ধরেই পৌরসভার উন্নয়নে বাধা সৃষ্টিসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে খারাপ আচরণ করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৭ জুলাই দুপুর ১২টার দিকে সাবির হোসেন মিকা, ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান খালেকুজ্জামান, শ্যামপুর জোড়া বটতলার জাহিদুল ইসলাম, শ্যামপুরের রাশিদুল ইসলাম, বাজারপাড়ার সিজার হোসেন ও দক্ষিণচাঁদপুরের মোস্তাকসহ ১০-১২জন ভয়ভীতি দেখিয়ে আইন বহির্ভূতভাবে ট্রেড লাইসেন্স ও জন্ম নিবন্ধন নিয়ে জুলুম করে। তারা পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী সাজেদুল আলমের কক্ষে গিয়ে জোরপূর্বক ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করার চাপ প্রয়োগ করে। এ সময় তারা প্রকৌশলীকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়। সেই সাথে অফিসের কাগজপত্র তছরূপ ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। লাঞ্ছিত করেন প্রকৌশলী সাজেদুল আলমকে। কক্ষে ত্রাসের সৃষ্টি করে আলমারী থেকে ১ লাখ ১০ হাজার ৩৩৫ টাকা নিয়ে যায়। এ ঘটনায় দর্শনা থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। সাবির হোসেন মিকার করা সংবাদ সম্মেলনে যে অভিযোগগুলো তোলা হয়েছে তা মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। প্রকৃতপক্ষে নিয়ম মাফিক পৌরসভার টেন্ডার কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। ফলে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। টিআর কর্মসূচি বাস্তবায়নে জেলা প্রসাশক কর্তৃক মনোনীত ৪ সদস্যসহ মোট ২২ সদস্যের বাস্তবায়ন কমিটি রয়েছে। তা কমিটির মাধ্যমেই কার্যক্রম সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মতিয়ার রহমান আরো বলেন, দর্শনা পৌরসভায় ভিজিএফ’র চাল সবসময়ই স্বচ্ছতার সাথেই বিতরণ করা হয়। ট্যাক অফিসারের উপস্থিতিতে এ চাল বিতরণ করা হয়ে থাকে। কাউন্সিলর খালেক যেমন ভিজিএফ’র চাল বিতরণে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে তালিকা করেছেন একাধিকবার, তেমনিভাবে নিজের ছেলেকে প্রতিবন্ধী সাজিয়ে প্রতিবন্ধীভাতা উত্তোলন করেও বিতর্কিত হয়েছেন। নিয়মতান্ত্রিকভাবেই জন্ম নিবন্ধন সেবা প্রদান করা হয়ে থাকে। সাবেক হিসাবরক্ষক রুমি আলমের দুর্নীতির শাস্তিস্বরুপ তাকে পদাবনতি করে ক্যাশিয়ার পদে পদায়ন করা হলেও অর্থনৈতিক কার্যক্রমে তাকে রাখা হচ্ছে না। এছাড়া প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যমে ফেরত নেয়া হয়েছে। সৌর বিদ্যুৎ স্থাপনে প্রকল্পের ঠিকাদার যে পরিমাণ কাজ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করেছে তা সংশ্লিষ্ট দফতরের পরিদর্শন পূর্বক কিস্তি ভিত্তিক অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে বিল প্রদান করা হয়েছে। কাজ অবশিষ্ট থাকায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে মতিয়ার রহমান আরো বলেছেন, আমি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সুষ্ঠুভাবে পৌরসভার কার্যক্রম পরিচালনা করছি এবং আগামীতেও করবো। এ ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টিকারীকে কোনোভাবে ক্ষমা করা হবে না। পৌরসভার পরিবেশ শান্ত রাখতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবীর প্রেক্ষিতে সাবির হোসেন মিকা ও হাসান খালেকুজ্জামানসহ অভিযুক্তদের গ্রেফতার জরুরী। সেক্ষেত্রে দর্শনা পুলিশ প্রসাশনের কাছে আহ্বান করছি অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র রবিউল হক সুমন, কাউন্সিলর এনামুল কবীর, মনির সরদার, আশুর উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম মুকুল, বিলকিস খাতুন, জাহানারা, সুরাতন নেছা, প্রকৌশলী সাজেদুল আলম, বড়বাবু রুহুল আমীন খান, হিসাবরক্ষক সরোয়ার হোসেন, কর নির্ধারক আরেফিন, উচ্চমান সহকারী শাহ আলম, কার্যসহকারী হারুন অর রশিদ, জাহিদুল ইসলামসহ স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ।