আন্দুলবাড়িয়া প্রতিনিধি: নিহত হওয়ার প্রায় ৬ মাস পর ট্রাক হেলপার পারভেজকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। পারভেজের পিতা আনছার আলী গত সোমবার চুয়াডাঙ্গার জীবননগর আমলী আদালতে বাদী হয়ে ট্রাক ড্রাইভার আকিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে এ নালিশী অভিযোগ দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে জীবননগর থানার ওসিকে তদন্তপূর্বক আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজ্ঞ কৌশলী অ্যাড. হুমায়ুন কবীর মামুন। নিহত ট্রাক হেলপার পারভেজ জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়নের বাজদিয়া গ্রামের আনছার আলীর ছেলে এবং ট্রাক ড্রাইভার আকিদুল ইসলাম একই গ্রামের মৃত ইসমাইল হোসেনের ছেলে।
আদালতে দাখিলী অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে ট্রাক ড্রাইভার আকিদুল ইসলাম সাক্ষীদের সাথে গল্পরত অবস্থায় হেলপার পারভেজকে ট্রিপে যাওয়ার কথা বলে ডেকে নেয়। পরদিন বেলা ১১টার দিকে নিহত পারভেজ হোসেনের বড় ভাই আসামি আকিদুল ইসলামের মোবাইলে রিং দিলে আসামি আকিদুল নিহত পারভেজকে ফোন ধরিয়ে দিলে সে ঘাটে আটকা পড়েছি জানিয়ে চিন্তা করতে নিষেধ করে। বিকেল ৪টার দিকে নিহত পারভেজ ১নং সাক্ষী সবুজ হোসেনের মোবাইল নম্বরে ফোন দিয়ে জানায় খুব বিপদে আছি বাঁচলে কাল বাড়ি আসবো আর না বাঁচলে শহীদ হয়ে ফিরবো কথা বলার সাথে সাথে লাইন কেটে যায়। এরপর পারভেজ ও আকিদুল ইসলামের নম্বরে চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। রাত ৮ টার দিকে আকিদুল ইসলামের ফোন নম্বর থেকে আসামি পারভেজ ফোন দিয়ে ১ ও ২ নম্বর সাক্ষীদের জানান আকিদুল মারা গেছে। কিভাবে মারা গেছে জানতে চাইলে কখনও বলেন গাড়ির ছাদে ঘুমাচ্ছিলো, গাড়িয়ে পড়ে গেলে ট্রাক পিষে দিয়ে গেছে আবার গাড়ির ছাদ থেকে রাস্তার পাশে ইটের গাদার ওপর মুখ থবুড়ে আছড়ে পড়েছে বলে জানান। রাত ১টা-২টার দিকে আকিদুল ইসলাম নিজেই অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে লাশ বাড়িতে নিয়ে আসেন। নিহত পারভেজের শরীরে কোথাও রক্তের কোনো চিহৃ বা সড়ক দুর্ঘটনায় আঘাতের কোনো চিহৃ ও কাটা ছেড়া, পরিহিত পোশাক ছেড়া ফাটা ছিলো না। তার কপালের ডান পাশে ভ্রুর ওপর ১টি লম্বা করে কাটা দাগ ও গলার সম্মুখভাগে চিকন করে ডান পাশ থেকে বাম পাশ পর্যন্ত কালোশিরা দাগ ছিল। বাদীসহ সাক্ষীগণের সন্দেহ হলে ময়না তদন্ত করতে চাইলে পুলিশি ঝামেলা হবে লাশ দাফন হবে না মর্মে মরা বডির ওপর কাটা ছেড়া হবে নানান কথা বলে তড়িঘড়ি লাশ দাফন করে। সকলের আশঙ্কা আকিদুল এমন কোনো কাজ করেছিলো নিহত পারভেজ দেখে ফেলায় তাকে গলা টিপে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে সড়ক দুর্ঘটনা বলে ধামাচাপা দেয়া হয়। আসামি নিজেই দম্ভোক্তি দেখিয়ে সাক্ষীদের নিকট বলেন, জীবনে কত কিছু করলাম কিছুই হলো না। রেপ করে মার্ডার করলাম আবার পারভেজকে মেরে লাশ নিজেই বাড়ি নিয়ে আনলাম তাও কিছু হলো না। এ ব্যাপারে জীবননগর থানার ওসি আব্দুল খালেক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, আদালত থেকে এখনো এ মামলার কোনো আদেশপত্র পায়নি। আদেশপত্র পেলে তদন্তপূর্বক আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।