স্টাফ রিপোর্টার: এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এই পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ভয়াবহ বন্যা শুরু হয়েছে। এতে শত শত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে বন্ধ হয়ে গেছে পরীক্ষাকেন্দ্র। কোথাও বা বানের পানিতে তা ভেসে গেছে। পরীক্ষার্থীরা নিজ বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ হয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে। এসব কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বছর এই পরীক্ষায় মোট ২০ লাখ ২১ হাজার ৮৬৮ জন শিক্ষার্থী আছে। এরমধ্যে ঢাকা বোর্ডের আওতায় মোট পরীক্ষার্থী তিন লাখ ৯৪ হাজার ৯৯৮ জন। এছাড়া রাজশাহীতে এক লাখ ৯৬ হাজার ৬০০ জন, কুমিল্লায় এক লাখ ৮৮ হাজার ৭১৪ জন, যশোরে এক লাখ ৭০ হাজর ৩৭৭ জন, চট্টগ্রামে এক লাখ ৪৯ ৭১০ জন, বরিশালে ৯৫ হাজার ৯৭৬ জন, সিলেটে এক লাখ ১৬ হাজার ৪২৭ জন, দিনাজপুরে এক লাখ ৭৩ হাজার ৯৬১ জন এবং ময়মনসিংহে এক লাখ ১২ হাজার ৯৪৮ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে। সব মিলে নয় বোর্ডের অধীনে মোট ১৫ লাখ ৯৯ হাজার ৭১১ জন অংশগ্রহণ করবে।
অন্যদিকে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে নয় হাজার ৯৩টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। মোট ৭১৫টি কেন্দ্রে দুই লাখ ৬৮ হাজার ৪৯৫ জন অংশ নেবে। আর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট দুই হাজার ৮১৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। দেশের ৮২৮টি পরীক্ষাকেন্দ্রে মোট এক লাখ ৫৩ হাজার ৬৬২ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে। দেশের বাইরে আটটি দেশে এই পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। এর মধ্যে জেদ্দায় ৭০ জন, রিয়াদে ৪৮ জন, ত্রিপলিতে চারজন, দোহাতে ৬৮ জন, আবুধাবিতে ৫৯ জন, দুবাইয়ে ৩১ জন, বাহরাইনে ৫৩ জন এবং ওমানে ৩৪ জনসহ মোট ৩৬৭ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে এই সিদ্ধান্তের কথা গণমাধ্যমকে জানান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এমএ খায়ের। তিনি বলেন, আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরীক্ষার সময়সূচি পরে জানানো হবে।
সাধারণত প্রতি ফেব্রুয়ারিতে এই পরীক্ষা নেয়া হয়। কিন্তু করোনা দুর্যোগের কারণে পিছিয়ে যায়। সেই হিসাবে নির্ধারিত সময়ে সাড়ে ৪ মাস পর এই পরীক্ষা শুরুর ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এখন বন্যা দুর্যোগের কারণে পরীক্ষা স্থগিত হয়ে গেল।
এসএসসি ও দাখিলে এবার তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে না। আর পরীক্ষা নেয়া হবে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে। তবে ফল প্রকাশ করা হবে পূর্ণ নম্বরে। এসএসসিতে কাল বাংলা (আবশ্যিক) প্রথমপত্রের পরীক্ষা ছিলো। এছাড়া বাংলা (আবশ্যিক) দ্বিতীয়পত্র ও সহজ বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিলো ২০ জুন, ইংরেজি (আবশ্যিক) প্রথমপত্র ২২ জুন ও ইংরেজি (আবশ্যিক) দ্বিতীয়পত্র ২৫ জুন, গণিত (আবশ্যিক) পরীক্ষা ২৭ জুন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। গার্হস্থ্য বিজ্ঞান (তত্ত্বীয়), কৃষিশিক্ষা (তত্ত্বীয়), সংগীত (তত্ত্বীয়), আরবি, সংস্কৃত, পালি, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া (তত্ত্বীয়) এবং চারু ও কারুকলা (তত্ত্বীয়), পদার্থবিজ্ঞান (তত্ত্বীয়), বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং ৩০ জুন, রসায়ন (তত্ত্বীয়), পৌরনীতি ও নাগরিকতা এবং ব্যবসায় উদ্যোগ, ভূগোল ও পরিবেশ ৩ জুলাই, উচ্চতর গণিত (তত্ত্বীয়) ৪ জুলাই, হিসাববিজ্ঞান ৫ জুলাই, জীববিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) এবং অর্থনীতি পরীক্ষা ৬ জুলাই নেওয়ার কথা ছিল। এরপর ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৩ থেকে ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে নেয়া হতো। এখন নতুন রুটিনে আরও বিলম্ব হবে।