তেতুল শেখ কলেজের সভাপতি আব্দুল্লা শেখের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ : অবরোধ
অধ্যক্ষকে গালিগালাজ ও খুনের হুমকি দেয়ায় কারণ দর্শানো নোটিশ : থানায় করা হয়েছে জিডি
স্টাফ রিপোর্টার: অধ্যক্ষ-শিক্ষকদের সাথে অসদাচরণ ও গালাগালির ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর অভিযুক্ত সভাপতির পদত্যাগ ও শাস্তির দাবিতে রাজপথে নেমেছেন ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা। তারা মানববন্ধন শেষে চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন সেøাগান দেয়। মোড়ে মোড়ে আব্দুল্লা শেখের বিরুদ্ধে বিরূপ সমালোচনাসহ দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভেরও বর্হিপ্রকাশ ঘটতে থাকে। আন্দোলনের এক পর্যায়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের সহযোগিতায় উপজেলা প্রশাসনের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করা হয়। কলেজ অধ্যক্ষকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও খুনের হুমকি দেয়ার বিষয়ে ইতোমধ্যেই কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় মো. আব্দুল্লা শেখের বিরুদ্ধে একটি জিডিও করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তেতুল শেখ কলেজের সভাপতি আব্দুুল্লাহ শেখের গালমন্দের একটি ভিডিও মঙ্গলবার ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যায় সভাপতি আব্দুল্লা শেখ বাজে ভাষায় গালমন্দ করছেন অধ্যক্ষ মারফুল হককে। ওই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরদিন বুধবার সকাল ১০টায় তেতুল শেখ কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ আশপাশ এলাকার কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জড়ো হন সদর উপজেলার সরোজগঞ্জ বাজারে। তারা সেখানে মানববন্ধন ও প্রতিবাদসভা করেন। পরে চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ সড়ক অবরোধ করেন তারা। প্রায় দেড় ঘণ্টা সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় সড়কের দুই দিকে প্রায় ৮ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীরা তেতুল শেখ কলেজের অভিযুক্ত সভাপতি আব্দুল্লা শেখের পদত্যাগ ও তার শাস্তি দাবি করেন। বলেন, ‘তেতুল শেখ কলেজটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে আব্দুল্লা শেখ চরম স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠেন। তিনি নিয়োগ বাণিজ্য তো করেছেনই, শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়েও বাধ্য করেছেন। দীর্ঘদিন ধরেই মো. আব্দুল্লা শেখ কলেজের অধ্যক্ষকে মানসিকভাবে চাপ প্রয়োগ করে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে আসছিলেন। তার অনৈতিক সুবিধা দিতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণেই কলেজ অধ্যক্ষের কক্ষে প্রবেশ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন, খুনের হুমকি দেন। এ ভিডিও ভাইরাল হলে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। কলেজের স্বেচ্ছাচারী সভাপতি আব্দুল্লা শেখের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়া না হলে আন্দোলনকারীর থামবে না।’ এদিকে খবর পেয়ে সদর থানার ওসি মাহাব্বুর রহমানের সহযোগিতায় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম ভুইয়া দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তিনি অভিযুক্ত সভাপতির শাস্তির আশ্বাস দেন। ফলে ১৫দিনের জন্য সমস্ত কর্মসূচি স্থগিত করেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় সড়ক অবরোধ তুলে নেন তারা। প্রতিবাদ সভায় বক্তৃতা করেন বদরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম, বড়শলুয়া নিউ মডেল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার, খাসকররা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক আবদুল হান্নান প্রমুখ।
কারণ দর্শানো নোটিশের বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেছেন, কলেজ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির আচরণ এবং কিছু কর্মকা-ের বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। জবাব পেয়ে আবশ্যই আইনগত যুক্তিযুক্ত পদক্ষেপ নেয়া হবে। অপরদিকে জিডি প্রসঙ্গে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ বলেছেন, তেতুল শেখ কলেজের অধ্যক্ষ একটি সাধারণ ডাইরি করেছেন। আব্দুল্লা শেখের বিরুদ্ধে জিডি গ্রহণ করে ইতোমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার তেতুল শেখ কলেজের অধ্যক্ষের সাথে সভাপতির আসদাচরণের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। তারই প্রেক্ষিতে বুধবার সকালে আন্দোলনে নামেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।