আমরা কখনই গরিব মারার বাজেট দেইনি : অর্থমন্ত্রী

 

স্টাফ রিপোর্টার: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘গত তিন বছরে আপনারা ঠকেননি। আমরা কখনই গরিব মারার বাজেট দেইনি। গরিব হওয়ার যন্ত্রণা আমি বুঝি। এবারের বাজেট ছাড়া আমি গত তিন বছরে তিনটা বাজেট দিয়েছি। এবারের বাজেটসহ গত তিনবারের কোনো বাজেটই গরিব মারার ছিলো না। আমরা সবসময় দেশের জনগণের কথা চিন্তা করে বাজেট দেই।’ শুক্রবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অর্থ মন্ত্রণালয় আয়োজিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন করেন- অনেকে এই বাজেটকে গরিব মারার বাজেট বলছে, আপনি এই বাজেটকে এক কথায় কী বলবেন? জবাবে মন্ত্রী ওইসব কথা বলেন। এ সময় অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এই বছরের যেই বাজেট প্রণয়ন করেছি, সেটি আমার মনে হয় দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বাজেট, দেশের মানুষের ক্রয়ের বাজেট। সবাইকে উদ্বুদ্ধ করার জন্যই এবারের বাজেট দেয়া হয়েছে। গত তিন বছর (২০১৮ থেকে ২০২১ সাল) আপনারা ঠকেননি। যা বলেছি, তাই হয়েছে। গরিব হওয়া যে কত কষ্টের সেটা আমি হাড়ে হাড়ে বুঝি। প্রত্যেকটা গরিব মানুষকে সামনে রেখেই বাজেট করি। সুতরাং এটা নিয়ে আপনাদের দুশ্চিন্তা করার কারণ নাই। তবে একটা বিষয় মনে রাখবেন, যখনই কোনো চ্যালেঞ্জ আসে, চ্যালেঞ্জ শুধু একা আসে না- চ্যালেঞ্জ সুযোগও নিয়েও আসেন। যেমন আমাদের রপ্তানি আয় বেড়েছে। এই মুহূর্তে বিশ্বের কোনো দেশের ৫০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় করে না। কিন্তু আমরা করছি। সেজন্যই বলি, চ্যালেঞ্জের সঙ্গে সঙ্গে অনেক সুযোগ তৈরি হয়।’ দেশে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধির কথা স্বীকার করে মন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের অনেক পণ্যের দাম একটু বেশি, এটা সত্য। তবে এটা হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে। যার ফলে সারাবিশ্বেই নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এখানে কারো হাত নেই। এজন্য অনেকে গরিব মারার বাজেট বলছে। তবে আমরা গরিববান্ধব। দেশের সাধারণ জনগণকে গুরুত্ব দিয়েই আগামী বাজেট তৈরি করেছি।’ অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত রয়েছেন- কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, এনবিআরের চেয়ারম্যান, অর্থসচিব, পরিকল্পনা সচিবসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা। প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অর্থমন্ত্রী হিসেবে মুস্তফা কামালের এটি চতুর্থ বাজেট।  স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে স্বাধীন বাংলাদেশের ৫১তম বাজেটের মূল স্লোগান কোভিডের অভিঘাত কাটিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন। যেখানে মূল লক্ষ্য সক্ষমতার উন্নয়ন। বৈশ্বিক ঝুঁকি কাটিয়ে অর্থনীতির স্থিতিশীলতার সঙ্গে জনজীবনে স্বস্তি ফেরানোই এবারের বাজেটের মূল লক্ষ্য। প্রস্তাবিত এই বাজেটের আকার জিডিপির ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট ৪ লাখ ৩১ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। মোট ঘাটতির পরিমাণ ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উৎস থেকে এই ঘাটতি মেটানো হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More