যেকোনো মূল্যে গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগ রাজাকার মুক্ত করা হবে
মেহেরপুর-১ আসনের এমপি সাহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশে এমএ খালেক
গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক বলেছেন, মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন রাজাকারপুত্র। রাজাকার পরিবারের কেউ আওয়ামী লীগের কমিটিতে থাকতে পারবে না। সাহিদুজ্জামান খোকনকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে মেনে নেয়া হবে না। যেকোনো মূল্যেই উপজেলা আওয়ামী লীগ রাজাকারমুক্ত করা হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি। এমপি সাহিদুজ্জামান খোকন কর্তৃক সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে অশালীন বক্তব্যের প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এমএ খালেক উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
গতকাল রোববার গাংনী বাসস্ট্যান্ডে রেজাউল চত্বরে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হত্যার হুমকির প্রতিবাদে শনিবার বিক্ষোভ সমাবেশ করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। এ সমাবেশে সাহিদুজ্জামান খোকন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে অশালীন বক্তব্য দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। তার এই বক্তব্য প্রত্যাহার ও নেতাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনার দাবি করেন এই সমাবেশের বক্তারা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও গাংনী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ খালেক এমপির বক্তব্য মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও অপপ্রচার উল্লেখ করে বলেন, আমি এবং আমার পরিবার গাংনীতে মসজিদ ও এতিমখানা নির্মাণ করেছে। আমরা জাকাত-ফিতরা দিয়ে থাকি। আর আপনি (এমপি) নিজেই এসব নেন। আমার কাছ থেকেও আপনি জাকাত-ফিতরা নিয়েছেন। এমপি হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি ব্যাংকে একটি টাকা ছিলো বলে দেখাতে পারবেন না। অথচ এমপি হওয়ার সাড়ে তিন বছরে তিনি সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। এমপি সাহিদুজ্জামান খোকনকে অরজিন্যাল রাজাকারের সন্তান আখ্যা দিয়ে এমএ খালেক বলেন, সাহিদুজ্জামান খোকনের পিতা আব্দুর গণি একজন অত্যাচারী রাজাকার ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটতরাজের অভিযোগ ছিল। তিনি এখন জীবিত থাকলে নিশ্চিত ফাঁসিতে ঝুলতেন। এ রকম একজন রাজাকারের সন্তানের উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে থাকার কোন অধিকার নেই।
সম্প্রতি গঠিত গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটির বিষয়ে এমএ খালেক বলেন, সে রাজাকারপুত্র তবুও তাকে সভাপতি বানানো হয়েছে। আমরা জেলা আওয়ামী লীগ থেকে তার কমিটি অনুমোদন দিবো না। এরপরও যদি শেখ হাসিনা স্বীকৃতি দেন তবুও আমরা গাংনীতে তাকে স্বীকৃতি দিবো না। আমাদের এক দফা এক দাবি রাজাকার মুক্ত কমিটি চায়।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক এমপি মকবুল হোসেন, গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, উপজেলা যুবলীগ যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মজিরুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগ সহসভাপতি ইমরান হাবীব, উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক আফিস ইকবাল অনিক ও জীবন আকবরসহ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতৃবৃন্দ। সন্ধ্যার পর থেকেই শহরে শুরু হয় বিক্ষোভ। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নেতাকর্মীদের উত্তেজিত সেøাগানে উত্তাল অবস্থা সৃষ্টি হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক ঘুরে গাংনী বাসস্ট্যান্ডে সমাবেশ শুরু হয়।
সমাবেশে প্রথম বক্তা থেকে শুরু করে সর্বশেষ বক্তা পর্যন্ত সবার মুখেই ছিল এমপি সাহিদুজ্জামান খোকনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ। ব্যক্তিগত বিষয় থেকে শুরু করে রাজনৈতিক অঙ্গণ এবং নানা অনিময় দুর্নীতি উত্থাপন করেন বক্তারা। এই মঞ্চে যখন বক্তৃতার উত্তাপ ছড়াচ্ছিল ঠিক তখনই সড়কের ওপরে এমপির কুশপুতুল দাহ শুরু হয়। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কুশপুতুল তৈরি করে তাতে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এমপি সাহিদুজ্জামান খোকনকে হুঁশিয়ার করে তারা সেøাগান দেয়।