স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাজস্ব খাতভুক্ত সহকারী শিক্ষক নিয়োগ ২০২০ এর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে একটানা দুপুর পর্যন্ত পরীক্ষা চলে। চুয়াডাঙ্গায় ১২টি কেন্দ্রে ১০ হাজার ৪১৩ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা থাকলেও উপস্থিত ছিলেন ৭ হাজার ৪০৫ জন এবং অনুপস্থিত ছিলো ৩ হাজার ৮ জন। অপরদিকে ৬ হাজার ১১৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ছিলেন এক হাজার ৭৪৮ জন।
চুয়াডাঙ্গায় সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত জেলার ১২টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। এসব কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ হাজার ৪১৩ জন। এর মধ্যে পরীক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন ৭ হাজার ৪০৫ জন এবং অনুপস্থিত ছিলো ৩ হাজার ৮ জন। পরীক্ষার্থী উপস্থিতির হার শতকরা ৭১ ভাগ এবং অনুপস্থিতির সংখ্যা শতকরা ২৯ ভাগ।
এদিকে, জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলাম খানসহ পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র ঘুরে ঘুরে দেখেন। প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে পরীক্ষা পরিচালনার জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ ও কেন্দ্রের চারপাশে ১৪৪ ধারা জারী করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা শহরের বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, কেন্দ্রগুলোর সামনে পরীক্ষা শুরুর ১ ঘন্টা আগেই পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রে উপস্থিত হয়। কেন্দ্রের বাইরে পরীক্ষার্থীর স্বজনরা বিভিন্ন গাছতলায় পরীক্ষা শেষের অপেক্ষায় ছিলেন। এসময়ে আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে ২৫ দিন বয়সী শিশু সন্তানকে নিয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে পরীক্ষার্থীর এক আত্মীয়ের। ওই শিশুর মা পরীক্ষা দিচ্ছেন। একইভাবে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ কেন্দ্রে অনেক শিশুকে পিতার কোলে দেখা গেছে।
পরীক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সহকারী শিক্ষক নিয়োগ লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র সহজ ছিলো না। বেশ কঠিন। ৮০ নম্বরের পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজী, গণিত ও সাধারণ জ্ঞানের পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। মৌখিক পরীক্ষা ২০ নম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
চুয়াডাঙ্গায় সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০২০ লিখিত পরীক্ষার কেন্দ্রসমূহ ও পরীক্ষার্থীর সংখ্যা হলো চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ (কেন্দ্র-১) এক হাজার জন, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ (কেন্দ্র-২) ৯০৬ জন, আদর্শ সরকারি মহিলা কলেজ এক হাজার জন, চুয়াডাঙ্গা পৌর ডিগ্রী কলেজ এক হাজার ৩১৩ জন, দামুড়হুদা আব্দুল ওদদু শাহ ডিগ্রি কলেজ এক হাজার ৯০ জন, ভিজে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ৯৫০ জন, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এক হাজার জন, দামুড়হুদা সরকারি পাইলট হাইস্কুল ৮০২ জন, এম.এ বারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৫০ জন, সীমান্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৫০ জন, আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ৪৫২ জন এবং সরোজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এক হাজার জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করার কথা ছিলো।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। কোনো কেন্দ্রে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা হয়নি।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় মেহেরপুর জেলাতে ৬১১৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ছিলেন এক হাজার ৭৪৮। যা শতকরা হিসেবে ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ। শুক্রবার মেহেরপুরের ১০টি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রগুলো হলো- মেহেরপুর সরকারি কলেজ, মেহেরপুর সরকারি মহিলা কলেজ, মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মেহেরপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ, ছহি উদ্দীন ডিগ্রী কলেজ, মেহেরপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় এন্ড বিএম কলেজ, মেহেরপুর দারুল উলুম আহমাদিয়া মাদরাসা, কবি নজরুল শিক্ষা মঞ্জিল ও জিনিয়াস ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ।
মেহেরপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ভূপেন রঞ্জন রায় বলেছেন, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ৬১১৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৭৪৮ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন এবং ত্রুটিযুক্ত কারণে একজনের বাতিল করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে জেলা শহরের সবগুলো ফটোকপিয়ারের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশনা ছিলো। প্রবেশপত্র ছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রে কোনো পরীক্ষার্থী বই, খাতা, ক্যালকুলেটর, ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস, ইলেক্ট্রনিক ঘড়ি, উত্তরপত্র, নোট বা কোনো কাগজ, ভ্যানেটি ব্যাগ, পার্স, মোবাইল ফোন বা কোনো ধরণের বস্তু নিয়ে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। কেন্দ্রের ১০০ গজের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি ছিলো।