বেসরকারি স্বাস্থ্য খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে হবে

সম্পাদকীয়

বেসরকারি স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম-বিশৃঙ্খলার বিষয়টি বহুল আলোচিত। এ খাতে দীর্ঘদিন ধরে এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা চলে আসছে। চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরসহ সারা দেশে অবৈধ বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে বারবার অভিযান চালানোর পরও যেভাবে অবৈধ প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে, তাতে কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

জানা গেছে, নিবন্ধনহীন ও বৈধ কাগজপত্র না থাকায় সারা দেশে শতাধিক হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া কিছু প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা ও সতর্ক করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের এ অভিযানকে আমরা স্বাগত জানাই। এ অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। দেশে যাতে কোনো অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্যক্রম পরিচালিত হতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আলোচিত অভিযান রাজশাহীতে শুরু হয়েছে কিছুটা দেরিতে। রাজশাহী শহরের একটি নির্দিষ্ট এলাকায় শতাধিক হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এর মধ্যে কতটি প্রতিষ্ঠান নিয়ম মেনে পরিচালিত হচ্ছে? বস্তুত সারা দেশেই উপজেলা পর্যায়েও রয়েছে বহু হাসপাতাল-ক্লিনিক; যেগুলোয় স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ন্যূনতম সুবিধা নেই। এসব প্রতিষ্ঠানে বহু রোগী প্রতারণার শিকার হয়ে থাকে। যেহেতু এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকা-ের সঙ্গে রোগীর জীবন-মরণ জড়িত, তাই দেশের সব বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সেবার মান খতিয়ে দেখা দরকার। চিকিৎসাসেবা নিতে আসা মানুষ যাতে প্রতারণা বা হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

যেসব বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বৈধভাবে চলছে, সেগুলোর সেবার মূল্য নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন। রোগীদের কাছ থেকে ইচ্ছামতো ফি আদায়ের অভিযোগও দীর্ঘদিনের। এ পরিপ্রেক্ষিতে এ খাতে শৃঙ্খলা ফেরানোর বিষয়টি জরুরি হয়ে পড়েছে। নিজেদের খেয়ালখুশি মতো প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কারও নেই। জায়গা-জমি বিক্রি করে, সঞ্চয় ভেঙে, কেউবা ঋণ করে চিকিৎসার খরচ জোগাতে গিয়ে পথে বসতে বাধ্য হয়। তারপরও যদি মানুষ মানসম্মত ও নিরাপদ স্বাস্থ্যসেবা না পায়, এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে। প্রচলিত আইনের আওতার মধ্যেই সবাইকে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে হবে। দেশের সব বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার যথাযথভাবে নিয়ম মেনে চলছে কিনা, এ বিষয়ে জোরালো মনিটরিং অব্যাহত রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ত্রুটি পাওয়া গেলে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। সরষের ভেতর যাতে ভূত না থাকে তাও নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের নতুন উদ্যোগের ফলে বেসরকারি স্বাস্থ্য খাতে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে, এটাই প্রত্যাশা।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More