দুই ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় : চরম দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীরা

সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ৯ থেকে ১৩ ঘণ্টা বিলম্বে চলাচল

স্টাফ রিপোর্টার: খুলনা-ঢাকা ও বেনাপোল-ঢাকা রেলপথে চুয়াডাঙ্গা দিয়ে চলাচল করা সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। গত শনিবার থেকে ট্রেন দুটি ৯ থেকে ১৩ ঘণ্টা পর্যন্ত বিলম্বে চলাচল করছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীরা। শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে গতকাল রোববার বেনাপোল এক্সপ্রেসের যাত্রা বাতিল করা হয়। চুয়াডাঙ্গায় রেলওয়ে স্টেশনের ফেসবুক পেইজে দৃষ্টি আকর্ষণ করে একটি পোস্ট দেয়া হয়। তাতে লেখা ছিলো ‘সম্মানীত যাত্রীসাধারণের সদয় অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, মৌচাক স্টেশনের দুর্ঘটনার কারণে বেনাপোল এক্সপ্রেস বর্তমানে ১৪.৩০ ঘন্টা বিলম্বে যাতায়াত করায় ২৯/০৫/২০২২ তারিখের বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। টিকেটের মূল্য ফেরতযোগ্য। সম্মানিত যাত্রীসাধারণের সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী’। বাংলাদেশ রেলওয়ে (পশ্চিমাঞ্চল)।

রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানান, গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় গত শুক্রবার রাত ১০টায় পঞ্চগড় এক্সপ্রেসের দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়। বগি দুটি উদ্ধারের ১০ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। যে কারণে এই ট্রেন দুটি উভয় পথে (আপ-ডাউন) চলাচলে বিলম্ব হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনে গতকাল রোববার সকাল ৯টায় কথা হয় মেহেরপুর সদর উপজেলার দরবেশপুর গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. সালেকীনের সঙ্গে। তিনি বলেন, সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না। শরিবার রাত সাড়ে ১২টা থেকে স্টেশনে এসে বসে আছেন। সকাল ৯টায়ও কেউ সঠিকভাবে বলতে পারছে না ট্রেন কখন পৌঁছাবে, কখন ছাড়বে।

আ হ ম শামীমুজ্জামান নামের জেলা পর্যায়ের একটি সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা মোবাইলফোনে বলেন, দাপ্তরিক জরুরি কাজে ঢাকায় যাওয়ার জন্য গতকাল (শনিবার) দিবাগত রাত দেড়টা থেকে আলমডাঙ্গা রেলস্টেশনে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন। রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকেও তিনি জানতে পারেননি কখন ট্রেন আসবে।

চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশন সূত্রে জানা যায়, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বেনাপোলগামী আন্তঃনগর বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি চুয়াডাঙ্গা স্টেশন থেকে ছাড়ার সময় ছিলো শনিবার ভোর ৫টা ৩৫ মিনিটে। ট্রেনটি ১১ ঘণ্টা বিলম্বে বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটে চুয়াডাঙ্গা থেকে বেনাপোলের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ট্রেনটি বেনাপোল থেকে ঢাকায় যাওয়ার পথে চুয়াডাঙ্গা স্টেশন ছাড়ার সময় ছিলো গতকাল বেলা ৩টা ১৫ মিনিট। ট্রেনটি প্রায় ১৩ ঘণ্টা বিলম্বে গতকাল রোববার ভোররাত ৪টা ৮ মিনিটে চুয়াডাঙ্গা থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

অন্যদিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি চুয়াডাঙ্গা স্টেশন ছাড়ার সময় ছিলো শনিবার বেলা ২টা ৪৫ মিনিট। ট্রেনটি প্রায় ১২ ঘণ্টা বিলম্বে রাত ২টা ৩৫ মিনিটে চুয়াডাঙ্গা থেকে খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। একই ট্রেন খুলনা থেকে ঢাকায় যাওয়ার পথে চুয়াডাঙ্গা স্টেশন ছাড়ার নির্ধারিত সময় ছিলো রাত ১২টা ৫৫ মিনিট। ট্রেনটি ৯ ঘণ্টা ১৩ মিনিট বিলম্বে  রোববার সকাল ১০টা ৮ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশন ত্যাগ করে।

এদিকে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে চলাচলকারী সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে খুলনা-ঢাকা রেলপথের আন্তনগর চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটির চলাচলেও প্রভাব পড়েছে। ঢাকা থেকে খুলনায় যাওয়া এই ট্রেন রাত ১টায় চুয়াডাঙ্গা স্টেশন অতিক্রম করার কথা থাকলেও ট্রেনটি ৩ ঘণ্টা ২০ মিনিট বিলম্বে রোববার ভোররাত ৪টা ২০ মিনিটে ছেড়ে যায়।

চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার নাসরিন ফারহানা বলেন, গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় শুক্রবার রাতে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনের দুটি বগি লাইনচ্যুত হওয়ায় সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি উভয় পথে (আপ-ডাউন) ১০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আটকা পড়ে। যে কারণে ট্রেন দুটির শিডিউল মেলানো সম্ভব হয়নি। তবে সাপ্তাহিক বন্ধের পর আগামী বুধবার থেকে সুন্দরবন এবং বৃহস্পতিবার থেকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More