মেহেরপুর অফিস: নানা পরিক্রমায় অবশেষে মেহেরপুর পৌরসভা নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত সাবেক ও বর্তমান মেয়রের যুুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছে। যাচাই বাছাইয়ে স্বতন্ত্র দুই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় এখন মূল প্রতিদ্বন্দ্বী মাত্র দুজন। বর্তমান মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন প্রথম মেয়র হয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন আর সাবেক মেয়র মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতুর জনপ্রিয়তা; এই দুয়ে মিলে নির্বাচন জমবে বেশ। এমন মন্তব্য করেছেন এলাকার ভোটারদের অনেকে।
জানা গেছে, বর্তমান মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন মেহেরপুর জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক। রাজনীতির অঙ্গনে তার যেমন জনপ্রিয়তা রয়েছে তেমনি মেয়র হিসেবেও তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। যুবলীগের নেতৃত্বের জায়গায় থেকে পৌরসভায় আসা মাহফুজুর রহমান রিটন তার কর্মকালীন সময়ে অনেক কাজ সম্পন্ন করেছেন। পৌরসভার মানুষের কাঙ্খিত প্রত্যাশা পূরণে তিনি কতটা সক্ষম হয়েছেন তা ভোটের মাধ্যমে প্রকাশ পাবে বলে জানালেন ভোটারদের কয়েকজন।
তবে সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মাহফুজুর রিটন তার পাঁচ বছরের দায়িত্বে অনেক বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। এর মধ্যেও তিনি পৌরসভার অনেক মানুষের কাছে আস্থা অর্জনে সক্ষম। বিশেষ করে করোনাকালীন সময়ে তিনি ছিলেন মাঠে ময়দানে। পৌর নাগরিকরা তাকে পাশে পেয়ে বেশ সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। এছাড়াও বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভিজিএফ চাল এবং অন্যান্য সহযোগিতা পৌঁছে দিয়ে তিনি বেশ প্রশংসিত হয়েছেন।
সাধারণ ভোটারদের কয়েকজন জানান, পৌরসভার সেবার ক্ষেত্রে মাহফুজুর রিটনের সুনাম রয়েছে। সাধারণ মানুষ কিংবা দরিদ্র মানুষদের সেবা দিতে কোনো পার্থক্য করে দেখেননি। পৌরসভার অনেক সেবায় সরকার নির্ধারিত মূল্য রয়েছে। এক্ষেত্রে দরিদ্র মানুষদের মাঝে কখনও নামমাত্র আবার কখনও বিনামূলেই পৌরসভার সেবা দিয়েছেন মাহফুজুর রহমান রিটন। ব্যক্তি মানুষ হিসেবেও তিনি মিশুক ও মিষ্টভাষী। পৌর নাগরিকরা সহজেই তার কাছে সেবার জন্য যেতে পারেন এবং মনখুলে সবকিছু শেয়ার করতে পারেন। ফলে জীবনের প্রথম সুযোগ পেয়েই তিনি ভোটারদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন।
অপরদিকে সাবেক পৌর মেয়র মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতু একজন জনপ্রিয় মেয়র হিসেবে একাধিকবার দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেয়েছেন। তিনি সবসময় নিজেকে নির্দলীয় মানুষ হিসেবে তুলে ধরেছেন। ফলে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেই তিনি মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন।
ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতু প্রায় দু’দশক সময় ধরে মেহেরপুর পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার প্রতি ভোটারদের আস্থা ছিলো বেশ। তিনি মেহেরপুরের তৃতীয় শ্রেণির পৌরসভাকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করেছেন। শুধু তাই নয়; পরপর ৩ বার মেহেরপুর দেশের শ্রেষ্ঠ পৌরসভার খেতাব পায় তার সময়ে। ছোট্ট মেহেরপুর পৌরসভাকে মনের মাধুরী দিয়ে সাজিয়েছিলেন। বিনোদনের জন্য ফুল-ফলে আর দৃষ্টিনন্দন কিছু স্থাপনা করে তিনি বিনোদন প্রেমিদের মনে আস্থার জায়গা করে নেন। বিশেষ করে সাধারণ ভোটারদের মেয়র হিসেবে তিনি পরিচিতি পেয়েছিলেন। তিনি পৌরসভার বাসিন্দাদের নাগরিক সুযোগ বৃদ্ধিতে নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের সর্বোচ্চ ব্যবহার করেছেন। এতে অনেক পৌর কর্মচারীর রয়েছে তার প্রতি অনীহা।
একজন জনপ্রিয় সাবেক মেয়র হিসেবে কতটুকু জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পেরেছেন তা ভোটের মাধ্যমেই জানা যাবে বলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ভোটারদের কয়েকজন।
আগামী ১৫ জুন মেহেরপুর পৌরসভার নির্বাচন। ভোটের ফলাফলের বিষয়ে দুই প্রার্থীর জনপ্রিয়তা বিবেচনা করবেন ভোটাররা। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়েই তারা নির্বাচিত করবেন। তাই এ নির্বাচনে কে জয়লাভ করবেন তা দেখার জন্য ভোটের ততদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।