।। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউসুফ আলী।।
আজ ৯ রমজান। রহমত দশক প্রায় শেষ হতে আসল। রমজান মাস প্রভূত কল্যাণ ও বরকতের মাস। রমজানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সেহরি। রোজা পালনের উদ্দেশ্যে শেষ রাতের খানাকে সাহরি বা সেহরি বলা হয়। সেহরি খাওয়ার মধ্যে অনেক কল্যাণ নিহিত আছে। হাদিসে রাসুলে কারীম (সা.) এরশাদ করেন, তোমরা সেহরি খাবে কারণ সেহরিতে বরকত রয়েছে (বুখারী, মুসলিম)। সাহাবী হযরত ইরবায ইবনে সারিয়া (রা.) বলেন, একদা রমজানে হুজুর (সা.) আমাকে সেহরি খেতে ডাকলেন এবং বললেন, আস বরকতের খানার দিকে আস (আবু দাউদ, নাসায়ী)। মোল্লা আলী ক্বারী (রহ.) বলেন, অর্ধরাত থেকে সেহরির সময় শুরু হয়। তবে কোন কোন প্রসিদ্ধ মুফাসসিরগণের মতে সেহরি রাতের ছয় ভাগের শেষ ভাগের নাম। অর্থাৎ যদি ১২ ঘণ্টা রাত হয় তাহলে শেষের দুই ঘণ্টা হবে সেহরির সময়। তবে শেষের এই মতটিই হাদিসের সর্বাধিক অনুকূলে। এ প্রসঙ্গে জায়েদ বিন সাবেত (রা.) বলেন, আমরা হুজুর (সা.) এর সঙ্গে সেহরি খেয়েছি, অতঃপর নামাজের জন্য দ-ায়মান হয়েছি। রাবি জিজ্ঞাসা করলেন, সেহরি ও ফজরের নামাজের মধ্যে কি পরিমাণ সময় ছিলো? জায়েদ বিন সাবেত (রা.) উত্তর দিলেন, ৫০ আয়াত তেলওয়াত পরিমাণ (বুখারী)। এই হাদিসের আলোকে ওলামায়ে কেরাম বলেছেন যে সুবহে সাদিকের ৫/৭ মিনিট আগেই সেহরি শেষ করা উচিত। ইফতার সময় হওয়ার সাথে সাথে এবং সেহরি বিলম্বে করা মোস্তাহাব বা উত্তম। যেহেতু সেহরি খাওয়ার মধ্যে অপরিসীম বরকত রয়েছে, সেহেতু সেহরিতে অবশ্যই কিছু না কিছু খাওয়া দরকার। একেবারে উপস থাকা ঠিক নয়। যদি কিছু খাওয়ার সময় না থাকে তাহলে অন্তত এক গ্লাস পানি বা কয়েকটি খেজুর খেয়ে নিলেও সেহরির বরকত হাসিল হবে এবং সুন্নতের ওপর আমল হবে। কারণ হুজুর (সা.) এর সুন্নতের মধ্যেই হেদায়ত ও মুক্তি নিহিত রয়েছে। সেহরির সময় ওঠার আর একটি বাড়তি ফায়দা হলো কিছু না; কিছু তাহাজ্জুদ নামাজের সুযোগ পাওয়া যায়। আল্লাহর হাবীব (সা.) এরশাদ করেন, আমাদের রোজা আর আহলে কিতাবদের (ইহুদি ও খ্রিষ্টান) রোজার মধ্যে পার্থক্য হলো সেহরি খাওয়া (মুসলিম)। তাই আসুন, আমরা সবাই মিলে নিয়মিত সেহরি করি এবং এর বরকত হাসিল করি। (লেখক: মৎস্য বিজ্ঞানী ও অধ্যাপক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়)
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ