খোশ আমদেদ মাহে রমজান
।। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউসুফ আলী।।
আজ ৬ রমজান। রহমত দশকের ষষ্ঠ দিন। রমজানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ইফতার। এর মধ্যে অনেক কল্যাণ নিহিত আছে। সময় হওয়ার সাথে সাথে ইফতার করা মোস্তাহাব বা উত্তম। রাসুলে করীম (সা.) এরশাদ করেন, মানুষ যতদিন বিলম্ব না করে ইফতারি করবে ততদিন কল্যাণের ওপর থাকবে (বুখারী, মুসলিম, তিরমিজী)। উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, হুজুর (সা.) বলেছেন, যখন রাত আসে, দিন চলে যায় এবং সূর্য ডুবে যায় তখন ইফতার করবে (বুখারী, মুসলিম, তিরমিজী, আবু দাউদ) । আর এক হাদিসে আছে, আমার উম্মত সুন্নতের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে, যতদিন পর্যন্ত ইফতার করার জন্য নক্ষত্র উদয়ের অপেক্ষা না করবে (ইবনে হিব্বান, হাকিম)। ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের অভ্যাস ছিল যে তারা যতক্ষণ পর্যন্ত নক্ষত্র উদিত হয়েছে এরূপ না দেখত ততক্ষণ ইফতার করতো না। এটি ছিল তাদের যুক্তিহীন কাজ। এর বিপরীতে হুজুর (সা.) আমাদেরকে তাড়াতাড়ি ইফতার করার শিক্ষা দিয়েছেন। আবু আতিয়্যাহ (র.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি এবং মাসরূক (র.) আয়েশা (রা.)-এর নিকট গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, রাসুলের (স.) দুইজন সাহাবীর মধ্যে একজন ইফতার করেন এবং নামাজ পড়েন বিলম্ব না করে এবং অন্যজন ইফতার করেন এবং নামাজ পড়েন বিলম্ব করে। আয়েশা (রা.) জিজ্ঞাসা করেন, কে বিলম্ব না করে ইফতার করেন এবং নামাজ পড়েন? আমরা বললাম আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)। তিনি বললেন, হুজুর (সা.) এভাবেই করেছেন (মুসলিম, তিরমিজী)। তা’ ছাড়া ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়। এক হাদিসে রাসুলে কারীম (সা.) এরশাদ করেছেন, তিন ব্যক্তির দোয়া ব্যার্থ হয় না। এক. ইফতারের সময় রোজাদারের দোয়া। দুই. ন্যায় বিচারক বাদশাহের দোয়া। তিন. মজলুমের দোয়া (আহমদ)। কিন্তু ইফতারের সময় আমরা এমন ভাবে খাওয়াতে ঝাঁপায়ে পড়ি যে খোদ ইফতারের দোয়াও ভুলে যায়। ইফতারের প্রসিদ্ধ দোয়া হল, আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া বিকা আমানতু ওয়া আলাইকা তাওয়াক্কালতু ওয়া আ’লা রিযকিকা আফতারতু। অর্থাৎ হে আল্লাহ আমি আপনার জন্যই রোযা রেখেছি, আপনার প্রতিই ঈমান এনেছি, আপনার উপরই ভরসা করেছি এবং আপনার রিজিক দ্বারাই ইফতার করছি। রমজান মাস রহমত, বরকত ও মাগফেরাতের মাস। তাই আসুন, আমরা সবাই মিলে এই মহিমান্বিত মাসে মহান আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করি এবং মাগফিরাত হাসিল করি। (লেখক: মৎস্য বিজ্ঞানী ও অধ্যাপক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়)