।। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউসুফ আলী।।
আজ ৪ রমজান। রহমত দশকের আজ চতুর্থ দিন। নেকী কামায়ের মরসুম রমজানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো তারাবির নামাজ। সহিহ রেওয়াতে বর্ণিত, যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় তারাবির নামাজ আদায় করবে তার অতীতের সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেয়া হবে (বুখারী, মুসলিম, তিরমিজী, আবু দাউদ, ইবনে মাজা, নাসাঈ)। নাযন ইবনে শায়বান (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসের একাংশে হুজুর (সা.) এরশাদ করেছেন, আল্লাহ তোমাদের ওপর রমজানের রোজাকে ফরজ করেছেন এবং আমি তোমাদের ওপরের তারাবির নামাজকে সুন্নত সাব্যস্ত করেছি। যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় রোজা ও তারাবির নামাজ আদায় করবে; সে এমনভাবে গোনাহ্মুক্ত হবে যেন এইমাত্র তার মা তাকে প্রসব করলো (ইবনে মাজাহ)। তারাবির নামাজ অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। রসুল (সা.) তারাবি নামাজের ব্যাপারে ফরজ বা ওয়াজিবের মতো কঠোর নির্দেশ দিতেন না, তবে সাহাবীদেরকে এই নামাজের জন্য খুব উৎসাহিত করতেন (মুসলিম)। এই নামাজ সুন্নত হওয়ার ব্যাপারে সকল ইমাম একমত। তারাবির নামাজের ফজিলত হুজুর (সা.) এর কাছে এতো বেশি ছিল যে, তিনি জামাতের সাথে সাহাবীদের নিয়ে এই নামাজ বেশ কয়েক দিন আদায় করেছিলেন (ছিহাহ্ সিত্তার সকল কিতাব)। তবে এই নামাজ উম্মতের ওপর ফরজ হওয়ার আশংকায় তিনি পরবর্তীতে জামাতের এহতেমাম করেননি।
কিন্তু সাহাবায়েকেরাম (রা.) তখনও বিচ্ছিন্নভাবে জামাতের সাথে অথবা একাকী এই নামাজ আদায় করেছেন। মদিনার বিখ্যাত ইমাম মালিক (রহ.) তার প্রসিদ্ধ সহিহ হাদিসগ্রন্থ মুয়াত্ত মালিক কিতাবে বর্ণনা করেছেন, হযরত উমর (রা.) এর খেলাফত কালে সাহাবীরা রমজানে ২০ রাকাত তারাবি ও ৩ রাকাত বিতর পড়তেন। ইহাই শেষ পর্যন্ত স্থির করা হয় (মুয়াত্ত মালিক, তারাবিহ অধ্যায়)। সুনানে বায়হাকিতে ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হুজুর (সা.) রমজানে ২০ রাকাত তারাবির নামাজ আদায় করতেন। সাহাবায়ে কেরামের যুগ থেকেই দীর্ঘ চৌদ্দশত বছর যাবৎ মক্কা মোকাররমা ও মদিনা মনোওয়ারার হারামাইন শরিফে ২০ রাকাত তারাবির নামাজ এবং ৩ রাকাত বিতর নামাজ জামাতে আদায় হয়ে আসছে। তাই আসুন, আমরা সবাই রমজানের তারাবির নামাজ যথাযথভাবে আদায় করি। (লেখক: মৎস্য বিজ্ঞানী ও অধ্যাপক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়)
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ