দর্শনা থানা বিএনপি’র সমন্বয়কারী সদস্যদের মধ্যেই নেই সমন্বয়
একে অপরের বিরুদ্ধে করছেন বিষাদাগার : সাধারণ নেতাকর্মীরা হতাশ
বেগমপুর প্রতিনিধি: আগামী নির্বাচন ও আন্দলনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি দলকে সুসংগঠিত করতে তৃণমূল পর্যায় থেকে দলকে সুসংগঠিত করার কাজ শুরু করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় জেলা আহ্বায়ক কমিটি ১৭ সদস্য বিশিষ্ট দর্শনা থানা সমন্বয় টিম গঠন করে। যাদের ওপর দায়িত্ব দেয়া হয় দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলা বাদে চুয়াডাঙ্গা-২ নির্বাচনী এলাকার ৫৪টি ওয়ার্ড কমিটি গঠন করার। কমিটি গঠন করতে গিয়ে সমন্বয় কমিটির সদস্যদের কাঁদা ছোঁড়াছুড়িতে নেতা-কর্মীরা চরম হতাশ। অনেক নেতাকর্মী মন্তব্য করে বলেন, নেতারা ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করতে গিয়ে দলের ক্ষতি করছে। সমন্বয় কমিটির সদস্যদের নিয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেয়ার দাবি তুলেছে গড়াইটুপি, তিতুদহ, নেহালপুর ও বেগমপুর ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
জানাগেছে, ২০ ফেব্রুয়ারি চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ১৭ সদস্য বিশিষ্ট দর্শনা থানা সমন্বয় কমিটি গঠন করেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন খাজা আবুল হাসনাত প্রধান সমন্বয়কারী, যুগ্ম-সমন্বয়কারী এম জেনারেল ইসলাম, সদস্য বেগমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আহম্মদ আলী, তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আকতার হোসেন, কুড়ালগাছি ইউনিয়নের আব্দুল হাই, তিতুদহের মিলন মিয়া, কুড়ালগাছির আব্দুর রশিদ, মদনার শফিউল্লাহ শফি, বেগমপুরের আশাবুল হক, তিতুদহের আবুল হাশেম টোটন, গড়াইটুপির মহব্বত আলী, বেগমপুরের আসলাম উদ্দিন, মদনার আশারাফুল আলম বিপ্লব, গড়াইটুপির ডাক্তার আতিয়ার রহমান, নেহালপুরের রফিকুল ইসলাম, কুড়ালগাছির হাবিবুর রহমান হবি ও নেহালপুর ইউনিয়নের খায়রুল ইসলাম যুদ্ধ। জেলা আহ্বায়ক কমিটির নির্দেশনা থাকে চুয়াডাঙ্গা-২ নির্বাচনী এলাকার দামুড়হুদা ও জীবনগর উপজেলা বাদে দর্শনা থানাধীন এলাকার ওয়ার্ড কমিটি গঠনের। ওয়ার্ড কমিটি গঠনের শুরুতেই নিজেদের মধ্যে সমন্বয় না থাকায় কমিটি গঠনে দেখা দেয় হট্টগোল। যে উদ্দেশ্যে সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয় সেই সমন্বয় কমিটির সদস্যদের নিজেদের মধ্যেই নেই সমন্বয়। ১৭ সদস্যদের মধ্যে কিছু সদস্য খাজা আবুল হাসনাতের পক্ষে এবং কিছু সদস্য এম জেনারেলের অনুসারী হয়ে যায়। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, থানার দায়িত্বে থাকা নেতারা চাচ্ছে নিজের পছন্দের ব্যক্তিকে ওয়ার্ড কমিটিতে অর্ন্তভুক্তি করা আর ইউনিয়নের নেতারা চাইছেন নিজের পছন্দের ব্যক্তিকে ওয়ার্ড কমিটিতে অর্ন্তভুক্তি করা। যাতে পরবর্তীতে ইউনিয়ন ও থানা কমিটির সভাপতি সাধারণ সম্পাক হওয়ার ক্ষেত্রে এসব ব্যক্তিদের সমর্থন নিজের পক্ষে থাকে। দলকে সুসংগঠিত না করে নিজের জায়গা ধরে রাখতেই কমিটি গঠন করার উদ্দেশ্য থাকায় এমনটি ঘটছে। দলীয় ভাবে তেমন ভূমিকা না থাকলেও লবিং করে জেলা আহ্বায়কে ভুল তথ্য দিয়ে সমন্বয় কমিটির সদস্য হয়েছেন। এতে করে ইউনিয়নের প্রকৃত বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে চাপাক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। যারা দলের জন্য জেল জুলুম, নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন তারা হয়েছেন অবেহেলিত। এ ব্যাপারে দর্শনা থানার প্রধান সমন্বয়কারী খাজা আবুল হাসনাত বলেন, সার্বিক বিষয়গুলো জেলা কমিটিকে জানানো হয়েছে। তারাই সাংগাঠনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। এম জেনারেল ইসলাম বলেন, নিজস্বার্থে কোনো কোনো সদস্য দল করতে এসেছেন। তাই ওয়ার্ড কমিটিতে ওয়ার্ডবাসীর মতামতকে উপেক্ষা করে নিজের পছন্দের লোককে দায়িত্বে বসাতে চাইছেন। আমি দলকে ভালোবাসি। তাই দীর্ঘদিন নিজের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে দল করে আসছি। দলকে ব্যক্তি স্বার্থে কেউ ব্যবহার করবে তা হতে পারে না। আমার প্রত্যাশা জেলা কমিটি তদন্ত সাপেক্ষে এর বিচার করবেন।