দীর্ঘ দেড়যুগ পর আলমডাঙ্গা উপজেলা আ.লীগের সম্মেলন আজ
বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ : বিলবোর্ড পোস্টারে ছেয়ে গেছে শহর
আলমডাঙ্গা ব্যুরো: দীর্ঘ ১৮ বছর পর আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আজ সোমবার। ২০০৪ সালের ৮ মার্চ সর্বশেষ আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ দেড়যুগ পরে অনুষ্ঠিতব্য এ সম্মেলনকে ঘিরে উপজেলাব্যাপী নানা আলোচনা-সমালোচনা ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। আলমডাঙ্গা শহরে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। মোড়ে মোড়ে সুদৃশ্য বিলবোর্ড ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে শহর। চারিদিকে সাজ সাজ রব। সন্ধ্যায় বিভিন্ন নেতার পক্ষে নানাবিধ স্লোগান তুলে মিছিল বের হচ্ছে। শহরের প্রত্যেক প্রবেশদ্বারে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। আলমডাঙ্গা সরকারি কলেজ চত্বরে সম্মেলনের জন্য বিশাল প্যাণ্ডেল নির্মাণ করা হয়েছে। এবার উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি পদে ৩ জনের নাম শোনা যাচ্ছে। এরা হলেন বর্তমান সভাপতি পৌর মেয়র হাসান কাদির গনু ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবু মুছা। সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী মাস্টার ও অ্যাড. মোখলেছুর রহমান প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। উপজেলার ১৫ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা থেকে ১২ হাজার নেতাকর্মী এ সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন বলে আ.লীগ সূত্রে জানানো হয়েছে। উপস্থিত থাকবেন প্রায় ৬শ কাউন্সিলর।
দলীয়সূত্রে জানা গেছে, এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পারভীন জামান কল্পনা। সম্মেলন উদ্বোধন করবেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্ষীয়ান নেতা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি। এছাড়াও কেন্দ্রীয় ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন উপজেলা আ.লীগের এক সময়ের জনপ্রিয় সভাপতি ছিলেন। অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলন সম্পর্কে তিনি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হোক সাবেক সভাপতি হিসেবে এটাই আমি চাই। কিন্তু এই সম্মেলন ঘিরে আওয়ামী নেতাকর্মীদের কোনো উন্মাদনা নেই। কারণ যারা আছে তারাই আসবে নতুন কমিটিতে। নতুন মুখ আসার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
আলমডাঙ্গা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি অ্যাড. সালমুন আহমেদ ডন জানান, দীর্ঘ ১৮ বছর পর সম্মেলন হতে যাচ্ছে। আমরা খুব এক্সাইটেড। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ ও আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গতিশীল নেতৃত্ব প্রয়োজন। এ সম্মেলনের মাধ্যমে সেই গতিশীল নেতৃত্ব খুঁজে নেয়া সম্ভব হবে বলে বিশ্বাস করি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ইয়াকুব আলী মাস্টার বলেন, আমরা চাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে যারা বুকে লালন করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শ অনুসারে আওয়ামীলীগের জন্য যারা সবসময় কাজ করেন তারাই কমিটিতে আসুক।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ভোটের সময় যারা বিরোধিতা করে আসছে তারা যেনো কমিটিতে ঢুকে না পড়ে। আওয়ামী লীগের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা কিছু নেতাকর্মী দল ও পদ ব্যবহার করে বিভিন্ন অপকর্ম করেছে। ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচন থেকে শুরু করে স্থানীয় নির্বাচনসহ সব নির্বাচনে ওই সব নেতা প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। ফলে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জয়লাভে অনেকাংশে ব্যর্থ হয়েছে। তাই নেতা নির্বাচনে সম্মেলনের নীতি নির্ধারকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের স্থানীয় সক্রিয় কর্মীরা।