ঝিনাইদহে বোরো চারা রোপণে ব্যস্ত কৃষক
বাজার গোপালপুর প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের চাষিরা ইরি বোরো ধানের চারা রোপণ করতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। সকালের শীত-কুয়াশা ও ঠা-া উপেক্ষা করে ধানের চারা রোপণ, আবার কেউ চারা রোপণের জন্য জমি তৈরি করছেন। চলতি মরসুমে গতকাল মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) পর্যন্ত জেলায় মোট লক্ষ্যমাত্রার শতকরা ৪০ ভাগ জমিতে চারা রোপণের কাজ শেষ হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কৃষকরা সকালে ঘুম থেকে উঠে গায়ে হালকা গরম কাপড় আর মাথায় গামছা বেঁধে জমি তৈরির কাজ করছেন। কোন কৃষক জমির আইল ঠিক করছেন। আবার কেউ জমি কলেরলাঙ্গল দিয়ে চাষ করে মই দিয়ে জমি সমান করে ধানের চারা রোপণের উপযুক্ত করে তুলছেন। সেই সাথে ব্যস্ত কৃষি শ্রমিকগণ। শ্রমিকেরা চাইছেন বেশি পরিমাণ জমিতে ধানের চারা রোপণ করে, ইরি বোরো মরসুমে বেশি পরিমাণে আয় করতে। এখন পর্যন্ত ধানের বাজার দর ভালো থাকায় কৃষকরা আগ্রহ সহকারে ধান রোপণ করছেন।
ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার যাদবপুরের কৃষক মহিবুল মিয়া জানান, তিনি এ বছর ৩৫ বিঘা জমিতে ইরি ধান করবেন। এখন পর্যন্ত ১৮ বিঘা জমিতে ধানের চারা রোপণের কাজ শেষ হয়েছে। বাকি জমিতে কাঁদা তৈরির কাজ চলছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে লাগানো কাজ শেষ হবে। প্রতি বিঘা জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে দেড় হাজার টাকা শ্রমিকের দিতে হচ্ছে বলে তিনি জানান।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানান, জেলার ৬ উপজেলায় ৭৮ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে ইরি বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তারমধ্যে ৬৯ হাজার ৮৫৫ হেক্টর উফসি জাতের এবং ৯ হাজার হেক্টর হাইব্রিড জাতের। এজন্য ৩ হাজার ৮৫৩ হেক্টর বীজতলা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে ৬৫৪ হেক্টর বীজতলা বেশি তৈরি হয়েছে। অর্থাৎ ৪ হাজার ৪০৭ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের বীজতলা তৈরি করেছে কৃষক। যার মধ্যে উফসি জাতের ৩ হাজার ৪৯৩ হেক্টর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও ৩ হাজার ৯৮৭ হেক্টর ও হাইব্রিড জাতের ৩৬০ হেক্টর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও ৪২০ হেক্টর বীজতলা তৈরি হয়েছে। বর্তমান কৃষক জমিতে চারা রোপণের কাজে সময় ব্যয় করছেন। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত চলতি মরসুমে জেলায় ৩১ হাজার ৩৫৭ হেক্টর জমিতে ইরি বোরো ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। যার মধ্যে উফসি জাতের ২৮ হাজার ৬শ হেক্টর এবং হাইব্রিড ২ হাজার ৭৫৭ হেক্টর। চলতি মরসুমে ইরি বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে বলে কৃষি বিভাগ আশা করছেন।