কোনো ওজুহাত না থাকলে চুয়াডাঙ্গায় স্বাস্থ্যসেবার মান আরও উন্নয়ন সম্ভব

চুয়াডাঙ্গায় বিদ্যমান স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে লোকমোর্চা ও ওয়েভ ফাউন্ডেনের সংলাপ অনুষ্ঠানে বক্তারা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় বিদ্যমান স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের মালোপাড়াস্থ ওয়েভ ফাউন্ডেশনের ট্রেনিং সেন্টারে কোভিড-১৯’র বিরুদ্ধে সুরক্ষা ও জনচাহিদা ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের আওতায় এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপটির আয়োজন করে সামাজিক সংগঠন লোকমোর্চা ও ওয়েভ ফাউন্ডেশন।
সংলাপে চুয়াডাঙ্গা জেলা লোকমোর্চার সভাপতি ও জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট বেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. এএইচএম মারুফ হাসান, দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলী মুনছুর বাবু, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. এএসএম ফাতেহ্ আকরাম, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি দৈনিক মাথাভাঙ্গার সম্পাদক সরদার আল আমিন, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটের নবনির্বাচিত সভাপতি নাজমুল হক স্বপন, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপ-নির্বাহী পরিচালক আনোয়ার হোসেন, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা লোকমোর্চার সভাপতি অ্যাডভোকেট মানিক আকবর, জীবননগর উপজেলা লোকমোর্চার সভাপতি উথলী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক জীবননগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ অমল, দামুড়হুদা উপজেলা লোকমোর্চার সভাপতি হযরত আলী, আলমডাঙ্গা উপজেলা লোকমোর্চার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শাহ আলম মন্টু প্রমুখ। সংলাপে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের সমন্বয়কারী কামরুজ্জামান যুদ্ধ। সংলাপপত্র পাঠ করেন আলমডাঙ্গা উপজেলা লোকমোর্চার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম জয়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবার বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন সাংবাদিক আহাদ আলী মোল্লা, সদর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেফালী খাতুনসহ সেলিনা খাতুন, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপ-সমন্বয়কারী কামরুজ্জামান যুদ্ধ, মাশরাফি মর্তুজা প্রমুখ।
জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। শুরুতেই লোকমোর্চার সদ্য প্রয়াত ব্যক্তিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সরদার আল আমিন বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধি করতে হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আরও বেশি দায়িত্বশীল ও আন্তরিক হতে হবে। চেষ্টা করলেই সমস্যার সমাধান করা যায়। তবু বেশির ভাগ কাজের ক্ষেত্রের দুই হাতের মাঝখানে আরেকটি হাতে এসে কাজে বিঘœ ঘটায়। সেই হাতটির নাম ওজুহাত। এই ওজুহাত যাতে দুই হাতের মাঝে না আসে, সেটা মনে রেখে আমাদেও কাজ করতে হবে। তাহলেই আমরা সফল হবে বলে আশা করি।‘ বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটের সভাপতি নাজমুল হক স্বপন বলেন, ‘সাধ্যের বাইরে যেতে পারবো না। আমাদের দেশের শতকরা ৬০ ভাগ মানুষ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। হাসপাতালে যা আছে, সেগুলোকেই যদি কাজে লাগাতে পারি, তাহলে সকল সমস্যার সমাধান করা যাবে। সব প্রতিষ্ঠানেই কর্মকর্তা থাকেন। কিন্তু কখনো কখনো কাজের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের থেকেও বড় হয়ে ওঠেন ব্যক্তি। সিভিল সার্জন জেলার সমস্ত স্বাস্থ্যক্ষেত্রের দায়িত্বে আছেন। তিনি চাইলেই অনেক কাজ করতে পারেন। তিনি বদলে গেলে কাল থেকেই স্বাস্থ্যসেবার মান আরও উন্নত হবে বলে মনে করি।‘
সংলাপে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপনির্বাহী পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিল্ডিং কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। প্রতিষ্ঠান হলো ব্যবস্থাপনা। হাসপাতালের প্রতিবন্ধকতা থাকতে পারে, তবে ব্যবস্থাপনা ঠিক থাকলে সমস্যার সমাধান করা যাবে।‘
চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. এএইচএম মারুফ হাসান বলেন, ‘আমরা স্বাস্থসেবার মানোন্নয়নের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত হয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদও হাসপাতাল। কিন্তু এখানে আড়াইশ‘ শয্যার কার্যক্রম চলছে। তবে সেই ৫০ শয্যার লোকবল নিয়ে আমরা ২৫০ শয্যার হাসপাতাল চালাচ্ছি। আমরা আমাদেও সাধ্য মতো সবোর্চ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। লোকবল সঙ্কটের কারণে কিছু সমস্যা থাকতেই পারে। আমরা আন্তরিকভাবে সেগুলোর সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। জেলার অন্যান্য উপজেলায়ও স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধি হয়েছে এবং আর উন্নতির চেষ্টা চলছে। এ জন্য আমরা চুয়াডাঙ্গার মানুষের সার্বিক সহযোগিতা আশা করি।‘ সংলাপে লোকমোর্চা ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলার স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধির জন্য জরিপের মাধ্যমে পাওয়া বিভিন্ন প্রস্তাব উন্থাপন করা হয়। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা লোকমোর্চার সহ-সভাপতি তানজিলা মিনি, সদর উপজেলা লোকমোর্চার সহ-সভাপতি শোহিনা খাতুন, সহ-সভাপতি নাসির আহাদ জোয়ার্দ্দার, যুগ্ম সম্পাদক ইসলাম রকিব, সহ-সাংগাঠনিক সম্পাদক মেহেরাব্বিন সানভি, সুমিতা দে ও সাংবাদিক জামান আখতার। অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন জেলা লোকমোর্চার সদস্য সচিব কানিজ সুলতানা। আর অনুষ্ঠানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রাণবন্ত উপস্থাপন করেন জেলা লোকমোর্চার সাধারণ সম্পাদক প্রথম আলো প্রতিনিধি শাহ আলম সনি।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More