চুয়াডাঙ্গার কুতুবপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অভিভাবককে পেটালেন শিক্ষকরা
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কুতুবপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীর অভিভাবককে পিটিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে কুতুবপুরে গেলে ঘটনার সত্যতা মেলে। ভুক্তভোগী অভিভাবক মো. হাসিবুল ইসলাম (৪০), পিতা. মৃত আওলাদ হোসেন, জানান, আমি গত সোমবার আমার মেয়ে ডলি খাতুনকে নিয়ে স্কুলে যায়। আমার মেয়ে ডলিকে ৭ম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য। যেহেতু করোনাকালীন সময়ে স্কুল বন্ধ ছিলো। তখন আমার মেয়ে ডলি খাতুন ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিলো। করোনার সময় অটোপাশ দেবার কারণে সে এবার ৭ম শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার কথা। আমি আমার মেয়েকে সাথে করে স্কুলের অফিসে ঢুকার সাথে সাথে জহিরুল মাস্টার বলেন, এই তোর মেয়েকে স্কুলে কেন নিয়ে এসেছিস? তোর মেয়েকে ঘরে রাখবি, স্কুলে কেন নিয়ে এসেছিস। তখন আমি মাস্টারের কথার প্রেক্ষিতে, তাদেরকে বলি আমার মেয়েকে ভর্তি করানোর জন্য নিয়ে এসেছি। সে সময় রায়হান মাস্টার এবং দিলীপ মাস্টার বলেন ঠিক আছে, তোর মেয়ের ভর্তির জন্য ৩ হাজার টাকা লাগবে। তখন আমি তাদেরকে ২ হাজার দুইশত টাকা দিতে রাজি হয়। কিন্তু তারা তাতে রাজি না হয়ে, আমাকে স্কুল থেকে বের করে দিতে গেলে, আমি প্রতিবাদ জানায়। এক পর্যায়ে কথা-কাটাকাটি শুরু হলে, স্কুলের দপ্তরি মো. হাসেম এসে আমাকে জাপটে ধরেন এবং রায়হান মাস্টার, জহিরুল মাস্টার, দিলীপ মাস্টারসহ অন্যান্য শিক্ষকরা আমাকে কিলঘুষি মারতে থাকেন। সাথে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. খায়রুল বাশার ও আমাকে মাইর ধর করে, স্কুল থেকে বের করে দেন। স্থানীয় জনগণ স্কুলের অফিস থেকে উদ্ধার করে আমাকে বাসায় পাঠিয়ে দেয়, আমি বাসায় পৌঁছুতে না পৌঁছুতেই কুতুবপুর পুলিশ ক্যাম্পের আইসি বশির আমার বাসায় এসে আমাকে স্কুলে ধরে নিয়ে যায় এবং কোন অভিযোগ আছে কি না, আমি তার কাছে জানতে চাইলে, তিনি আমাকে লাল দালান (জেলখানা) এর ভয় দেখায় এবং আইসি বশির আমাকে আমার বাড়ি থেকে কোন অভিযোগ ছাড়াই জোরপূর্বক উঠিয়ে স্কুলের অফিসে নিয়ে যেয়ে একটি কাগজে সই করিয়ে নেন। আমি সই করতে রাজি না হলে, আমাকে চালান করে দেবে বলেও হুমকি দেন। এখন বর্তমানে আমি চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছি। এবিষয়ে কুতুবপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে জানতে চাইলে, তারা এই অভিযোগকে মিথ্যা বলে দাবি করেন। কুতুবপুর পুলিশ ক্যাম্পে গেলে, সেখানে দ্বায়িত্বরত আইসি প্রদিপ সরকার জানান, আমি এ বিষয়ে তেমন কিছু জানি না, তবে শুনেছি স্কুলে একটি মারামারির ঘটনা ঘঠেছে। এবং সেই মারামারি বিষয়টি আমাদের আরেক আইসি বশির, সে বিষয়টি জানেন। কারন ঐ ঘটনায় আমি ছিলাম না, আইসি বশির ছিলেন। আইসি বশির আছেন কি না জানতে চাইলে, তিনি বলেন, উনি বর্তমানে ক্যাম্পে নেই। খুলনাতে গেছেন পরীক্ষা দিতে। আইসি বশীরকে ফোন করলে, তিনি বলেন এবিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে শোনেন। তাহলে সমস্ত তথ্য আপনি পাবেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম ভূয়ইা জানান, আমি এ বিষয়টি জানতাম না, তবে ভুক্তভোগী অভিভাবক আমার সাথে দেখা করুক, আমি এ বিষয়টি শুনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো এবং ডলি নামের ওই মেয়েটির পড়ালেখার ব্যবস্থা আমি করবো।