স্টাফ রিপোর্টার: মধ্য নভেম্বরে এসএসসি পরীক্ষা এবং ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া হবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসায় দেড় বছর পরে খুলে দেয়া হয়েছে স্কুল-কলেজ। প্রস্তুতি চলছে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার। নেয়া হচ্ছে মেডিকেল, ডেন্টাল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, ‘মধ্য নভেম্বরে এসএসসি পরীক্ষা এবং ডিসেম্বরের গোড়ার দিকে এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া হবে। প্রাক প্রাথমিকের শিশুদের এই মুহূর্তে আনতে চাচ্ছি না। তারা এখন বাড়িতে থাকুক। তিন সপ্তাহ পার হোক তারপর আবার সিদ্ধান্ত নেব, কী করা যায়।’ দেশে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় গত বছরের মার্চে বন্ধ হয়ে যায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরপর মাঝে মাঝে সংক্রমণ কমলেও নতুন করে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে পারেনি সরকার। ফলে অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষার মাধ্যমে চলছিল পাঠদান। করোনা সংক্রমণ ঠেকিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া হচ্ছে। চলতি মাসে সংক্রমণ কমে আসায় স্কুল-কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। গত ১২ সেপ্টেম্বর খুলে দেয়া হয় স্কুল-কলেজ। স্বাস্থ্যবিধি মানায় জোর দিয়ে শুরু হয়েছে ক্লাস। প্রস্তুতি চলছে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার। আবাসিক হলগুলোয় চলছে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম। এর মধ্যেই নেয়া হয়েছে মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা। আগামী মাসের শুরুতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সূচি ঘোষণা করা হয়েছে। বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের খবর সোশাল মিডিয়ায় দেখলেও শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, এসব খবরের সত্যতা পাওয়া যায়নি। গতকাল রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এ কথা বলেন তিনি। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘সোশাল মিডিয়ায় আমি দেখছি, প্রায়ই আমাকে লিখে পাঠাচ্ছে যে এই স্কুলে এতজন শিক্ষার্থী করোনা আক্রান্ত, ওই স্কুলে এতজন আক্রান্ত। আমরা প্রতিটি জায়গায় সঙ্গে সঙ্গেই অনুসন্ধান করছি। তবে আশার বিষয় হচ্ছে যে শিক্ষার্থীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখছে এখানে আক্রান্ত ওখানে আক্রান্ত, আমরা এখন পর্যন্ত কোথাও সত্যতা কিন্তু পাইনি।’ শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের এখন পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেগুলো প্রাথমিক বিদ্যালয়, সেখানে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংক্রমণের কথা শোনা যাচ্ছে। সেগুলো প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের, তারা সেগুলোর ব্যাপারে দেখছেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন।’ মানিকগঞ্জে মাধ্যমিক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থী শুধু ১৫ সেপ্টেম্বর একবার স্কুলে এসেছিল, এর প্রায় ৭ দিন পর তার করোনা শনাক্তের খবর পাওয়া যায় এবং সে মৃত্যুবরণ করে। আমরা সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তিনি বলেছেন, ও একদিনই স্কুলে এসেছিল। তখন তার কোনো ধরনের উপসর্গ ছিল না। যে কারণে সেখানে সবার আর পরীক্ষা করবার প্রয়োজন নেই।’ তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ক্ষেত্রে অভিযোগ আসা মাত্রই বা কোনো তথ্য পাওয়া মাত্র আমরা স্থানীয় প্রশাসন, সিভিল সার্জনের অফিস, সবার সঙ্গে যোগাযোগ করার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। পরিস্থিতি ফের নাজুক হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে সময় নেবেন না বলে দীপু মনি জানান। আগেই বলেছি, কোথাও যদি মনে করি সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি প্রয়োজন হয় বন্ধ করে দেব। কোনো দ্বিধা করব না। এখন পর্যন্ত কোথাও সে রকম পরিস্থিতি তেমনভাবে হয়নি। তবে যদি কোথাও হয়, নিশ্চয়ই আমরা ব্যবস্থা নেব।’ শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘যদিও শনাক্ত হার শতকরা ৫ এর নিচে নেমে এসেছে, তারপরও কিন্তু মহামারী চলমান সারা বিশ্বেই। কাজেই আমাদের তীক্ষè নজর রাখতে হবে। কেউ না কেউ অসুস্থ হতেই পারে, বাড়িতেও অসুস্থ হতে পারে, যাতায়াতের পথে অসুস্থ হতে পারে। এমনকি তাদের দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও সংক্রমণ ঘটতে পারে, সেটি যেন না ঘটে।’