চুয়াডাঙ্গার খাদ্যনিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের ঘটনা ধামাচাপা দিতে তড়িঘড়ি করে নিরাপত্তা প্রহরীকে বদলি
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার খাদ্যনিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে নানা অনিয়ম জেঁকে বসেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অসৎ উদ্দেশ্যে এবং বিশেষ যোগসাজশে মিলমালিকদের নিকট থেকে জীবননগর খাদ্যগুদামে নি¤œমানের চাল সংগ্রহ করা হয়েছে মর্মে তদন্ত কমিটির নিকট বিষয়টি প্রতিয়মান হয়েছে। অপরদিকে ২৭ বস্তা ওএমএস’র চাল উদ্ধারের ঘটনা ধামাচাপা দিতে কেন্দ্রর দায়িত্বপ্রাপ্ত নিরাপত্তা প্রহরীকে তড়িঘড়ি করে আলমডাঙ্গায় বদলি করা হয়েছে। এতসবের পেছনে কার হাত রয়েছে তা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন জেগেছে। বিষয়গুলো তদন্তপূর্বক দোষিদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল।
জানাগেছে, সরকার দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বছরের বিভিন্ন সময় অর্থের বিনিময়ে ধান চাল সংগ্রহ করে থাকে। আর এসব খাদ্য সামগ্রী নিরাপদে রাখার জন্য জেলা উপজেলা পর্যায়ে খাদ্যগুদামজাত করে। সববিষয়গুলো তদারকি করে থাকেন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। কার কি দায়িত্ব তা নির্ধারণ করা আছে। সম্প্রতি ঈদুল আযহার আগে বেগমপুর ইউনিয়নে নি¤œমানের চাল সরবরাহ ও ১৯ আগস্ট তালতলা গ্রাম থেকে ২৭ বস্তা ওএমএস’র চাল উদ্ধার করা নিয়ে নানা প্রশ্নর জন্ম দেয় সচেতন মহলে। সেই সাথে সরকারি চাল নিয়ে পরপর দু’টি ঘটনায় জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের দিকে অঙ্গুলী প্রদর্শন করেন অনেকেই। বেগমপুর ইউনিয়ন পরিষদে নি¤œমানের চাল সরবরাহ নিয়ে গঠিত ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত প্রতিবেদন যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিটক পেশ করেছেন। তদন্ত কমিটির নিকট প্রতিয়মান হয় যে, জীবননগর খাদ্যগুদামের ওসিএলএসডি কাওসার আহম্মেদ চাল সরবরাহকারি প্রতিষ্ঠনের নিকট থেকে অসৎ উদ্দেশ্যে এবং বিশেষ যোগসাযশে ওই চাল জীবননগর খাদ্যগুদামে মজুদ করেন। সেখান থেকে ৫শ মে.টন চাল সদর খাদ্যগুদামে প্রেরণ করেন। যেখানে প্রথম দিন নিন্মমানের চাল আসায় সদর ওসিএলএসডি গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করেন। দীর্ঘসময় চাল বোঝাই ট্রাক গুদামের আঙ্গিনায় অপেক্ষা করায় কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক আনিছুর রহমান গুদামে যান এবং পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা রেজাউল ইসলামকে অবহিত করেন। রেজাউল ইসলাম ওই চাল গ্রহণ করার জন্য সদর ওসিএলএসডিকে মৌখিক নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে ওই চাল বেগমপুর ইউনিয়নে সরবরাহ করা হয়। অপর দিকে ১৯ আগস্ট তালতলা গ্রাম থেকে উদ্ধারকৃত ওএমএস’র ২৭ বস্তা চাল বিতরণ করা হয়েছে মর্মে দায়িত্ব প্রাপ্ত কথিত ট্যাগ অফিসার বা পর্যেবক্ষনকারী কর্মকর্তা নিরাপত্তা প্রহরী আজিজুর রহমান স্বাক্ষর করেছেন। যেখানে চাল বিতরণ করা হয়েছে বলে দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যাক্তি স্বাক্ষর দিলেন তাহলে ওই চাল আসলো কোথা থেকে। না কি অসৎ উদ্দেশ্যে ডিলার কর্মকর্তাকে মেনেজ করে ওই চাল আত্মসাৎ করেছেন। সূত্র জানিয়েছে, ডিলার আজাদ আলী ৬নং ওয়ার্ডে চাল বিতরণের জন্য ৩৬ বস্তা চাল বরাদ্ধ পায় ২৮ টাকা কেজি দরে। এর মধ্যে কিছু চাল বিতরণ করলেও ২৭ বস্তা চাল দায়িত্বরত ব্যাক্তিকে ম্যানেজ করে আত্মসাৎ করেছে। কারণ ওই চাল বাজারে ৪৮ টাকা কেজি দরে অনায়াসে বিক্রি করতে পারতেন তিনি। তাহলে কেজি প্রতি ২০ টাকা লাভ হতো। আর লাভের টাকা পরে নেপথ্যে থাকা কর্তাবাবুর সাথে ভাগবাটয়ারা হতো। অধিক তদন্তে ২৭ বস্তা চাল উদ্ধারে বিষয়টি নিয়ে গোমর ফাঁস হতে পারে এ আশঙ্কায় তড়িঘড়ি করে নিরাপত্তা প্রহরী আজিজুর রহমানকে গত ১৮ আগষ্ট আলমডাঙ্গা খাদ্যগুদামে বদলি করে দেয়া হয়েছে। চাল নিয়ে কারসাজির দু’টি ঘটনা সঠিকভাবে তদন্ত করে দোষিদের মুখোশ উন্মচনের দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল। সেই সাথে জনমনে প্রশ্ন জেগেছে এত কিছুর পেছনে কার হাত রয়েছে? এ ব্যাপারে জীবননগর ওসিএলএসডি কাওছার আহম্মেদ তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অশিকার করে বলেন, বসকিছু কাগজ কলমে মোকাবেলা করা হবে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম বলেন, একটি জরুরী মিটিংএ আছি কিছুক্ষণ পর আমি ফোন ব্যাক করছি।