স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় স্বামীর নির্যাতনে স্ত্রী নাজমা খাতুন মারা গেছেন। চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাজরাহাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নাজমা খাতুন (৩২) ওই গ্রামের শিপন আলীর স্ত্রী। স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে মঙ্গলবার মধ্যরাতে তিনি মারা যান। বুধবার দুপুরে অভিযুক্ত স্বামী শিপন আলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নাজমার শ্বশুর পক্ষ ঘটনাটি ধামাচাঁপা দেয়ার চেষ্টা করলেও পুলিশের জেরার মুখে নির্যাতনের কথা স্বীকার করে তারা। এ ঘটনায় দুপুরে নিহতের ভাই বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
প্রতিবেশীরা জানায়, ১৯ বছর আগে শিপন আলীর সাথে বিয়ে হয় নাজমা খাতুনের। বিয়ের পর থেকেই খুটিনাটি বিষয় নিয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের উস্কানিতে শিপন আলী তার স্ত্রী নাজমাকে নির্যাতন করে আসছিলেন। গত ২৩ জুলাই নাজমাকে বেধড়ক মারপিট করেন শিপন। নাজমা খাতুন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে গ্রাম্য ডাক্তারের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। তার অবস্থার অবনতি হলে গতপরশু মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে নাজমা খাতুনকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরে রাত আড়াইটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এদিকে নাজমা খাতুনের স্বামীর বাড়ির লোকজন বিষয়টি গোপন রেখে মরদেহ বাড়িতে নেয়ার চেষ্টা করে। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত নাজমা খাতুনের শরীরে মারধরের আলামত দেখতে পেয়ে পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশের জেরার মুখে নাজমা খাতুনকে মারধরের কথা স্বীকার করে তারা।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার রাত ১০ টার দিকে উঠান থেকে পড়ে গিয়েছে বলে নাজমা খাতুনকে ভর্তি করে তার স্বামী শিপন আলী। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ দেখতে পেয়ে সন্দেহ হলে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। পরে রাত আড়াইটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি আবু জিহাদ খান বলেন, স্বামী শিপন আলীর নির্যাতনে স্ত্রী নাজমা খাতুনের মৃত্যু হয়েছে। প্রথমে তারা বিষয়টি অস্বীকার করলেও পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মারধরের কথা স্বীকার করে নাজমার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। মরদেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় সকালেই অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত শিপন আলীকে আটক করা হয়। নিহতের ভাই রমজান আলী বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ