নামে করোনা ওয়ার্ড থাকলেও কাজে নেই : গাংনী হাসপাতাল চত্বরেই মারা গেলেন কৃষক

গাংনী প্রতিনিধি: গেলো কয়েক দিন ধরে সর্দি, কাশি ও সামান্য জ¦রে ভুগছিলেন কৃষক মনিরুদ্দীন (৭০)। খুব বেশি শারীরিক সমস্যা ছিলো না তাই গ্রাম্য চিকিৎসকের কাছ থেকে ওষুধ সেবন করছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। বাড়ি থেকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু চিকিৎসা শুরুর আগেই তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে। মনিরুদ্দীন গাংনী উজেলার মহেশপুর গ্রামের মৃত ময়েজ উদ্দীনের ছেলে। শ^াসকষ্ট থাকলেও গাংনী হাসপাতালে অক্সিজেন না দিয়ে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে রেফার করায় বিষয়ে সমালোচনায় পড়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কৃষক মনিরুদ্দীন অসুস্থবোধ করছিলেন কয়েকদিন থেকে। মঙ্গলবার সকালে তিনি গ্রামের মাঠে ছাগল চরাতে গিয়েছিলেন। বাড়ি ফেরার সময় তার শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। এসময় তাকে নিয়ে ভ্যানযোগে গাংনী হাসপাতালের দিকে রওনা দেন পরিবারের লোকজন। হাসপাতাল চত্বরে তাকে দেখে চিকিৎসকরা মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তির পরামর্শ দেন। তবে পরিবারের লোকজন প্রেসক্রিপশন নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
এদিকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নেয়ার পথে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আবার হাসপাতালের উদ্দেশ্যে ফিরিয়ে নেয়া হয়। প্রচ- শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এক পর্যায়ে হাসপাতাল চত্বরে পাখিভ্যানের ওপরেই তার মৃত্যু হয়।
মনিরুদ্দীনের পরিবারের লোকজন জানান, করোনা হয়েছে এমন জানিয়ে চিকিৎসকরা বলেন, মঙ্গলবার পরীক্ষা হবে না। কালকে (আজ বুধবার) সকালে পরীক্ষা করানো হবে। তার আগে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন চিকিৎসক। তবে আর্থিক কারণে তাকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে পরিবারের লোকজন সরে আসে।
এ প্রসঙ্গে গাংনী হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. বিডি দাস বলেন, মনিরুদ্দীনের করোনা উপসর্গ ছিলো। শ্বাসকষ্টসহ শারীরিক অবস্থা এতোটাই খারাপ ছিলো যে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা ছাড়া কোনো উপায় ছিলো না।
এদিকে করোনা উপসর্গ নিয়ে মনিরুদ্দীনের মৃত্যু হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন-কাফন ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের করোনা পরীক্ষার বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। ফলে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় তার দাফন হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০ বেডের করোনা ইউনিট রয়েছে। সেখানে ভর্তি করে তাকে অক্সিজেন সেবা দেয়ার আশা করেছিলেন পরিবারের লোকজন। গরিব পরিবারের পক্ষে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির খরচ জোগানো সম্ভব নয় বিধায় তারা মেহেরপুর যেতে চাননি। ফলে গাংনী হাসাতালে তাকে চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা করা হলে ভালো হতো।
এ প্রসঙ্গে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাশেদ হাসান শাওন বলেন, আমাদের এখানে কোভিড ওয়ার্ড থাকলেও মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে আরও ভালো চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। তবে যৌক্তিক কারণ ছাড়া রোগীকে রেফার করা হয়নি।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More