মাজেদুল হক মানিক: মেহেরপুর জেলার বিপুল সংখ্য মানুষের শরীরে করোনা উপসর্গ দেখা দিয়েছে। সর্দি, কাশি, জ¦র ও গলা ব্যাথাসহ নানা অসুখে ভুগছেন মানুষ। তাই করোনা পরীক্ষার চাপ পড়েছে হাসপাতালগুলোতে। অব্যহত রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। অপরদিকে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করেও মিলছে না কাঙ্খিত নমুনা পরীক্ষা। নমুনা দিতে এসে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় করোনা সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নমুনা পরীক্ষা চলছে। প্রতিদিনই শত শত মানুষ ভিড় করছেন নমুনা প্রদানের লক্ষ্যে। বিশেষ করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল ও গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভিড় বেশি। গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নমুনা দিতে আসা মানুষের তালিকা প্রস্তুত ও ডাটা এন্ট্রি করছেন স্যানেটারি ইন্সপেক্টর মশিউর রহমান। তিনি একটি কক্ষে বসে কাজটি করছেন তবে তার সামনে গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন কয়েকশ মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে কি-না? এমন প্রশ্নের উত্তরে মশিউর রহমান বলেন, আমি নিজেই কখন আক্রান্ত হবো সেই আতঙ্কে আছি। মানুষ তো কথা শোনে না। গায়ের ওপরে চলে আসে। নমুনা পরীক্ষার সংখ্যার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রতিদিন ৬০-৭০টি নমুনা নেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেকই পজিটিভ হচ্ছেন। নমুনা দিতে আসা গাংনী থিয়েটার সদস্য ইমরান হাবীব ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তিন দিন ধরে ঘুরেও নমুনা দিতে পারিনি। নমুনা পরীক্ষায় জনবল কম থাকায় এই ভোগান্তির সাথে সাথে সংক্রমণও বেড়ে যাচ্ছে। তেরাইল জোড়পুকুরিয়া ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক আরিফুল ইসলাম নমুনা দিতে এসে সাংবাদিকদের জানান, শুক্রবার থেকে ঘুরে ঘুরে শনিবার সকাল ৮টার দিকে এসে অপেক্ষা করেছি দুই ঘন্টা। এই দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো সুযোগ নেই। কয়েকশ মানুষ একসাথে নমুনা দেয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। হাসপাতালে মানুষের বসার জায়গা তো দূরে থাক দাঁড়ানোর জায়গাও থাকছে না।
জানা গেছে, গেলো সপ্তাহ থেকে গাংনী হাসপাতালে আউটডোরে ৩০০-৪০০ রোগী সেবা নিতে আসছেন। এদের বেশিরভাগের করোনা উপসর্গ রয়েছে। রোগীদের অব্যাহত এই চাপ সামলাতে বেগ পেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষের। হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক নেই। তাই যারা কর্মরত আছেন তাদের পক্ষে এতো পরিমাণ রোগীর সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বলেন, হাসপাতাল এলাকার মধ্যে আলাদা জায়গায় নমুনা নেয়ার ব্যবস্থার বিষয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, শনিবার রাত ৮টা পূর্ববর্তী ২৪ ঘন্টায় জেলায় ৯৭টি নমুনা পরীক্ষায় ৪৮ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়। এসময় মৃত্যুবরণ করেছেন দুইজন। জেলায় বর্তমানে পজিটিভ রোগীর সংখ্যা ৫৬৩ জন। যা গেলো দুই সপ্তাহে শনাক্ত হয়েছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
দামুড়হুদার ঠাকুরপুরে জমি সংক্রান্তের জেরে মারামারিতে ৪জন আহত
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ