চুয়াডাঙ্গায় লকডাউনের আজ দ্বিতীয় দিন : বিপনী বিতান বন্ধ হলেও চলছে কোচিং

সকলের সুরক্ষার্থে লকডাউন চলাকালে সকলকে ঘরে থাকার পুনঃ পুনঃ তাগিদ
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা ও সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নে কঠোর লকডাউনের আজ সোমবার দ্বিতীয় দিন। গতকাল রোববার ছিলো প্রথম দিন। এদিনে কিছু ব্যাক্তিকে স্বাস্থ্য বিধি না মেনে প্রকাশে চলাচল করতে দেখা গেলেও অধিকাংশ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিলো। রাস্তায় পাড়ায় মহল্লাতেও লকসমাগম ছিলো কম। অপরদিকে দামুড়হুদা উপজেলায় ১৪ দিনের লকডাউনের আজ ৭ম দিন। দর্শনাসহ দামুড়হুদায় প্রশাসনের বাড়তি তৎপরতায় যেমন পূর্ণ লকডাউন পালন হচ্ছে, তেমনই ভারতসীমান্তবর্তি এ উপজেলায় সংক্রমণের হারও হ্রাস পেয়েছে। এদিকে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা এলাকায় লকডাউনের মধ্যেও কোচিং চলছে।
চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা ও আলুকদিয়া ইউনিয়নে রোববার সকাল ৬ টা থেকে শুরু হওয়া লকডাউন চলবে আগামী ২৬ জুন রাত ১২ টা পর্যন্ত। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় চুয়াডাঙ্গা করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটি শনিবার বিকেলে জরুরি সভায় লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়। কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার ওই দিন বিকেলেই লকডাউনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। বেশকিছু বিধি নিষেধ দিয়ে রাতে এ বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। তবে, জরুরী পরিষেবা ওষুধ ও চিকিৎসাসেবা, কৃষিপণ্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য সরঞ্জাম সংগ্রহ ও পরিবহন এবং সীমিত পরিসরে ব্যাংকিং সেবা লকডাউনের বিধি নিষেধের আওতাবহির্ভূত রাখা হয়। এছাড়া কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করার কথা বলা হয়। লকডাউন দেয়া হয়েছে মূলত সমাজের স্বার্থে। সমাজের কলকে নিজ নিজ দায়িত্বেই স্বাস্থ্য বিধি মেনে ঘরে থাকলে সংক্রমণ রোধ সহজ হবে। ফলে সকলের সুরক্ষার্থে লকডাউন চলাকালে সকলেই ঘরে থাকুন। এদিকে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সিনেমাহলপাড়ার ১২ জন শিক্ষক দেদারছে তাদের কাচিং বাণিজ্য যেমন চালাচ্ছেন, তেমনই গুলশানপাড়ার ৪ জন শিক্ষকের নিজ বাড়িতে চলছে কোচিং। কোটপাড়ার ৩ জন, মুক্তিপাড়ার ২ জন, কলেজপাড়ার ৪ জন, আরামপাড়ার ২ জন, কেদারগঞ্জপাড়ার ৩ জন শিক্ষক প্রাইভেট টিউশোনি চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সকলকে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক। তিনি বলেন, জনসাধারণকে সচেতনতার পাশাপাশি লকডাউনকৃত এলাকায় কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন। স্বাস্থবিধি অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। লকডাউনকৃত এলাকা ঘুরে কিছু মানুষের মধ্যে গা ছাড়া ভাব দেখা যায়। তবে কোথাও হুড়োহুড়ি ভিড় লক্ষ্য করা যায়নি। হাতে গোনা কিছু অটো চলেছে শহরে। জেলার প্রবেশমুখে বাঁশের প্রতিবন্ধকতা চোখে পড়ে। এসব প্রতিবন্ধকতার পাশে কোথাও কোথাও পুলিশ সদস্য এবং স্বেচ্ছাসেবকদের দেখা যায়। তারপরও প্রতিবন্ধকতা তুলে লোকজন স্বাভাবিকভাবেই চলাচল করতে থাকে। তবে শপিং মল ও দোকানপাঠ বন্ধ থাকতে দেখা যায়। কিছু দোকানিকে দোকানের পাশে ঘোরাঘুরিও করতে দেখা গেছে। তবে বেশিরভাগ দোকানিই ছিলেন বাড়িতে। সকাল থেকেই দূরপাল্লার চলাচল করেছে। শুধুমাত্র টার্মিনালে যাত্রী ওঠানো নামানোর নির্দেশনা থাকলেও তা তেমন মানা হয়নি। রাস্তায় বের হওয়া সকল মানুষের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। লকডাউনের মধ্যেও জীবিকার তাগিদে বাইরে বের হয়েছেন রিক্সা চালক হামিদুর রহমান। তিনি বলেন, “ লগডাউন হয়িচে আমি জানি। কিন্তু আমার সংসারে অনেক খরচ। কাজের জন্যি না বেরুলি খাব কি? সরকার থেকি যে সাহায্যু দেয় তাতে কিচুই হয় না।” খাদ্য সংকট হলে চুয়াডাঙ্গার কোন নম্বরে ফোন করতে হবে তাও জানেন না এধরণের রিকশা চালক থেকে শুরু করে অটোচালকদের কেউ।
করোনার সংক্রমণ বাড়ায় এরআগে গত ১৫ জুন থেকে ১৪ দিনের জন্য লকডাউন করা হয় জেলার সীমান্তবর্তী দামুড়হুদা উপজেলা। ১৮ জুন থেকে ৭ দিনের বিশেষ বিধি নিষেধ জারি করা হয় জীবননগর উপজেলায়।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More