অসুস্থ সেচ্ছাসেবককে ডেকে নিয়ে ওয়ার্ডের মধ্যেই পেটালেন স্বজনরা
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ তুলে এক সেচ্ছাসেবককে ওয়ার্ডের ভেতরেই বেধড়ক মারপিট করেছে রোগীর স্বজনরা। এর পরপরই অভিযুক্তরা দ্রুত সদর হাসপাতাল ত্যাগ করে। এ ঘটনার পর পুরো সদর হাসপাতাল জুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দেন। ওই সেচ্ছাসেবকের নাম সজিব। সে সদর হাসপাতালের পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে কর্মরত। কয়েকদিন যাবৎ জ্বরে আক্রান্ত। দুপুরে সে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে না গিয়ে; তার ডিউটি বিকেলে হওয়ায় হাসপাতালে ছিলেন।
এদিকে রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসা শেষে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে পাঠায় কর্তব্যরত চিকিৎসক। সেখানে যাওয়ার পর কোন নার্স বা সেচ্ছাসেবক ছিলো না। প্রায় ২০ মিনিট অতিবাহিত হলেও নার্স না আসায় পাশের পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে গিয়ে সেচ্ছাসেবক সজিবকে ডাকলে তিনিও আসেননি। তারা আরও বলেন, আমাদের রোগী অসুস্থতায় ছটফট করছিলো। এ সময় ওয়ার্ডে কোন নার্স ও সেবিকা না থাকায় রাগান্তিত হয়ে সেচ্ছাসেবকের সাথে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।
সদর হাসপাতালসূত্রে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার কলোনিপাড়ার মৃত কুবাদ আলীর স্ত্রী হার্টের সমস্যা নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুবি বিভাগে ভর্তি নিয়ে আসে। পরে চিকিৎসা শেষে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে নিয়ে ভর্তির পরামর্শ দেন চিকিৎসক। সেখানে গিয়ে কোন নার্স বা কাউকে না পেয়ে ওই রোগীর ছেলে নাজমুল পাশের পুরুষ ওয়ার্ডের সেচ্ছাসেবক সজিবকে ডাকলে সে আসতে পারবে না বলে জানায়। পরে নাজমুল ও এক সহযোগী ওয়ার্ডের মধ্যেই সজিবকে চড় ঘুষি ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে দিয়ে জখম করে। মুহূর্তেই পুরো হাসপাতালজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। খবর পেয়ে খবর পেয়ে সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ফাতেহ আকরাম ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে সুযোগ বুঝে অভিযুক্ত নাজমুল ও তার সহযোগী পালিয়ে যায়। সেচ্ছাসেবক সজিব বলেন, আমি কয়েকদিন যাবত জ্বরে আক্রান্ত। আমার ডিউটি বিকেলে তাই দুপুরে চিকিৎসা নেয়ার পর হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে ছিলাম। এ সময় দুজন লোক এসে আমাকে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে যেতে বলে। আমি অসুস্থতার কথা জানালে তারা আমাকে বেধম মারপিট করে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. ফাতেহ আকরাম বলেন, ঘটনাটি অত্যান্ত দুঃখজনক। বিষয়টি শোনার পরই রোগীর নিকট থাকা স্বজনদের মাধ্যেমে অভিযুক্তদেরকে ডাকা হয়। পরে তারা হাজির হলে বিষয়টি সমাধান করা হয় এবং তারা এঘটনায় জন্য অনুতপ্ত হয়েছেন।