মুজিবনগর সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে ৬ জনের বাংলাদেশে প্রবেশ : করোনা সংক্রমণ সন্দেহ নিয়ে নির্বেঘেœ পগার পার
গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যেই ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ অব্যহত রয়েছে। কাটাতারের বেড়ার গেট খুলে গতকাল রোববার ভোরে ৬ জনকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করেছে বিএসএফ। ছয়জনের বাড়ি উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়।
এদিকে ৬ জন নির্বিঘেœ সীমান্ত পেরিয়ে বাসে চেপে গাংনী উপজেলার জোড়পুকুরিয়া বাজারে পৌঁছুলে তাদের বাস থেকে নামিয়ে দেয়া হলে পালিয়ে যায়। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা মেহেরপুর জেলায় এ নিয়ে নানা সমালোচনা চলছে।
পুশব্যাকে পালিয়ে যাওয়া ছয়জন হচ্ছেন চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জের নতুন উনিশবিঘার আবু সাইদের ছেলে রুবেল হোসেন (২৫), সাপাহার উপজেলার কলমিডাঙ্গা গ্রামের ইসলাম আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম (৪৫) ও একই গ্রামের ইসলাম ম-লের ছেলে রমজান আলী (২৮), চাপাইনবাবগঞ্জের হাকিমপুরের আব্দুল হান্নানের ছেলে সাফিক (২৬), সুনামগঞ্জের বনগাঁও উপজেলার জামাল উদ্দীনের ছেলে নুরুল আমিন (৩৫) এবং দিনাজপুরের কতোয়ালী থানা সদরের সাইদুর রহমানের ছেলে রাজু (২৭)। ভারতের কাজের জন্য গিয়ে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা খেটে এদেশে প্রবেশ করেন বলে তারা সাংবাদিকদের জানান। তবে তাদের দেয়া নাম ঠিকানা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
প্রবেশকারীদের সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন সময় তারা অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করে পুলিশের হাতে আটক হয়। বিভিন্ন মেয়াদে কারাবরণ শেষে সাম্প্রতিক সময়ে মুক্তি পায়। পরে বিএসএফ তাদেরকে বহরমপুর কারা হেফজাতে রাখে। সুযোগমতো শনিবার রাতে মুজিবনগর সীমান্তের কাটাতাদেরর বেড়ার গেট খুলে তাদেরকে বাংলাদেশ সীমান্তে ঠেলে দেয়। ওই ছয়জন রাতের আধারে মুজিবনগরের কেদারগঞ্জ বাজারে গিয়ে রাজশাহীগামী বাসে ওঠে। বাসের চালক ও সুপারইভারজার বিষয়টি টের পেয়ে গাংনী উপজেলার জোড়পুকুরিয়া বাজারে তাদেরকে বাস থেকে নামিয়ে দেয়। পরে সেখান থেকে তারা গন্তব্যের উদ্দেশ্যে পালিয়ে যায়।
এদিকে, সকালে জোড়পুকুরিয়া বাজারে তারা বাস থেকে নামার পর তাদের দেখতে ভিড় করেন স্থানীয়রা। তাদের কেউ করোনাভাইরাস বহন করছে কি-না তা জানা ছিলো না স্থানীয়দের। সময় গড়ানোর সাথে সাথে উৎসুক মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। তবে উৎসুক মানুষের কারও মুখে ছিলো না মাস্ক। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেই স্থানীয় লোকজন তাদের সাথে মেলামেশা করেন। এক পর্যায়ে তারা কৌশলে সেখান থেকে সটকে পড়ে। মুজিবনগর থেকে নিজ নিজ বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছুনো পর্যন্ত কতো মানুষের সাথে মিশেছেন তা নিয়ে শঙ্কা তৈরী হতেই পারে বলে জানালেন একজন চিকিৎসক।
বিষয়টি জানতে চাইলে ৬ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্ণেল খালেকুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমাদের অজানা। তবে আমরা তার নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে খোঁজ নেবো এবং সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধি করা হবে।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলুর রহমান জানান, তাদেরকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ।
জানা গেছে, কয়েকদিন ধরে মেহেরপুর জেলায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে সংক্রমণের হার বেশি। সীমান্তে ভারতীয় কৃষকদের সাথে মেলামেশার কারণে ভারতীয় ভেরিয়েন্ট এদেশের মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে করোনাভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণের মধ্যে সেখান থেকে আসা ৬ জন পালিয়ে যাওয়ায় মেহেরপুর জেলার মানুষের মাঝে নানা শঙ্কা দেখা দিয়েছে।