স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে দুটি ওয়ার্ডে কয়েকটি সিলিং ফ্যান দীর্ঘদিন নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এতে গরমে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। উপরে সিলিং ফ্যান থাকলেও সাম্প্রতকি সময়ের এই গরমে সেটা কোনো কাজে আসছে না। ত্রুটি থাকায় প্রতিটি ওয়ার্ডে বেশির ভাগই পাখা এতটাই আস্তে চলে যে বাতাস পাওয়া যায় না। রোগীদের কেউ কেউ নিজেদের কেনা ফ্যান এবং হাত পাখার মাধ্যমে গরম নিবারণের চেষ্টা করছেন, এমনটি ঘুরে দেখা গেছে সদর হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডে। দীর্ঘদিন ধরে পর্যায়ক্রমে ফ্যানগুলো নষ্ট হলেও তা মেরামত করা হচ্ছে না। এছাড়াও হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডে একাধিক লাইট ও নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। সুস্থ হতে আসা রোগীরা বরং বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে জানান রোগীরা। শুধু রোগী ও তাঁদের সঙ্গে থাকা স্বজনেরাই নন, কর্তব্যরত চিকিৎসক, সেবিকারাসহ অন্যরাও চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, গণপূর্ত বিভাগকে ইতোমধ্যে চিঠি দেয়া হয়েছে, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে তিনটি, মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ২ টি ও শিশু ওয়ার্ডে ১ টি ফ্যান নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এই ফ্যানগুলোর নিচে থাকা রোগীদের প্রচ- গরমে তাদের কাহিল অবস্থা। এছাড়াও হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডে একাধিক লাইট ও নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। ত্রুটি থাকায় প্রতিটি ওয়ার্ডে বেশির ভাগই পাখা আস্তে ঘোরায় বাতাস পাওয়া যায় খুব কম।
হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও বারান্দায় থাকা রোগীদের দেখা যায়, গরম নিবারণের জন্য তাদের একমাত্র ভরসা নিজের কেনা ছোট টেবিল ফ্যান। এছাড়া দেখা যাচ্ছে, বেশির ভাগ রোগী ও স্বজনেরা হাত পাখার বাতাসে গরম নিবারণ করছেন। হার্টের সমস্যা নিয়ে পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা এক রোগী বলেন, আমি গত তিনদিন যাবত হাসপাতালে ভর্তি। এমনিতেই হার্টের রোগী আমি, ‘ফ্যান নষ্ট থাকায় দিন-রাতের কোনো সময়েই শান্তিতে ঘুমাতে পারি না। মশা, মাছির উপদ্রব তো লেগেই আছে।’ প্রচ- রকমের গরম আরও অসুস্থ হয়ে যাবার উপক্রম। নাম প্রকাশে একাধিক রোগীর ও স্বজনরা বলেন, উপরে ফ্যান আছে ঠিকই কিন্তু ফ্যান ক্রটি হওয়ায় আস্তে ঘোরার কারণে এই ফ্যানের বাতাস গায়ে লাগছে না। তাই ছোট টেবিল ফ্যান কিনে গরম নিবারণের চেষ্টা করছি। এছাড়াও হাসপাতালে ধারণক্ষমতার বেশি রোগী ভর্তি আছেন। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দ্বিগুণ রোগী ও স্বজন থাকার কারণে গরম আরও বেশি লাগছে। এছাড়া এমনিতেই তো প্রচ- গরম। এছাড়াও প্রত্যেক ওয়ার্ডে বাথরুমে দুর্গন্ধ ও অপরিচ্ছন্ন থাকে। শিশু ওয়ার্ডে থাকা এক শিশুর মা বলেন, ফ্যান নষ্ট থাকায় তার শিশু পুত্র গরমে ছটফট করে। রাতে বেশি বিরক্ত করে। সারারাত হাত পাখার বাতাস দিতে গিয়ে আমিও ক্লান্ত হয়ে পড়ি। ওয়ার্ডে কিছু লাইটও নষ্ট। তেলাপোকা ঘুর ঘুর করে। বাথরুমগুলো অপরিচ্ছন্ন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. ফাতেহ আকরাম বলেন, হাসপাতালের পাখা, লাইট রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব গণপূর্ত অধিদফতরের। নষ্ট ফ্যান জরুরি ভিত্তিতে প্রতিস্থাপন অথবা মেরামত করার জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে গণপূর্ত অধিদফতরকে। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।