স্টাফ রিপোর্টার: মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকার গঠনের ঐতিহাসিক স্থানকে স্মরণীয় করে রাখতে মেহেরপুরের মুজিবনগর এলাকাকে ‘দ্বিতীয় রাজধানী’ হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন কলামিস্ট আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী। শনিবার রাতে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশন আয়োজিত আলোচনায় তিনি এ দাবি জানান। রোববার হাই কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মুজিবনগর সফরে এসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডির বক্তব্যের কথা স্মরণ করে গাফ্ফার চৌধুরীর আহ্বান আসে। একুশের গানের রচয়িতা এই লন্ডনপ্রবাসী বলেন, ‘অ্যাডওয়ার্ড কেনেডি মুজিব নগরকে ফিলাডেলফিয়ার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন, যেখানে আমেরিকার স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়েছিলো।’ মুজিবনগরকে বাংলাদেশের ‘দ্বিতীয় রাজধানী’ হিসেবে ঘোষণা করে ফিলাডেলফিয়ার মতো ‘কিছু সরকারি দফতর’ সেখানে স্থাপনের আহ্বান জানান তিনি। একই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক গভর্নর ও বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিব মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনও মুজিবনগর স্মরণে আরও কিছু উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ দেন। ফিলাডেলফিয়ার মত একটি ‘লিবার্টি বেল’ বা স্বাধীনতার ঘণ্টা স্থাপন এবং সেখানে প্রতি বছর এপ্রিল মাসে মন্ত্রিসভার একটি প্রতীকী বৈঠক অনুষ্ঠানের প্রস্তাব করেন তিনি। একইসঙ্গে মুজিবনগরে অবস্থিত জাদুঘরটিকে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার ওপর এবং মুজিবনগরে মুজিবনগর সরকারের ওপর গবেষণা প্রতিষ্ঠান তৈরির প্রস্তাব দেন এই অর্থনীতিবিদ। ফরাসউদ্দিন বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে মুজিবনগর সরকারের অবদান বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক অনন্য গৌরবগাঁথা হয়ে থাকবে।’ অনুষ্ঠানে মুজিবনগর সরকার গঠনের পটভূমি ও ভূকৌশলগত তাৎপর্য তুলে ধরেন যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত মুজিবনগর সরকার আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের স্বপক্ষে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমর্থন আদায়, শরণার্থীদের ব্যবস্থাপনা ও মুক্তিযুদ্ধের রণকৌশল নির্ধারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।’ ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে ওই আয়োজনে অন্যদের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীর প্রতীক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সুলতান মাহমুদ শরীফ, লন্ডনভিত্তিক থিংকট্যাংক স্টাডি সার্কেলের সভাপতি ও যুক্তরাজ্যে ৭১-এর স্টুডেন্ট অ্যাকশন কমিটির সদস্য সৈয়দ মোজাম্মেল আলী, প্রবাসী ব্রিটিশ-বাংলাদেশি প্রগতিশীল নেতা সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক এবং যুক্তরাজ্য প্রবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা লোকমান হোসেন বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের ওপর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয় এবং এই ঐতিহাসিক দিবসের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
পূর্ববর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ