মিথ্যা মামলায় নঈম জোয়ার্দ্দারকে ফাঁসানোর চেষ্টা করলে শান্ত চুয়াডাঙ্গা অশান্ত হবে
চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ককে হত্যা মামলার প্রধান আসামি করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দারকে হত্যা মামলার প্রধান আসামি করায় উত্তাল হয়ে উঠেছে চুয়াডাঙ্গা। মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সমাবেশ ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেল ৫টার দিকে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। তারা গোটা শহরে বিক্ষোভ করে বিভিন্ন স্লোগান দেন। সমাবেশে অবিলম্বে মিথ্যা মামলা থেকে নঈম হাসান জোয়ার্দ্দারের নাম বাদ দিয়ে প্রকৃত হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।
চুয়াডাঙ্গার শহীদ হাসান চত্বর মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদুল ইসলাম আজাদ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গার ছয়ঘরিয়া গ্রামে বালু তোলাকে কেন্দ্র করে হত্যাকা-ের ঘটনায় যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দারকে আসামি করে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু ঘটনার সময় নঈম কোথায় ছিলো, কী করছিলো সেটা প্রশাসনের কর্তারা ভালো করেই জানেন। পুলিশের উদ্দেশে তিনি বলেন, কারো চাপে পড়ে আপনারা নিরপরাধ কাউকে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করবেন না। এতে শান্ত চুয়াডাঙ্গা অশান্ত হয়ে উঠবে। যতো দ্রুত সম্ভব সুষ্ঠু তদন্ত করে নঈম হাসান জোয়ার্দ্দারকে অব্যাহতি দিতে হবে।
জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাস, সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. শফিকুল ইসলাম শফি, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক সাবেক পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু, জেলা কৃষকলীগের সভাপতি মোমিনপুর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক জোয়ার্দ্দার, খাদিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম ম-ল, জেলা যুবলীগের সদস্য আজাদ আলী, অ্যাড. তসলিম উদ্দিন ফিরোজ, আলমডাঙ্গা উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সোনাহার ম-ল, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জানিফ প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘নিজেরাই পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর মল্লিককে। পরে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দারকে ফাঁসানোর জন্য তাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ধরনের নাটক আগেও দেখেছি। যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম জোয়ার্দ্দারের নাম আসামির তালিকা থেকে বাদ না দেয়া হলে বৃহত্তর কর্মসূচি দিয়ে চুয়াডাঙ্গাকে অচল করে দেয়া হবে। কারো চাপে পরে মিথ্যা মামলায় নঈম জোয়ার্দ্দারকে ফাঁসানোর চেষ্টা করলে শান্ত চুয়াডাঙ্গা অশান্ত হবে।
জেলা যুবলীগের সদস্য হাপিজুর রহমান হাপুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান কবির, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মতিয়ার রহমান মতি, ভাংবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাবলুর রহমান, সাবেক কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান শাখওয়াত হোসেন টাইগার, জেলা যুবলীগের সদস্য আবু বক্কর সিদ্দিক আরিফ, আলমগীর আজম খোকা, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক জুয়েল রানা, যুগ্ম আহ্বায়ক পৌর কাউন্সিলর মাফিজুর রহমান মাফি, ইমরান আহমেদ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ২৪ মার্চ (বুধবার) বিকেলে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামের বালুর খোলায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর মল্লিককে (৩৫) পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ওই দিন রাতে ১১ জনকে আসামি করে থানায় এজাহার দাখিল করেন নিহতের পিতা রনজিত মল্লিক। প্রধান আসামি করা হয় বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের জেলা আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দারকে। পরদিন সকালে সকল আসামিকে গ্রেফতারের দাবিতে লাশ নিয়ে মিছিল করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। মিছিলের সময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি শনিবারের মধ্যে আসামিদের ধরতে পুলিশকে আলটিমেটাম দেন।