ঢাকা-চট্টগ্রাম-ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রণক্ষেত্র : গুরুত্বপূর্ণ শহরে বিজিবি মোতায়েন
মোদিবিরোধী আন্দোলন : সংঘর্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হাটহাজারীতে নিহত ৫
স্টাফ রিপোর্টার: ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে শুক্রবার বায়তুল মোকাররম এলাকা কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। সাধারণ মুসল্লি, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও পুলিশের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে দেড় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়। এ সময় বেশ কয়েকটি ভ্রাম্যমাণ দোকান ও মুসল্লিদের মোটরসাইকেল পোড়ানো হয়েছে। এদিকে ঢাকায় বায়তুল মোকাররম এলাকায় মুসল্লি ও পুলিশের সংঘর্ষের খবর ছড়িয়ে পড়লে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসার ছাত্ররা মিছিল বের করে। থানা ও আশপাশের কয়েকটি সরকারি অফিসে তারা হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ পাল্টা গুলি ছোঁড়ে। এতে ৪জন নিহত এবং অর্ধশত আহত হয়। এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসা ও জামিয়া সিরাজুল উলুম মাদরাসার ছাত্ররা ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে। তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে তারা শহরের প্রবেশমুখ কুমারশীল মোড় ও ভাদুঘর মাদরাসার মোড় অবরোধ করে। সন্ধ্যায় আদালত এলাকায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বিক্ষোভকারীরা হামলা চালালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মো. আশিক (২০) নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হন। আহত অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আরিফুজ্জামান জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এক যুবককে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন কয়েক ব্যক্তি। এ সময় যুবককে মৃত ঘোষণার পর পরই তারা জোর করে মরদেহ নিয়ে বেরিয়ে যান। যুবকের শরীরের ডানডিকে পেটে ক্ষতচিহ্ন ছিলো।
চলমান বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনতে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর রাস্তায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে শহরগুলোতে বিজিবি মোতায়েন করা হয়। এর আগে সংবাদ সম্মেলন করে হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশ। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোদি-বিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও মৃত্যুর ঘটনায় শনিবার সারা দেশে বিক্ষোভ ও রবিবার হরতালের ঘোষণা দেয় সংগঠনটি। শুক্রবার রাত ৮টায় পুরানা পল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আব্দুর রব ইউসুফী এ ঘোষণা দেন। হেফাজতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকায় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজের মোনাজাত শেষে মুসল্লিদের একাংশ মোদিবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করে। স্লোগান দেয়ার পরপরই যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মসজিদের উত্তর পাশের ফটকে মিছিলকারীদের ওপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। বের হওয়ার সুযোগ না পেয়ে পিছু হটে মসজিদের ভেতরে ঢুকে যায় বিক্ষোভকারীরা। এর কিছুক্ষণ পর সংগঠিত হয়ে মারধরকারীদের ওপর পাল্টা হামলা চালায় তারা। শুরু হয় সংঘর্ষ। উভয়পক্ষ দফায় দফায় হামলা ও প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এ সময় মসজিদের বাইরে অবস্থান নেন পুলিশ আর মসজিদের ভেতরে অবস্থান নেয় বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভ দমনে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। চালায় ফাঁকা গুলিও। কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও সাতজন গণমাধ্যমকর্মী আহত হয়। ঘটনার সময় বন্ধ হয়ে যায় এলাকার সব ধরনের যান চলাচল। আসরের নামাজের কিছুক্ষণ আগে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, জুমার নামাজের আগে থেকে পুরো এলাকায় পুলিশ সাঁজোয়াযান ও জলকামান নিয়ে অবস্থান নেয়। পল্টন, ফকিরাপুল মোড়, জিরো পয়েন্ট, বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ছিল তাদের অবস্থান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উত্তর গেট থেকে সংঘর্ষ শুরু হলেও পরবর্তী সময়ে তা দক্ষিণ গেটে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দফায় দফায় চলে সংঘর্ষ। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে কয়েকজনকে বেদম মারধর করে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা।
বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশের কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে যান। তাদের দেখে বিক্ষোভকারীরা ফের স্লোগান দেয়া শুরু করে। এ সময় কোনো ধরনের ‘অ্যাকশনে’ না গিয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে দুজন বিক্ষোভকারী এসে তাদের সঙ্গে কথাও বলেন। এ বিষয়ে সেখানে অবস্থানরত এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, আমরা তাদের মসজিদ ত্যাগ করতে বলেছি। তারা বলেছে, নিরাপত্তা পেলে চলে যাবে। পরে সবাইকে উত্তর গেট দিয়ে বের হয়ে যেতে বলেছি। এরপর ৫টার দিকে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। জানতে চাইলে পুলিশের মতিঝিল জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) জাহিদুল ইসলাম বলেন, বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে তারা মসজিদের বাইরে চলে যান। এর আগে মামুনুল হক তাদের কাছে এসেছিলেন। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন।
সংঘর্ষে আহতরা দুপুর ২টা থেকে ঢাকা মেডিকেলে আসতে শুরু করে। রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত দেড় শতাধিক ব্যক্তি চিকিৎসার জন্য সেখানে যান। এর মধ্যে গুরুতর আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষে আহতদের অধিকাংশ সরকারদলীয় সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের অনুসারী। বাকিরা পথচারী, রিকশাওয়ালা ও বিক্ষোভকারী। ক্ষমতাসীন দলের বাইরে যারা চিকিৎসা নিতে এসেছেন তাদের বেশ কয়েকজনকেও দফায় দফায় মারধর করা হয়। জরুরি বিভাগের সামনে মারধরের শিকার হয়ে তারা আর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রবেশ করেনি। পথচারী জাহিদ হাসান জানান, মসজিদ থেকে ছোড়া ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন। তিনি আন্দোলনের বিষয়ে কিছু জানতেন না। আহত এক যুবলীগ কর্মী বলেন, হুজুররা মসজিদের ওপর থেকে আমাদের ওপর পাথর ও টাইলসের টুকরা নিক্ষেপ করেছে। তাই আমরা বেশি আহত হয়েছি।
আন্দোলনকারীরা মসজিদকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মতিঝিল বিভাগের ডিসি সৈয়দ নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, মুসলিম ও মুসলমানদের পবিত্র জায়গা হচ্ছে মসজিদ। পুলিশ মসজিদের পবিত্রতা রক্ষার্থে ভেতরে প্রবেশ করেনি। যদি এটা মসজিদ না হতো তাদের আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারতাম। আজকে যে পরিমাণ ইটপাটকেল পুলিশের ওপর নিক্ষেপ করা হয়েছে, তা কয়েক ট্রাক হবে। মসজিদের ভেতরে এত ইট কীভাবে এলো সেটা তদন্ত করে দেখা হবে।
সংঘর্ষের সর্বশেষ অবস্থা প্রসঙ্গে ডিসি সৈয়দ নুরুল ইসলাম আরও বলেন, পুলিশ আইনানুগভাবে তাদের প্রতিরোধ করেছে। যাতে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি না হয় এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি না হয়। নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে একপর্যায়ে পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ছুঁড়ে তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে।
এদিকে, চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে পুলিশের সঙ্গে হেফাজতে ইসলাম কর্মীদের সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার দুপুরে ঢাকায় বায়তুল মোকাররম এলাকায় মুসল্লি ও পুলিশের সংঘর্ষের খবর ছড়িয়ে পড়লে হাটহাজারী মাদরাসার ছাত্ররা মিছিল বের করে এবং থানা ও আশপাশের কয়েকটি সরকারি অফিসে হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ পাল্টা গুলি ছোঁড়ে। এতে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। গুরুতর আহত অবস্থায় নয়জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) আনা হয়। তাদের মধ্যে চারজনকে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। নিহতরা হলেন কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের রবিউল ইসলাম (২২), মাদারীপুরের মেহেরাজুল ইসলাম (২২), হাটহাজারীর মো. জামিল (২০) ও ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের আব্দুল্লাহ মিজান (২৩)। হতাহতদের চমেক হাসপাতালে আনার পর একদল বিক্ষুব্ধ যুবক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর চালান। সন্ধ্যা ৭টার দিকে হতাহতদের দেখতে হাসপাতালে যান হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী। তবে তিনি ওই সময় ঘটনার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, পুলিশের গুলিতে হেফাজতের ১০-১৫ জন আহত হন। তাদের মধ্যে ৪ জন মারা গেছেন। আহতদের মধ্যে আরেকজনের অবস্থা গুরুতর।
ঘটনার পরপরই হাটহাজারী দারুল উলুম মুইনুল ইসলাম মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা মাদরাসার সামনে অবস্থান নিয়ে হাটহাজারী-খাগড়াছড়ি সড়কে অবরোধ সৃষ্টি করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মোদি ও বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে দুপুর সোয়া ২টার দিকে হাটহাজারী মাদরাসা থেকে মিছিল নিয়ে হাজারখানেক ছাত্র আনুমানিক ৫০০ মিটার দূরে থানার সামনে যান। তবে মাদরাসার মাইক থেকে তাদের ফেরত যেতে বারবার অনুরোধ করা হয়। এরপর তারা থানার দিকে এগোতে থাকে। থানার সামনে গিয়ে হঠাৎ ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন তারা। ছাত্রদের ছোড়া ইট-পাথরের টুকরায় থানার সামনের কাচের দরজা ভেঙে যায়। বিভিন্ন আসবাবপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ প্রথমে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এরপর পুলিশ ও হেফাজত কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পুলিশ আরও কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ার পর মাদরাসাছাত্ররা পিছু হটেন। তারা মাদরাসার মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। পুলিশ থানার সামনে অবস্থান নেন।
হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ঢাকায় বায়তুল মোকাররমে পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছে। এর প্রতিবাদে হাটহাজারী মাদরাসার ছাত্ররা মিছিল বের করলে পুলিশ গুলি চালায়। হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিন জানান, মিছিলকারীরা ভূমি অফিসে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে। ফাইলপত্র, আসবাবপত্র সব জড়ো করে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। ভূমি অফিসের একটি গাড়িতেও আগুন দেয়া হয়েছে। উপজেলার ডাকবাংলোতে ঢুকেও ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি জানান, ঢাকায় পুলিশের গুলিতে সাতজন নিহত হয়েছেন- এমন গুজব ছড়িয়ে পড়লে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে শত শত বিক্ষুদ্ধ মাদরাসাছাত্র রাস্তায় নেমে আসে। তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের প্যানেল বোর্ড, সিগন্যাল বোর্ড ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার মো. শোয়েব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। সন্ধ্যায় আবারও রেলস্টেশনে অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষোভকারীরা। এ ছাড়া তারা জেলা প্রশাসকের ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়, পৌরসভা ভবন, সুরস¤্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন ও বিটিসিএল কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে দরজা-জানালা ভাংচুর করে। বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের জাতির পিতার ম্যুরাল ভাংচুর করে এবং শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বিভিন্ন ফেস্টুন ছিড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। বিক্ষুব্দ মাদরাসা ছাত্ররা শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে প্রবেশ করে বঙ্গবন্ধুর ছবি সংবলিত ফেস্টুন ভাংচুর এবং পাশের জেলা শিল্পকলা একাডেমির দরজা-জানালা ভাংচুর করে। এ সময় ডেইলি স্টার ও একুশে টেলিভিশনের দুই সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করা হয়। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো শহরে। সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা গুরুতর আহত হয়েছেন বলে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে। চিকিৎসার জন্য রাতেই তাদের ঢাকায় আনার প্রস্তুতি চলছিল।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যায় আদালত এলাকায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বিক্ষোভকারীরা হামলা চালালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মো. আশিক (২০) নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হন। আহত অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আরিফুজ্জামান জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এক যুবককে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন কয়েক ব্যক্তি। এ সময় যুবককে মৃত ঘোষণার পর পরই তারা জোর করে মরদেহ নিয়ে বেরিয়ে যান। যুবকের শরীরের ডানডিকে পেটে ক্ষতচিহ্ন ছিল। ব্রাহ্মণবাড়িয়া মডেল থানার ওসি আবদুর রহিম সন্ধ্যায় জানান, বিক্ষোভকারীরা থানার বাইরে অবস্থান করছে।