আলমডাঙ্গা ব্যুরো: সন্ত্রাসী না হয়েও দীর্ঘ ১৫ বছরের পলাতক জীবনের অবসান ঘটিয়ে মুকুলের স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দিলেন চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে পুলিশ সুপারের নির্দেশে আলমডাঙ্গা থানায় আত্মসমর্পন করে মুকুল স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। গ্রামবাসী সন্ত্রাসী আখ্যা দেয়ায় মুকুল দীর্ঘ ১৫ বছর এলাকা ছেড়ে বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করে আসছিলেন।
জানাগেছে, উপজেলার ভাংবাড়িয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামের নিয়ামত আলীর ছেলে মুকুল (৩৭)। কুমারি ইউনিয়নের মুকুলের নানা বাড়ি যাদবপুর গ্রামে। ২০০০ সালে এসএসসি পাস করার পর নানা বাড়িতে যাওয়া আসার একপর্যায়ে গ্রাম্য মামা পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা আবির হাসানের সাথে তার পরিচয় হয়। সেই সুবাদে মাঝে মাঝে আবির হাসান বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মুকুলের বাড়িতে যাওয়া আসা করতেন। সে সময় থেকেই গ্রামবাসী মুকুলকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করে। তখন থেকে মুকুলের জন্য গ্রামে থাকা দুরুহ হয়ে পড়ে। গ্রামে কোনো ঘটনা ঘটলেই মুকুলের নাম হতে শুরু করে। গ্রামের মানুষ মুকুলকে বিভিন্নভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে থাকে। ২০০৪ সালের শেষের দিকে মুকুল গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হয়। তখন থেকে মুকুল কোনো সময় ঢাকায় টাইলস মিস্ত্রি, কোনোসময় তিনি রাজমিস্ত্রীর কাজ করে নিজের খরচ চালাতেন। মুকুলের স্ত্রী কুষ্টিয়া মিরপুর উপজেলায় পিতার বাড়িতেই বসবাস করতেন। মুকুলের একটি মাত্র ছেলে বয়স এখন ১৪ বছর। মিথ্যা সন্ত্রাসী আখ্যায়িত হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে দীর্ঘ ১৫ বছর। এ জীবন আর কতদিন। মুকুল চিন্তা করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে হবে। মুকুলের নামে নেই কোনো মামলা, নেই কোনো অভিযোগ। তবুও সে নামধারী সন্ত্রাসী।
কয়েকদিন আগে মুকুল জেলা কৃষকলীগের সহ-সভাপতি আশাদুল ইসলামকে সাথে নিয়ে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলামের নিকট গিয়ে হাজির হন। পুলিশ সুপারের নিকট তার জীবনের সমস্ত ঘটনা খুলে বলেন। পুলিশ সুপারের নিকট মুকুল স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ চান। পরে পুলিশ সুপার আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর কবীরের নিকট আত্মসমর্পন করার পরামর্শ দেন।
পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলামের নির্দেশে ৯ মার্চ বেলা ১১টার দিকে আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর কবীরের নিকট আত্মসমর্পন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চান। এ সময় আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মুকুলকে রজনীগন্ধা ফুলের স্টিক হাতে তুলে দিয়ে তাকে স্বাভাবিক জীবন যাপন করার সুযোগ দেন।
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর কবীর বলেন, সন্ত্রাসী না হয়েও মুকুল দীর্ঘ বছর এলাকা ছেড়ে পালিয়ে ছিলো। সে স্বাভাবিক জীবন-যাপন করার জন্য আলমডাঙ্গা থানায় আত্মসমর্পন করেন। আলমডাঙ্গা থানায় তার নামে কোনো মামলা নেই। শর্ত সাপেক্ষে তাকে স্বাভাবিক জীবন যাপনের সুযোগ দেয়া হলো।
পূর্ববর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ