চুয়াডাঙ্গার সুবদিয়ায় বিন বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ সজীব মারা গেছেন
ডিঙ্গেদহ প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার সুবদিয়ায় অবস্থিত বহুজাতিক কোম্পানি সিপি বাংলাদেশ লিমিটেডের বিন বিস্ফোরণ হয়ে অগ্নিদগ্ধ দুই শ্রমিকের মধ্যে তানজিল আরিফ সজীব অবেশেষে মারা গেছেন (ইন্নলিল্লাহি….রাজিউন)। গতকাল বুধবার বিকেল ৪টায় ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। সজীব চুয়াডাঙ্গার পদ্মবিলা ইউনিয়নের বেগনগর গ্রামের আব্দুর রশিদের ছোট ছেলে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাদ জোহর বেগনগর গ্রামের ঈদগাহ ময়দানে জানাজা শেষে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়। অপরজন চুয়াডাঙ্গা সদরের মানিকদিহিপাড়ার গোলাম ম-লের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন আছে। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
এ ব্যাপারে এলাকাবাসী জানায়, চুয়াডাঙ্গা সদরের পদ্মবিলা ইউনিয়নের বেগনগর গ্রামের আব্দুর রশিদের ছোট ছেলে তানজিল আরিফ সজীব (২৯) ও শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়নের মানিকদিহিপাড়ার (ফিসারী পাড়া) গোলাম ম-লের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন দীর্ঘদিন ধরে সুবদিয়ায় অবস্থিত বহজাতিক কোম্পানি সিপি বাংলাদেশ লিমিটেডের শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে কর্মরত থাকা অবস্থায় ভুট্টা ও সয়াবিনের বিনে সমস্যা দেখা দেয়। এ সময় বিনটি পরিস্কার করতে গেলে বিনটি ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে মারাত্মকভাবে দগ্ধ হন তানজিল আরিফ সজীব ও আব্দুল্লাহ আল মামুন। সাথে সাথে তাদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের দুজনকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে রেফার্ড করেন। দুদিন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত পরশু বুধবার বেলা ৪টায় তানজিল আরিফ সজীব মারা যান। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে তানজিল আরিফ সজীবের মৃতদেহ বেগনগর গ্রামের বাড়ীতে পৌঁছুলে সংবাদ পেয়ে হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসে সজীবকে দেখার জন্য। এ সময় স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে এলাকা। সজীবের একমাত্র মেয়ে নিধি (৪) বুঝতে পারেনি তার বাবা মারা গেছেন। বাবার মৃতদেহ ও এলাকার মানুষের ভিড় দেখে সকলের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকাচ্ছিলো। সজীবের স্ত্রী নিশি বর্তমানে অন্তঃস্বত্তা। স্বামীকে হারিয়ে হতবিহবল হয়ে পড়েছেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার বাদ জোহর বেগনগর ঈদগাহ ময়দানে সজিবের মরদেহ জানাজা শেষে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ সময় ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজিবর রহমানসহ এলাকা শত শত মুসুল্লিরা জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। সিপি বাংলাদেশে শ্রমিকদের জন্য কোনো নিরাপত্তার ব্যবস্থা না থাকা ও শ্রমিকের জন্য কোনো ইনসিউরেন্সের ব্যবস্থা না থাকায় এলাকায় জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অবিলম্বে শ্রমিকের জন্য ইনসিউরেন্স ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানিয়েছে এলাকার সচেতন মহল।