স্টাফ রিপোর্টার: প্রবাহমান শৈত্যপ্রবাহে দুস্থদের দুর্ভোগ বেড়েছে। চুয়াডাঙ্গায় শীতজনিত রোগে জয়া খাতুন (৪ দিন) ও সোয়াইব হোসেন (২ দিন) নামে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার ভোরে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় এ দু শিশু। জয়া খাতুন সদর উপজেলার বোয়ালমারী গ্রামের দিবা আলীর মেয়ে ও সোয়াইব হোসেন একই উপজেলার গাড়াবাড়িয়া গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে। অপরদিকে দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। চুয়াডাঙ্গায় গতকাল সর্বনি¤œ ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিলো তেঁতুলিয়ায় ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. সোহরাব হোসেন জানান, গেলো ২০ ডিসেম্বর নবজাতক সোয়াইব ও ২২ ডিসেম্বর জয়াকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নির্দিষ্ট সময়ের আগে ওই দুই শিশুর জন্ম হয়। তাদের শরীরের ওজন কম ছিলো। শীতজনিত রোগ সর্দি ও জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় তারা। তখনই তাদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, চুয়াডাঙ্গায় শীতজনিত রোগ বাড়ছে। গত কয়েকদিন ডায়রিয়া ও শিশু ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল সকাল ১০টা পর্যন্ত সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ২৩ জন রোগী ভর্তি ছিলো। এর মধ্যে ১৭ শিশু। অপরদিকে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি ২৭ জনের বেশিরভাগই শীতজনিত রোগে আক্রান্ত। শীতে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগের প্রকোপ বাড়ে। এ সময় শিশু ও বয়স্কদের গরম কাপড় পরিধানসহ প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন এ চিকিৎসক।
আবহাওয়া অধিদফতর পূর্বাভাসে জানিয়েছে, উপ মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গে ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারী ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। শ্রীমঙ্গল এবং বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিম ও পশ্চিম সীমান্ত এলাকায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। পাশর্^বর্তী এলাকায় শৈত্যপ্রবাহ বিস্তার লাভ করবে। ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। ৫ দিনের পূর্বাভাসে শেষের দিকে রাতের তাপমাত্রা আরও হ্রাস পাবে। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সিলেট ও টেকনাফে ২৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ ছিলো ২৫ দশমিক ৪ ও সর্বনি¤œ ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনে ঝলমলে রোদে উষ্ণতা বাড়লেও রাতে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। উত্তরের হিমেল হাওয়ায় হতদরিদ্র্যদের দুর্ভোগ বেড়েছে। দুর্ভোগ লাঘবে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত রেখেছে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি পর্যায়েও শীতবস্ত্র বিতরণের খবর পাওয়া গেছে।