অভাবের তাড়নায় ‘ক্রাইম পেট্রোল’ দেখে ডাকাতি করে মূল পরিকল্পনাকারী সাফাতুজ্জামান

 

স্টাফ রিপোর্টার: ডাকাতির মূল হোতা সাফাতুজ্জামান রাসেল (৩০) পেশায় একজন ওষুধ ব্যবসায়ী। অভাবের তাড়নায় একটি এনজিও থেকে ঋণ নেন তিনি। এনজিওর টাকা পরিশোধের জন্য দৈনিক কিস্তির ৮০০ টাকা দিতে হয় তাকে। টাকা পরিশোধ করতে না পারায় হতাশায় ভুগছিলেন তিনি। এই অবস্থায় ভারতীয় সনি আট টিভিতে প্রচারিত অপরাধ বিষয়ক অনুষ্ঠান ‘ক্রাইম পেট্রোল’র একটি পর্ব দেখে ব্যাংক লুটের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সাফাতুজ্জামান ব্যাংক লুটের পরিকল্পনা তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হৃদয়কে জানান। পরে সাফাতুজ্জামান ও হৃদয় মিলে তা রকি ও মাহফুজকে জানায়। এদের মধ্যে রকি রাজি হয় এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনজন মিলে ব্যাংক লুট করতে যায়। তারা ব্যাংকের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে অনেক আগে থেকেই পর্যবেক্ষণ করেছিল। গেল ১৫ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উথলী ঈদগাহের কাছে রাসেল, রকি ও হৃদয় দেখা করে ব্যাংক লুটের পরিকল্পনা করে। পরে রাসেল তার ব্যবহৃত টিভিএস মোটরসাইকেলটি সেখানে রেখে দেয়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা পিপিই ও হেলমেট পরিধান করে। পরে একটি ভাড়া করা হিরো হোন্ডা মোটরসাইকেল চালিয়ে রাসেল অন্য দু’জনকে নিয়ে উথলী সোনালী ব্যাংক শাখার দিকে যায়। মোটরসাইকেলটি ব্যাংকের পেছনে রাখে রাসেল। প্রথমে গ্রাহক সেজে ব্যাংকে ঢোকে তারা তিনজন। দুপুর ১টা ৫ মিনিটে রাসেল তার কাছে থাকা একটি খেলনা পিস্তল বের করে ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মীকে জিম্মি করে। ব্যাংকের দরজা বন্ধ করে ও ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মীসহ সবার মুঠোফোনগুলো কেড়ে নেয় তারা। তারা ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ও নিরাপত্তাকর্মীসহ ব্যাংকে কর্মরত মোট ৮ জনকে একটি কক্ষের সামনে বসিয়ে রাখে। পরবর্তীতে তারা ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত টাকাসহ কাউন্টারে থাকা মোট ৮ লাখ ৮২ হাজার ৯শ’ টাকা লুট করে নেয়। টাকা লুটের পর ডাকাতদলের সদস্যরা দ্বিতীয় তলা থেকে সিড়ি বেয়ে নামার সময় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জরুরি সতর্ক সংকেত (ইমারজেন্সি হুইসেল) বাজান। সতর্ক সংকেত শুনে ব্যাংকের পার্শ্ববর্তী দোকানদাররা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং তাদের তিনজনকে ধাওয়া করেন। এ সময় তারা পিস্তল উচিয়ে গুলি করার হুমকি দিলে দোকানদাররা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন এবং চিৎকার শুরু করেন। এ সুযোগে ব্যাংকের পেছনে রেখে দেয়া লাল রঙের হিরোহোন্ডা মোটরসাইকেল চালিয়ে রকি ও অন্য দু’জন পালিয়ে যাবার সময় উথলী সূর্যতোরণ ক্লাবের সামনে গেলে আবার বাধাঁর মুখে পড়ে। ওখানে দাঁড়িয়ে থাকা আরিফুর রহমান মন্টুসহ ৫-৬ জন মোটরসাইকেল লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে একটা ইট তাদের হেলমেটে লাগে। রাসেলের কাছে ছিলো টাকার ব্যাগ। তারা গোপনে আবার উথলী ঈদগাহের কাছে চলে আসে। সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাসেল টাকার ব্যাগ নিয়ে বাড়ি চলে যায়। পরে টাকা ভাগাভাগি করে তারা। লুটের টাকা থেকে এনজিও ঋণ পরিশোধ এবং একটি ল্যাপটপ ও পোশাক কেনে সাফাতুজ্জামান। লুটের সময় না থাকলেও ঘটনা জেনে যাওয়ায় টাকার ভাগ নেয় মাহফুজ। পুলিশের তৎপরতা দেখে ঝিনাইদহের কালিগঞ্জে পালিয়ে যায় রাসেল।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More