স্টাফ রিপোর্টার: সিলেট এমসি কলেজে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় সাইফুরকে প্রধান আসামি করে ৮ জনের বিরুদ্ধে আজ আদালতে অভিযোগপত্র দেবে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ। আট আসামির মধ্যে ৬ জনের বিরুদ্ধে সরাসরি ধর্ষনে অংশ নেয়া ও বাকি ২ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহায়তার প্রমাণ পেয়েছে তদন্তকারী কর্মকর্তা। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যাচাই-বাছাই শেষে বুধবার সন্ধ্যায় তা চূড়ান্ত করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার নিশারুল আরিফ। তিনি বলেন, তদন্তকালীন ঘটনাস্থলের আলামত, বাদী ও ভিকটিমসহ অন্য সাক্ষী ও আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি এবং ডিএনএ প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এসএমপির অপর এক কর্মকর্তা বলেন, ধর্ষণে সরাসরি যুক্ত আসামিরা হলো সাইফুর রহমান, শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি, তারেকুল ইসলাম তারেক, অর্জুন লস্কর, মো. রবিউল হাসান ও মাহফুজুর রহমান মাসুম। অন্যদিকে ধর্ষণে সহযোগিতার জন্য আসামি করা হয়েছে মো. আইনুদ্দিন ও মিসবাউল ইসলাম রাজনকে। তাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অভিযোগপত্র তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া ৮ আসামির বিরুদ্ধে একই সঙ্গে প্যানেল কোডের ৩৪২/৩২৩/৩৭৯/৩৮৫/৩৪ ধারা অনুযায়ী আরো একটি অভিযোগপত্র দেয়া হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা। এ বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের শিকার হন এক গৃহবধূ (২১)। ছাত্রাবাসের আঙ্গিনায় স্বামীকে আটকে রেখে প্রাইভেট কারের ভেতর ওই গৃহবধূকে গণধর্ষণ করা হয়। পুলিশ নির্যাতিত নারীকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। ওসিসিতে তিন দিন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি। ওই রাতেই গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে মহানগরের শাহপরাণ থানায় আওয়ামী লীগ নেতা রঞ্জিত সরকারের অনুসারী ৬ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা করেন। র্যাব ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ঠ থাকায় ৪ জনকে গ্রেফতার করে। এছাড়া সিলেট জেলা পুলিশ ২ জনকে, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ পুলিশ ২ জনকে গ্রেফতার করে। এসএমপি পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে না পারায় সিলেটজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। গ্রেফতারের পর আটজন আসামিকে পর্যায়ক্রমে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। রিমান্ড শেষে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তারা। জবানবন্দিতে প্রধান আসামি সাইফুর, তারেক, শাহ মাহবুবুর ও অর্জুন লস্কর ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন। রবিউল ও মাহফুজুর ধর্ষণে সহায়তা করার কথা স্বীকার করেন। সন্দেহভাজন আসামি মিসবাউর রহমান ওরফে রাজন ও আইনুদ্দিন জবানবন্দি দেন। এর আগে ১ ও ৩ অক্টোবর আট আসামির ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে টেস্টের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। সেই ডিএনএ নমুনার প্রতিবেদন রোববার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহপরাণ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্যের কাছে পৌঁছায়। তদন্ত প্রতিবেদন বিশে¬ষণ করেন এসএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এতে ৬ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সরাসরি যুক্ত থাকার প্রমাণ মেলে। এসএমপি কমিশনার মো. নিশারুল আরিফ বলেন, আসামিরা যাতে সর্বোচ্চ সাজা পায় সে বিষয়টি মাথায় রেখে আইনগত সব তথ্য-উপাত্ত অভিযোগপত্রের সঙ্গে জমা দেয়া হবে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ