মেহেরপুরে শহর সমাজসেবার মাঠকর্মী হত্যার রহস্য উন্মোচন
মেহেরপুর অফিস: পরস্ত্রীর সাথে পরকীয়ার কারণে খুন হতে হয়েছে মেহেরপুর শহর সমাজসেবা অফিসের মাঠকর্মী ফারুক আহমেদকে। হত্যা মামলার মূল আসামি ফারুক হোসেন ওরফে বড় ফারুককে (৪৮) গ্রেফতারের পর পুলিশের কাছে এ তথ্য দিয়েছেন তিনি। গত রোববার রাতে ঢাকা থেকে মেহেরপুর সদর থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। ফারুক হোসেন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন। ফারুক হোসেন মেহেরপুর শহরের তাঁতিপাড়ার আব্দুল লতিফ বিশ^াসের ছেলে।
মেহেরপুর সদর থানার ওসি শাহ দারা খাঁন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তার নেতৃত্বে মেহেরপুর সদর থানা পুলিশের একটি দল রোববার মধ্যরাতে ঢাকার বনানী এলাকার একটি বাড়ি থেকে ফারুক হোসেনকে আটক করে। সে প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করেছে। গতকাল সোমবার বিকেলে তাকে মেহেরপুর আদালতে হাজির করা হলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
তিনি আরো বলেন, শহর সমাজ সেবার মাঠকর্মী ফারুক আহমেদের সাথে ঘাতক ফারুক হোসেনের বন্ধুত্ব ছিলো। প্রবাসে থাকাকালে ফারুক হোসেন সমাজসেবার মাঠকর্মী ফারুক আহমেদের মাধ্যমে স্ত্রীর কাছে টাকা পাঠাতো। এ থেকে ফারুক আহমেদ ও ফারুক হোসেনের স্ত্রীর মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্ক তৈরি হয়। দেড় বছর পর ফারুক হোসেন বিদেশ থেকে দেশে ফিরে স্ত্রীর আচরণে পরিবর্তন লক্ষ্য করেন এবং তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নানা কারণে দ্বন্দ্ব চলতে থাকে। এরই মধ্যে ফারুক হোসেন সিকিউরিটি গার্ড (নিরাপত্তা প্রহরী) এর চাকরি নিয়ে ঢাকাতে যায়। ফারুক আহমেদের সাথে স্ত্রীর পরকীয়ার বিষয়টি পরিস্কার হলে স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্বে ফারুক হোসেনের স্ত্রী মেহেরপুর ছেড়ে বাবার বাড়ি চলে যায়। এরপর সমাজসেবার মাঠকর্মী ফারুক আহমেদ ও ফারুক হোসেন দু’জনের মধ্যে বিরোধ তুঙ্গে ওঠে। এরই জের ধরে ফারুক আহমেদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ফারুক হোসেন। সে মতে ফারুক হোসেন বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিন্ন করে ফারুক আহমেদকে হত্যা করে ও পুনরায় ঢাকাতে ফিরে যায়।
উল্লেখ্য, গেলো বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে সদর থানার সামনে থেকে চা পান করে বাসায় ফেরার পথে শহরের থানাপাড়ায় (উত্তর) নিজ বাড়ির সামনে হামলার শিকার হন সমাজ সেবার মাঠকর্মী ফারুক আহমেদ। ধারালো অস্ত্রের কোপে তাকে রক্তাক্ত জখম করা হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে ২৫০ শষ্যা বিশিষ্ট মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরদিন নিহতের স্ত্রী নাজমা খাতুন বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মেহেরপুর সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঘাতক ফারুক হোসেনকে গ্রেফতার পর গতকাল সোমবার বিকেলে তাকে মেহেরপুর আদালতে নেয়া হয়। সেখানে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।