স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার ফার্মপাড়ায় ট্রেনের ধাক্কায় সম্রাট নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতরাত ১২টার দিকে ফার্মপাড়া রেলগেটে (লেভেল ক্রসিং) এ দুর্ঘটনা ঘটে। একইসাথে দুইটি ট্রেন অতিক্রম করার সময় সীমান্ত এক্সপ্রেসের ধাক্কায় তার মৃত্যু হয়। ট্রেনের চালককে সংকেত দেয়ার জন্য ওই রেলগেটে গেটম্যান থাকলেও ঘটনার সময় তিনি নিজের ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। পরে নিহতের বিষয়টি জানতে পেরে সেখান থেকে পালিয়ে যান তিনি। এদিকে, গতরাত আড়াইটার দিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিহত সম্রাট দ্বিখণ্ডিত লাশ ওই রেললাইনের ধারেই পড়েছিলো। একাধিকবার যোগাযোগ করেও জিআরপি’র কোন সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধারের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে দীর্ঘ সময় লাশ পড়ে থাকার কারণে রেলওয়ে পুলিশের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।
জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার বড় দুধপাতিলা গ্রামের নাসির উদ্দীনের ছেলে সম্রাট (১৯) তার মাকে নিয়ে চুয়াডাঙ্গার শহরের ফার্মপাড়ায় বাড়িভাড়া নিয়ে থাকতেন। নিজে সমবায় নিউ মাকের্টের একটি দোকানে কাজ করতেন। গতকাল শনিবার রাতেও কাজ শেষ করে ফিরছিলেন বাড়িতে। ফার্মপাড়া রেলগেটে এসে দেখেন চুয়াডাঙ্গা থেকে দর্শনামুখী একটি মালবাহী ট্রেন অতিক্রম করছে। স¤্রাট অপর লাইনের ওপর দাঁড়িয়ে ট্রেনটির রেলগেট পার হওয়ার অপেক্ষা করছিলেন। এসময় ছুটে আসে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা সীমান্ত এক্সপ্রেস। মালবাহী ট্রেনের শব্দের কারণে সীমান্ত এক্সপ্রেসের শব্দ বুঝতে না পেরে ওই লাইনের ওপরেই দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। এ সময় সীমান্ত এক্সপ্রেসের ধাক্কায় প্রায় ১শ’ মিটার সামনে এগিয়ে পড়ে স¤্রাট। তার শরীরের ওপর দিয়ে চলে যায় আন্তঃনগর সীমান্ত এক্সপ্রেস। কোমর থেকে দ্বিখ-িত হয়ে যায় স¤্রাটের দেহ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ফার্মপাড়া লেভেল ক্রসিংয়ে কোনো গেট না থাকলেও ট্রেনের চালককে সংকেত দেয়ার জন্য সবসময় একজন করে দায়িত্বে থাকেন। তবে শনিবার রাতে সংকেত দেয়ার জন্য কেউ আসেনি। গেটম্যান ছিলেন নিজের ঘরে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। এদিকে, গতরাত আড়াইটা পর্যন্ত স¤্রাটের লাশ রেললাইনের ধারেই পড়েছিলো। পাশেই বসে বসে কাঁদছিলেন হতভাগি মা। কখন ছেলের মরদেহ সেখান থেকে নেয়া হবে জানেন না।
চুয়াডাঙ্গা সদর ফাঁড়ির এসআই রইস উদ্দীন শরিফ জানান, ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি রেলওয়ে পুলিশকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জিআরপি পুলিশের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।