স্টাফ রিপোর্টার: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হঠাৎ বেড়ে গেছে নারীমৃত্যু। এখন পর্যন্ত মৃতের মাত্র ২১ শতাংশ নারী হলেও দুইদিন ধরে এ হার বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত ৪১ জনের মধ্যে ১২ জন ছিলেন নারী। নারীমৃত্যু হার ২৯ শতাংশ। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় মৃত ৩৬ জনের ১৭ জনই ছিলেন নারী। নারীমৃত্যু হার ছিলো ৪৭ শতাংশ। এদিকে কয়েকদিন ধরে দৈনিক শনাক্তের হার কমছে বাংলাদেশে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ হাজার ৭৫৫টি নমুনা পরীক্ষা করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৮২৭ জনের দেহে। শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৩৮ শতাংশ। তবে দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুহার বেড়েই চলেছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে নারীমৃত্যু। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে এক দিনের ব্যবধানে মৃতু্যুহার দশমিক শূন্য ১ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১ দশমিক ৩৯ শতাংশ। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেশে করোনা সংক্রমণের সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে বলায় হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৯৯৫ জন। এতে মোট সুস্থ হলেন ২ লাখ ৩০ হাজার ৮০৪ জন। এখন পর্যন্ত দেশে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ লাখ ৩১ হাজার ৭৮ জনের। মোট মারা গেছেন ৪ হাজার ৫৯৩ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৬৯ দশমিক ৭১ ও মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৯ শতাংশ। বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তার মধ্যে ২৯ জন পুরুষ, ১২ জন নারী। ৩৬ জন হাসপাতালে, তিনজন বাড়িতে মারা গেছেন। দুজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। বয়স বিবেচনায় মৃত ৪১ জনের ২৪ জন ষাটোর্ধ্ব, ১০ জন পঞ্চাশোর্ধ্ব, চারজন চল্লিশোর্ধ্ব, একজন ত্রিশোর্ধ্ব, একজন ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ও একজন ছিলো ১০ বছরের কম বয়সী শিশু। এর মধ্যে ১৭ জন ঢাকা, ছয়জন চট্টগ্রাম, পাঁচজন রাজশাহী, পাঁচজন রংপুর, চারজন খুলনা, দুজন সিলেট এবং একজন করে বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
এখন পর্যন্ত যারা মারা গেছেন তার ৪৮ দশমিক ২৭ শতাংশই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। মৃত্যুতে ঢাকার পরপরই আছে চট্টগ্রাম বিভাগ (২১ দশমিক ২৯ শতাংশ)। সর্বনি¤œ মৃত্যু হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে (২ দশমিক ১৩ শতাংশ)। এখন পর্যন্ত মৃত ৪ হাজার ৫৯৩ জনের মধ্যে ৩ হাজার ৫৮২ জন পুরুষ ও ১ হাজার ১১ জন নারী। এদিকে, গত জুনে দেশে দৈনিক ১৭ থেকে ১৮ হাজার নমুনা পরীক্ষা হলেও বর্তমানে হচ্ছে ১১ থেকে ১৪ হাজার। সেই সঙ্গে দেশের ৫৫ ভাগ জেলায় এখনো করোনা পরীক্ষা কেন্দ্র চালু না হওয়ায় সেসব জেলায় নমুনা পরীক্ষা কম হচ্ছে। যৎসামান্য পরীক্ষা হচ্ছে তার নমুনা পাঠাতে হচ্ছে অন্য জেলায়। দূরের পথ পাড়ি দিতে গিয়ে অনেক সময় নষ্ট হচ্ছে নমুনা। ফলে সঠিক রিপোর্ট আসছে না। এসব কারণে দেখা গেছে, যেসব জেলায় করোনা পরীক্ষা কেন্দ্র আছে, সেসব জেলাতেই করোনা রোগীর সংখ্যা বেশি। পরীক্ষা কেন্দ্র না থাকা জেলাগুলোয় নমুনা পরীক্ষাও হচ্ছে কম, রোগীর সংখ্যাও কম। বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর।