গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলা পরিষদ শহীদ মিনার এলাকায় শিশিরপাড়া গ্রামের মৌমিতা খাতুন পলি গত দুদিন ধরে অনশন করছেন। গাংনী পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলামের কাছে চাকরির জন্য দেয়া টাকা পাবেন বলে দাবি করলেও এর স্বপক্ষে শক্ত কোনো প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। কারও উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য তিনি অনশন করছেন; না প্রকৃতপক্ষে টাকা পাবেন এ নিয়ে নানা গুঞ্জন চলছে গাংনীর বিভিন্ন মহলে। এর আগে একই দাবিতে গত ২০ আগস্ট শহীদ মিনারে অনশন করেছিলেন মৌমিতা। মৌমিতার অভিযোগের প্রেক্ষিতে মেয়র আশরাফুল ইসলামের দাবি ছিলো ‘তার স্বামী জমি কেনার জন্য মেয়রকে টাকা দিয়েছেন। সেই টাকা তিনি আবার ফেরত নিয়েছেন। অনশনের পর রাতে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান ও গাংনী থানার ওসির মধ্যস্থতায় তিনি অনশন ভঙ্গ করেছিলেন। পরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাংনী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ খালেকের উপস্থিতিতে থানায় বসে উভয়পক্ষ। সেখানেও উঠে আসে মৌমিতার স্বামীর টাকা ফেরত নেয়ার বিষয়। তবে তার স্বামী সেখানে উপস্থিত না থাকায় আলোচনা স্থগিত করে পরবর্তীতে স্বামীর উপস্থিতিতে বিষয়টি নিরসনের সিদ্ধান্ত হয়।
কয়েকদিন পর মৌমিতার স্বামীকে নিয়ে আবারও থানায় উপস্থিত হয়েছিলেন নিরসনের জন্য। সেখানে তার স্বামীর কাছে সাংবাদিকরা মেয়রের দাবির বিষয়টি জানতে চান। এতে ক্ষিপ্ত হন মৌমিতা ও তার মা। সাংবাদিকদের সাথে তার কথা বলতে দেয়া হয়নি। স্বামীর নাম ও ঠিকানাও বলতে বাধা দেন মৌমিতা ও তার মা। এতে মৌমিতার স্বামীর সাথে মেয়রের লেনদেন নিয়ে আবারও সন্দেহ ঘনিভূত হয়। ওইদিন কোনো সমঝোতা ছাড়াই মৌমিতা বাড়ি ফিরে যান। পরবর্তীতে সোমবার দুপুর থেকে আবারও অনশন শুরু করেন মৌমিতা।
এদিকে মৌমিতার প্রথম অনশনের দিন রাজনৈতিক দলের অনেক নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ তার পাশে ছিলেন। এবারের অনশনে তার পাশে কাউকে তেমন দেখা যাচ্ছে না। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠির স্বার্থ হাসিলের জন্য মৌমিতা অনশন করছেন বলে নানাপ্রশ্ন অনেকের মুখে। শক্ত কোনো প্রমাণপত্র না থাকা এবং মৌমিতার স্বামীর অনুপস্থিতিতে সন্দেহ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, একটি পক্ষ আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেনস্থা করতে মৌমিতা পলিকে অনশনে বসিয়েছেন। বিষয়টি যখন পরিস্কার হয়েছে তখন মৌমিতার কাছে আর কেউ যাচ্ছে না। মৌমিতা অনশন করে আমার যে সম্মানহানি করেছেন তার বিরুদ্ধে আমাকে আইনগত ব্যবস্থার দিকে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।
তবে মৌমিতার দাবি, পৌরসভায় সহকারী কর আদায়কারী পদে চাকরির জন্য মেয়রকে তিনি ১৫ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে কিছু টাকা দিয়েছিলেন মেয়রের স্ত্রীর নামীয় ব্যাংক একাউন্টে। দীর্ঘদিন বিষয়টি অতিবাহিত হলেও চাকরি এবং টাকা ফেরত কোনোটাই তিনি পাচ্ছে না। টাকা আদায়ের জন্য তাই তিনি অনশন করছেন।