গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার জোড়পুকুরিয়া গ্রামের মিন্টু নামের এক ব্যক্তির কাছে পুলিশ পরিচয়ে ২৫ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করা হয়েছে। এর মধ্যস্থতা করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য সাহাবুদ্দিন। প্রতিকার চেয়ে গাংনী থানায় ডায়েরী করার আবেদন করেছেন ভুক্তভোগী। অভিযোগকারী মিন্টু জোড়পুকুরিয়া গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে। তার নামে মাকদের একটি মামলা ছিলো। মাদক ব্যবসার অভিযোগে ইউপি সদস্য সাহাবুদ্দিন এর আগে মিন্টুর কাছ থেকে দুই দফায় ১৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। পুলিশের ভয় দেখিয়ে বারবার টাকা দাবি করা হয় বলে অভিযোগ মিন্টুর। তবে অভিযোগ সত্যি নয় বলে দাবি করেছেন ইউপি সদস্য সাহাবুদ্দিন।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে সাহারবাটি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড সদস্য সাহাবুদ্দিন তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর দিয়ে মিন্টুকে কল দেন। অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির দুটি মোবাইল নম্বর দিয়ে মিন্টুকে কল দিতে বলেন। মিন্টু কল দিলে মোবাইলের ওইপ্রান্তে থাকা ব্যক্তি নিজেকে মামুন দারোগা পরিচয় দেয়। মিন্টুর নামে ওয়ারেন্ট বন্ধ করার জন্য ২৫ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায় মিন্টু। এতে বারবার মিন্টুকে কল দিয়ে রাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন পুলিশের পরিচয় দেয়া ওই ব্যক্তি।
মিন্টুর সাথে ইউপি সদস্যের মোবাইলে কথোপকথনের রেকর্ডে জানা গেছে, সাহাবুদ্দিন মিন্টুকে বলেন, থানা থেকে শাহীন ও মামুনসহ তিনটে দারোগা আমাকে ফোন দিয়ে পাগল করে ফেলেছে। সমস্যার কারণে মিন্টুর ওয়ারেন্ট হয়ে যাবে। অভিযোগের কাগজ ৫ মিনিটের মধ্যে জমা দিলে মিন্টুর খবর হয়ে যাবে। এমন বিষয় বলে মিন্টু কাছে কি সমস্যা আছে তা জানতে চান শাহাবুদ্দিন। গাঁজার মামলা কয়েকদিন আগে শেষ হয়ে গেছে বলে মিন্টু জানায় সাহাবুদ্দিনকে। আবার কেনো ওয়ারেন্ট হবে সে বিষয়ে কোনো কিছু জানেন না উল্লেখ করলে সাহাবুদ্দিন বিষয়টি মিন্টুকে সাথে নিয়ে দারোগার সাথে কথা বলার দায়িত্ব নেন।
এদিকে ইউপি সদস্য সাহাবুদ্দিনের দেয়া মোবাইল নম্বরের ওই ব্যক্তি নিজেকে মেহেরপুর আদালত থেকে মিন্টুর নামে ওয়ারেন্ট হবে এমন ভয় দেখিয়ে ঘুষ দাবি অব্যহত রাখেন। এদিকে ইউপি সদস্যের দাবি, গাংনী থানার তিন দারোগা তাকে স্থির থাকতে দিচ্ছে না। অপরদিকে তারই দেয়া দুটি নম্বর থেকে মেহেরপুর থেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ওয়ারেন্ট ঠেকানোর জন্য ঘুষ দাবি অব্যহত রয়েছে। এ নিয়ে ধু¤্রজালে পড়েন মিন্টু ও তার পরিবার। সঙ্গত কারণেই ইউপি সদস্যের দিকেই সন্দেহ বাড়তে থাকে মিন্টুর।
মিন্টুর সাথে অজ্ঞাত পুলিশ পরিচয় দেয়ার ব্যক্তির মোবাইল কল রেকর্ডে জানা গেছে, ওই ব্যক্তি বলেন, গ্রাম থেকে মিন্টুর নামে হেডকোয়াটার্সে ১৭টি অভিযোগ করা হয়েছে। যা এখন তার হাতে। অভিযোগ কোর্টে দিলেই ওয়ারেন্ট হয়ে যাবে। ওয়ারেন্ট ঠেকাতে খরচ লাগবে। তবে বিভিন্নভাবে সময় নিয়ে মিন্টু টাকা না দিয়ে থানায় অভিযোগ করেন। এরপর থেকেই পুলিশ পরিচয় দেয়া ওই ব্যক্তির দুটি মোবাইল নম্বরই বন্ধ রয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে ইউপি সদস্য সাহাবুদ্দিন নির্দোষ দাবি করে বলেন, আমাকে তিনি মিন্টুর সাথে যোগাযোগ করে দিতে বলেন। টাকার বিষয়টি জানি না। আমাদের কয়েকজন মেম্বারের কাছেও এভাবে টাকা দাবি করা হচ্ছে। আমরা থানায় জিডি করবো।
মিন্টুর লিখিত অভিযোগ তদন্ত করার জন্য একজন অফিসারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুর রহমান।