ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চাষি চায় সুদমুক্ত ঋণ
মুজিবনগর প্রতিনিধি: আম্পান ঝড়ে মেহেরপুরের আম-লিচু বাগানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। লাভের আশায় পড়েছে ছাই। ভেঙে গেছে চাষির স্বপ্ন। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চাষি চায় সুদমুক্ত ঋণসহ সরকারি সহযোগিতা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের হিসেব মতে শতকরা ৫০ ভাগ আম-লিচু ঝরে পড়েছে।
চলতি মরসুমে মেহেরপুর জেলায় ২ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আম ও ৬৫০ হেক্টর জমিতে লিচু আবাদ ছিলো। নানা প্রতিকুলতার পরও গাছে আম-লিচুর উৎপাদন ভালো ছিলো। জেলার আম ও লিচু চাষিরা লাভের আশায় বুক বেঁধেছিলো। কিন্তু সর্বনাশা আম্পান ঝড় গতি পরিবর্তন করে মেহেরপুরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার সময় একটানা ৩ ঘণ্টা তান্ডব চালায়। এতে গাছের শতকরা ৫০ ভাগ আম-লিচু ঝরে পড়ে। বাকি আম-লিচু ফেটে যাওয়ায় গাছ থেকে শুকিয়ে ঝরে যাচ্ছে।
মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের মোল্লাবাড়ির একদাগে ১৫ বিঘা জমির লিচু বাগান। যেখানে ১০৬ টি ফলন্ত লিচু গাছ রয়েছে। গাছে মৌল আসার পরপরই পাশর্^বর্তী ভবানীপুর গ্রামের মৃত নাজিরউদ্দিনের ছেলে মিনারুল ইসলাম (নেঙ্গা) চলতি মরসুমের জন্য ওই বাগান তিন লাখ টাকায় ফলকর হিসেবে কিনে নেয়। বাড়তি ফলনের আশায় তিনি ওই বাগানে আরো এক লাখ টাকা খরচ করেন। তিনি আশায় বুক বেধেছিলেন বাগানের লিচু বিক্রি করে ব্যাপক লাভ করবেন। কিন্তু সর্বনাশা আম্পান ঝড় তার সেই আশা ভেঙে দিয়েছে। মিনারুল ইসলাম (নেঙ্গা) আরো জানান, তিনি মাত্র এক লাখ ২০ হাজার টাকার লিচু বিক্রি করেছেন। ঝড়ে গাছের অনেক ডাল ভেঙে পড়েছে। বর্তমানে গাছে থাকা লিচু রোদে ঝরে পড়ছে। এ মরসুমে তিনি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সরকারি সহযোগিতা ছাড়া ঘুরে দাঁড়ানো তার পক্ষে সম্ভব নয়।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা স্বপন কুমার খাঁ বলেন, সুপার সাইক্লোন আম্পানের আঘাতে আম-লিচু ও কলাসহ প্রায় ২২ কোটি ৩৫ লাখ টাকার ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে চাষিদের ব্যাপক সময় লাগবে। তবে সরকারি সাহায্যের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের তালিকা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এছাড়া কৃষকদের নানা পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।