বখতিয়ার হোসেন বকুল : করোনা ভাইরাস সংক্রমন মোকাবেলায় সরকারি নির্দেশনায় একটানা দীর্ঘ দেড়মাস বন্ধ থাকার পর ঈদকে সামনে রেখে নিয়মনীতি মেনে গতকাল ১০ মে রোববার থেকে সিমিত আকারে দোকানপাট খোলার অনুমতি দেয় সরকার বাহাদুর। দোকানপাট খোলার অনুমতি দেয়ার প্রথম দিনেই বাজিমাত করেছেন এলাকার নারীরা। প্রতিটি বিপনি বিতানের সামনেই নারী কাস্টমারের উপচেপড়া ভীড় লক্ষ করা গেছে। সরকারি নিয়মনীতিকে উপেক্ষা করে কেনাকাটায় ব্যস্ত নারীক্রেতারা। করোনা ভাইরাস সংক্রমন মোকাবেলায় সামজিক দুরত্বের বিষয়টি যেন তারা জানেনই না। মনে হচ্ছে দেশে কোন কিছুই হয়নি, কোন সমস্যাও নেই। গতকাল রোববার দামুড়হুদা বাজার এলাকার ঘুরে এরকম দৃশ্যই চোখে পড়েছে। মালিক সুপার মার্কেটেও একই দৃশ্য। গেটের পাশে সাবান পানি রাখা হলেও অনেকেই তা ব্যবহার করছেন না। সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে ম্যানেজার আশাদুলকে হিমশিম খেতে দেখা গেছে। এ দিকে বিপনি বিতানগুলোতে নারীদের উপচেপড়া ভীড় দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন এলাকার সচেতন মহল। সামাজিক দুরত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করতে মালিক সুপার মার্কেটসহ বাজারের কিছু বিপনি বিতানের সামনে পুলিশি চৌকি বসানোর দাবী জানানো হয়েছে। কেনাকাটা করতে আসা বেশকিছু মহিলা কাস্টমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, করোনার বিষয়ে আমরা সচেতন আছি। পুরুষরা বর্তমানে মাঠের ফসল তোলার কাজে ব্যস্ত। তাদের সময় নেই, তাই আমরা নিজেরাই কেনাকাটা করতে চলে আসলাম। তাছাড়া পুরুষরা জিনিসও চেনেনা, আবার দাম-দরও করতে জানেনা। দোকানদার যা চাই তাই দিয়ে কিনে নিয়ে বাড়ি চলে আসে।
দামুড়হুদা মালিক সুপার মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রশিদ বলেছেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমন ঠেকাতে আমরা তৎপর আছি। আমরা ব্যবসায়ীরা বিষয়টি মনিটরিং করছি। মার্কেটে ঢুকতেই গেটের পাশে সাবান পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিষয়টি ম্যানেজার আশাদুল হক সার্বক্ষনিক দেখভাল করছেন। অধিকাংশ কাস্টমার সাবান পানি দিয়ে হাত ধুলেও কিছু কাস্টমার হাত না ধুয়েই ঢুকে পড়ছে। এ ছাড়া মহিলা কাস্টমাররা বোরকা পরা অবস্থায় কিছুটা সমস্যার কারণে হাত ধুতে অনীহা প্রকাশ করতে দেখা গেছে। বেচাবিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি বেচাবিক্রি খুবই ভাল। একটানা দেড়মাস বন্ধের পর প্রথম দিনেই সমস্ত দোকানেই বেচাকেনা ভাল হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। আমরা ভেবেছিলাম এবার করোনার কারণে হয়তো বেচাকেনা জমবে না। কিন্ত চিত্র সম্পূর্ণ তার উল্টো। মার্কেটে যে সমস্ত পোষাক বিক্রি করা হচ্ছে তা নতুনভাবে নিয়ে আসা না আগের ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, করোনার কারণে ব্যবসায়ীরা ঢাকায় যেতে পারেনি। কিছু কিছু মাল অনলাইনে অর্ডার দেয়া হয়। আবার কিছু পোষাক মোবাইলে ছবি তুলে স্যাম্পল দেখিয়েই কিছু পোষাক কেনা হয়েছে। তবে পুরাতন পোষাকই বেশী।
দামুড়হুদা বাজারের গার্মেন্টস ব্যবসায়ী খান গার্মেন্টেসের স্বত্তাধিকারী জহির উদ্দীনের কাছে বেচাকেনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আলহামদু লিল্লাহ। বেচাবিক্রি খুবই ভাল। এটা একটানা দেড়মাস বন্ধের প্রভাব বলে মনে করেন তিনি। করোনার কারণে নতুনভাবে আনা পোষাকের দাম বৃদ্ধি হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মোকামে দাম বাড়েনি। আগে যা ছিলো তাই আছে। তবে গাড়ী ভাড়ার কারণে সামান্য কিছু দাম বেড়েছে। কোন ধরণের পোষাক বেশী বিক্রি হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব ধরণের পোষাকই বিক্রি হচ্ছে। তবে গজের সিট এবং বাচ্চাদের পোষাক তুলনামূলক একটু বেশী বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ