দামুড়হুদা অফিস: দামুড়হুদার মোক্তারপুর গ্রামে ত্রাণের চাল বিতরণের সময় দিনমজুর শরিফুল ইসলাম ওরফে কালুকে মারপিট করার অভিযোগ উঠেছে ইউপি সদস্য আশাদুল হকের বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার দুপুর ১টার দিকে মোক্তারপুর মোল্লাবাজারের আলামিনের চায়ের দোকানে এ ঘটনা ঘটে। দামুড়হুদা সদর ইউপি সদস্যর হাতে মারপিটে জখম শরিফুল ইসলাম মোক্তারপুর গ্রামের মোল্লাবাজার পাড়ার মুনছুর আলির ছেলে।
স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাধ্যমে একাধিকবার মেম্বার আশাদুল হক চাল দেবে বলে শরিফুল ইসলাম কালুর আইডি কার্ড নেই। কিন্তু গ্রামে কয়েক দফা চাল বিতরণ হলেও তাকে একবারও চাল দেয়নি। গতকাল শনিবার দুপুরে ত্রাণের চাল বিতরণ করা হচ্ছিলো মোক্তারপুর মোল্লাবাজারে। কালু সেখানে গিয়ে মেম্বারকে বলে আমাকে চাল দেন। তখন মেম্বার আশাদুল হক বলে তোমাকে আজ চাল দেয়া হবে না লিস্টে তোমার নাম নেই তুমি এখান থেকে যাও। কালু পেটের ক্ষুধা সইতে না পেরে জোর করে মাটিতে থাকা একটি চালের প্যাকেট নিতে গেলে মেম্বার তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে চড় থাপ্পড়সহ মারপিট করে। এর কিছুক্ষণ পর দামুড়হুদা মডেল থানার একদল পুলিশ আসে। সমস্ত ঘটনা জানার পর কালুকে থানার ওসির সাথে দেখা করতে বলে। তিনি বিকেলে থানায় গিয়ে ওসির সাথে দেখা করে সবকিছু খুলে বলেন। তখন তিনি তাকে কিছু খাদ্য চাল ও আলু দেন।
দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের মোক্তারপুর ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান টোকন বলেন, আমি নিজেও আশাদুল মেম্বারের কাছে শরিফুল ইসলাম কালুর আইডি কার্ড তিনবার দিয়েছি। মেম্বার বেঁচে বেঁচে জামাত ও বিএনপির লোকদেরকে ত্রাণ দিচ্ছে। যাতে ভবিষ্যতে তার নির্বাচন করতে সুবিধা হয়।
দামুড়হুদা সদর ইউপি সদস্য আশাদুল হক বলেন, শনিবার দুপুরে লিস্ট করা ত্রাণের চাল বিতরণ করছিলাম। এমন সময় জোর করে কালু ত্রাণের চাল ছিনতায় করে নিচ্ছিলো। সে আমার কাছে কোনো আইডি কাড দেইনি। সে একদিন না একদিন চাল পাবে। পর্যায়ক্রমে সকলকে চাল দেয়া হবে। আমি বেঁচে বেঁচে কোনো জামায়াত বিএনপির লোককে চাল দিচ্ছি না যারা পাওয়ার অধিকার রাখে তাদেরকেই দেয়া হচ্ছে। তবে কালুকে মারপিটের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমি বিরোধী দল করি তাই আমাকে হয়রানি করার লক্ষ্যে একটি মহল চক্রান্ত করছে।
দামুড়হুদা সদর ইউপি চেয়ারম্যান শরিফুল আলম মিল্টন বলেন, বিষয়টা আমি জানি তবে মেম্বার কাউকে মারপিট করেনি বা কেউ মেম্বারের কাছে মার খেয়েছে বলে অভিযোগও করেনি। একজন জোর করে চাল ছিনিয়ে নিচ্ছিলো বলে জানতে পেরেছি।
দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল খালেক বলেন, মোক্তারপুর গ্রামে ত্রাণের চাল বিতরণ করা হচ্ছিলো এমন সময় শরিফুল ইসলাম কালু নামে একজন দিনমজুর জোর করে চাল নিতে গেলে মেম্বার তাকে চড় মারে বলে জানতে পারি। ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্স পাঠিয়ে দিনমজুরকে থানায় আসতে বলা হয়। বিকেল ৪টার দিকে দিনমজুর শরিফুল ইসলাম কালু থানায় এলে আমি তার মুখ থেকে সব শুনি। পরে জেলা পুলিশের খাদ্য সহায়তা তুলে দিই তার হাতে।
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ