করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতার মধ্যে  মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে চুয়াডাঙ্গা পৌরবাসী

 

স্টাফ রিপোর্টার:  করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতার মধ্যে মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে চুয়াডাঙ্গা পৌরবাসী। দিনকে দিন বাড়ছে মশার উৎপাত। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে এর ব্যাপকতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখনই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া গেলে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত নানান রোগে আক্রান্ত হতে পারে পৌরবাসী। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে করোনা ও মশা প্রতিরোধে তারা কাজ শুরু করেছেন। তবে এলাকাবাসী বলছে, পৌরকর্তৃপক্ষ মশা নিধনে কোন কাজই হাতে নেয়নি। কথার মধ্যে তাদের কাজ সীমাবদ্ধ রেখেছে। যেখানে ড্রেন পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও মশা নিধনে বছরে প্রায় কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে।

দেশের যে কয়টি পৌরসভা রয়েছে তার মধ্যে আয়তনের দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা। ৩৭ দশমিক ৩৯ বর্গকিলোমিটারের আয়তনের এই পৌরসভাটি ১৯৯৫ সালের ১৯ জানুয়ারী ১ম শ্রেনীতে উত্তীর্ণ হয়। পৌরসভায় রয়েছে  মোট জনসংখ্যা ১ লাখ ৭৪ হাজার ২৫০জন। শীত শেষে গরমের আগমনের সাথে সাথে পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডে মশার উপদ্রব ব্যাপকহারে বেড়ে গেছে। বিকাল হতে এর ভয়বহতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় বেশিরভাগ নারী-পুরুষ হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছে। কিন্তু মশার অত্যাচারে ঘরে বসবাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে দাড়িয়েছে। না পারছে ঘরে থাকতে না পারছে বাইরে বের হতে। উভয় সংকটে পড়েছে পৌরবাসী। এরপরে শিক্ষার্থীরা পড়েছে আরো বেকায়দায়। তারা পড়ার টেবিলে বসতে পারছে না। মশা মারার স্প্রে ও কয়েল ব্যবহার করে কাজ হচ্ছেনা। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারনে অনেকে কয়েল বা স্প্রে ব্যবহার করতে ভয় পাচ্ছেন। পৌরসভার বেশিরভাগ নাগরিকের অভিযোগ প্রধান সড়কে ময়লা আবর্জনা ও ড্রেন  কিছুটা  পরিস্কার করা হলেও পাড়া মহল্লায় পরিচ্ছন্ন কর্মিদের দেখা মেলা ভার। মাসের পর মাস ময়লা আবর্জনা ও ড্রেন পরিস্কার না করায় মশার ব্যাপকতা বেড়েছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার একজন কর্মকর্তা বলেন, শহরে ড্রেন পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও মশা নিধনের জন্য বছরে প্রায় ১ কোটি টাকার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। একাধিক নাগরিক বলেন, বড় অংকের বরাদ্দ থাকলেও মশা মারতে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়নি পৌরকর্তৃপক্ষ।  পাড়া মহল্লা ও ঘিজিœ এলাকায় মশার উৎপাত বেশি। এসবস্থানে  ড্রেনে ও রাস্তার পাশে দিনের দিনের পর দিন ময়লা জমে থাকে। সেই কারনে এখানে মশার বংশ বিস্তার করছে। এছাড়া পৌরকর্তৃপক্ষ  মাঝে মাঝে ফেসবুকে প্রচারের জন্য  লোক দেখানো ঔষধ ছিটানো হয় তা যতসামান্য। প্রকৃতপক্ষে মশা নিধন করতে হলে প্রতিটি মহল্লায় দুই একদিন পর পর স্প্রে করতে হবে। শহরের বাগানপাড়া, মসজিদপাড়া, আরামপাড়া, ঝিনাইদহ বাসষ্ট্যান্ডপাড়া, সাতগাড়ী, ফার্মপাড়া, নুররগর, হকপাড়া, বুজরুকগড়গড়ি,  শান্তিপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা দেখে গেছে বিকাল থেকেই শুরু হয় মশার আক্রমন। চলে গভীর রাত পর্যন্ত। অনেকে মশার হাত থেকে বাচতে কয়েল ও স্প্রে ব্যবহার করেও কোন ফল পাচ্ছেন না। ইম্প্যক্ট হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ডা. শফিউল কবির জিপু বলেন, বর্তমানে পৃথিবীতে করোনা ভাইরাসের  ভয়াবহতা বিরাজ করছে। এর মধ্যে শুরু হয়ে গেছে মশার উপদ্রব। এখনই শহরকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা না গেলে ডেঙ্গুসহ নানা মশা বাহিত রোগে আক্রান্ত হতে পারে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন। চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপু বলেন, আমাদের পূর্বের একটি অভিঙ্গতা রয়েছে। গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে অনেকে মারা গিয়েছিল। যাতে করে এ বছর ডেঙ্গুর ব্যাপকতা লাভ করতে না পারে সেইজন্য আমরা এবার প্রথম থেকেই মশা নিধনে  পাড়া মহল্লায় বিষ দেয়া শুরু করেছি। করোনা ও ডেঙ্গু নিয়ে আমরা আরো ততপর। পৌর কর্তৃপক্ষ সত্যিকার অর্থে মশা নিধনে কার্যকর পদক্ষেপ নিবে এমনটাই আশা করছেন সচেতন মহল।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More