স্টাফ রিপোর্টার: করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গত ২৩ মার্চ থেকে সারাদেশের স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। কবে আবার স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীরা ফিরবে এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। লকডাউনের কারণে নির্দিষ্ট শিক্ষকের কাছেও প্রাইভেট পড়তে যাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। ফলে অধিকাংশ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছে তাদের পড়াশোনা নিয়ে। লকডাউনে যখন শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার এমন নাজুক অবস্থা; ঠিক তখনি চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক মাহমুদুল হাসান সুমনের মাথায় আসে ভিন্ন এক ভাবনা। আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তিনি ফেসবুক লাইভে এসে শিক্ষার্থীদের অনলাইনে নিয়মিত পাঠদান শুরু করেন।
প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ফেসবুক লাইভে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিচ্ছেন তিনি। পরে ফেসবুক লাইভে শিক্ষার্থীদের কমেন্টের প্রশ্নের আলোকে আবার ১ ঘণ্টা প্রশ্ন-উত্তর লেকচার দিচ্ছেন। প্রতিদিন ফেসবুকের এই পাঠদানে শত শত শিক্ষার্থী যুক্ত হচ্ছে। এতে করে শুধু চুয়াডাঙ্গা নয় বাইরের জেলার শিক্ষার্থীরাও অনলাইন ক্লাসে উপকৃত হচ্ছে। মুহূর্তে ফেসবুকের লাইভ পাঠদান শেয়ার করছে শিক্ষার্থীরা তাদের বিভিন্ন গ্রæপে। চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী অর্ণব জানান, করোনাভাইরাসে কলেজ যখন বন্ধ তখন স্যারের আন্তরিকতায় আমরা অনলাইনে ক্লাস করতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি। অনলাইনে ক্লাস করার পরে আমাদের কাছে মনেই হচ্ছে না আমরা একে অপরের থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছি।
চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের আরেক শিক্ষার্থী প্রেয়শী জানায়, প্রতিদিন স্যার লাইভে আসার সাথে সাথে আমরা শিক্ষার্থীরা স্যারের লাইভে সংযুক্ত হই। স্যার এমনভাবে আমাদের অনলাইন ক্লাসে পাঠ নেন আমাদের মনেই হয় না আমারা ক্লাসের বাইরে আছি।
অভিভাবকরা বলছে, লকডাউনের পর সন্তানের ভবিষ্যত নিয়েও চিন্তিত ছিলেন তারা। বাড়িতে বসে অলস সময় কাটাতো শিক্ষার্থীরা। ইন্টারনেটে গেমস খেলায় ব্যস্ত থাকতো ছেলে-মেয়েরা। এমন সময় প্রভাষক মাহমুদুল হাসান সুমনের অনলাইন ক্লাস কার্যক্রমে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। শিক্ষার্থীরাও পড়াশোনায় মনোযোগী হচ্ছে।
প্রভাষক মাহমুদুল হাসান সুমন জানান, ভাইরাসের প্রকোপে দেশের সরকারি-বেসরকারি কলেজ বন্ধ ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা অসুবিধায় পড়ে। বন্ধের সময়টা শিক্ষার্থীরা এদিক-ওদিক ঘুরে সময় কাটাবে। তারা বই পড়ায় মনোযোগী হবে না এটাই স্বাভাবিক। এসব কথা মাথায় রেখেই অনলাইনে ফেসবুক লাইভে শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ক্লাস নেয়ার চিন্তা মাথায় আসে। অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীরা বাড়িতে বসে কিছুটা উপকৃত হলেই এ প্রচষ্টা সফল হবে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ